যুদ্ধ শেষ করতে ইউক্রেনকে যেসব শর্ত দিলেন পুতিন

পশ্চিমা বিশ্ব যখন ইউক্রেনে রুশ হামলা বন্ধের দাবি জানাচ্ছে, তখন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন পাল্টা কয়েকটি শর্ত দিয়ে বলেছেন, এগুলো কার্যকর হলে সঙ্গে সঙ্গেই যুদ্ধবিরতি শুরু হয়ে যাবে। তবে এমন শর্তের কারণে ইউক্রেনের পক্ষ থেকে পুতিনকে হিটলার বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। খবর বিবিসি, রয়টার্স ও এনডিটিভি।

ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধ বন্ধে কয়েকটি শর্ত দিয়েছেন পুতিন

শুক্রবার (১৩ জুন) রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে রাষ্ট্রদূতদের সামনে পুতিন তার শর্তের বিষয়টি প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, যুদ্ধ বন্ধ করতে তিনটি শর্ত পালন করতে হবে। এগুলো হচ্ছে, ইউক্রেনের যে চার প্রদেশ রাশিয়া নিজের সীমানাভুক্ত করেছে, সেই প্রদেশগুলো পুরোপুরিভাবে রাশিয়ার হাতে ছেড়ে দিতে হবে। নিজেদের সেনাদের আরও ভেতরে সরিয়ে নিতে হবে এবং কিয়েভকে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোতে যুক্ত হওয়ার আকাঙ্ক্ষা ত্যাগ করতে হবে।

পুতিনের দাবির ব্যাখ্যায় জানা গেছে, গণভোটের মাধ্যমে দখলে নেওয়া ইউক্রেনের দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, খেরসন ও জাপোরিঝঝিয়া থেকে কিয়েভকে নিয়ন্ত্রণাধিকার ছাড়তে হবে এবং আন্তর্জাতিক চুক্তি অনুযায়ী এগুলোকে রাশিয়ার অঞ্চল ঘোষণা করতে হবে। এর পাশাপাশি কিয়েভ এসব এলাকা থেকে সেনা সরিয়ে নেওয়া এবং ন্যাটোতে যুক্ত হওয়ার পরিকল্পনা থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিলে রাশিয়া যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিয়ে আলোচনা শুরু করবে। তবে যুদ্ধবিরতির শর্ত হিসেবে পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার বিরুদ্ধে যেসব নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সেগুলো তুলে নিতে হবে বলেও রাশিয়ার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

পশ্চিমাদের নেতৃত্বে ইউক্রেনের শান্তি প্রচেষ্টা নিয়ে সুইজারল্যান্ডে আয়োজিত শান্তি সম্মেলনে ডাক না পাওয়া পুতিন শুক্রবার আঞ্চলিক শান্তি প্রতিষ্ঠার এমনই ফর্মুলা প্রকাশ করেন। তার এইসব শর্তের ব্যাপারে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন বলেন, ইউক্রেনের ব্যাপারে কোনো দাবি জানানোর মতো বা চলমান যুদ্ধ আজই শেষ করে দেওয়ার মতো কোনো অবস্থাতেই নেই পুতিন।

অন্যদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, হিটলারও একই কাজ করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, আমাকে চেকোস্লোভাকিয়ার একটি অংশ দিয়ে দিন, তাহলে ঝামেলা এখানেই শেষ হয়ে যাবে। এখন পুতিনও একই ধরনের কথা বলছেন। কিন্তু তার এ প্রস্তাব মোটেই বিশ্বাস করার মতো নয়। কারণ, তার শর্ত এসব মেনে নিয়ে যুদ্ধবিরতিতে গেলেও তিনি হামলা বন্ধ করবেন না।