যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে আসছে নতুন মার্কিন অস্ত্র

চলমান রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন কিয়েভে একটি অতিরিক্ত প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা মোতায়েনের অনুমোদন দিয়েছেন। যুদ্ধের প্রস্তুতিকে বিপন্ন না করে ইউক্রেনের চাহিদার ভারসাম্য বজায় রাখার বিষয়ে উচ্চ-পর্যায়ের বৈঠক ও অভ্যন্তরীণ বিতর্কের পর গত সপ্তাহে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে মঙ্গলবার (১১ জুন) প্রকাশিত খবরে বলা হয়, নতুন অনুমোদিত প্যাট্রিয়ট সিস্টেমটি আসবে পোল্যান্ড থেকে। এটি সেখানে অবস্থানরত মার্কিন সেনাদের সুরক্ষায় ব্যবহৃত হতো। এখন সেটিতে প্রয়োজনীয় রক্ষণাবেক্ষণ চলছে। অচিরেই সেটি ইউক্রেনে কার্যকরী অবস্থায় দেখা যাবে।

উন্নত রাডার ও মোবাইল লঞ্চারের জন্য প্যাট্রিয়ট সিস্টেম সবচেয়ে কার্যকর বিমান প্রতিরক্ষা অস্ত্র হিসেবে পরিচিত। তবে ব্যয়বহুল এ অস্ত্রটি এতটা সহজলভ্য নয়। পেন্টাগন তার কাছে থাকা প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র সিস্টেমের সঠিক সংখ্যা সম্পর্কে কোনো তথ্য দেয় না। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সিনিয়র সামরিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বর্তমান বিশ্বে কেবল ১৪টি এ ধরনের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মোতায়েন করা রয়েছে।

ইতিমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও তার কিছু মিত্র দেশ ইউক্রেনে এই বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পাঠিয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র তার ইউরোপীয় মিত্রদের আরও বেশি করে এ অস্ত্র ইউক্রেনে পাঠানোর জন্য জোর দিচ্ছে। জানা গেছে, জার্মানি ও নেদারল্যান্ডস এরই মধ্যে ইউক্রেনে এ সিস্টেম মোতায়েন করেছে।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি অনেক আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্রকে এই প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র দিতে আহ্বান জানিয়ে আসছিলেন। গত মাসে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা রাশিয়ার সাম্প্রতিক জোরালো হামলা থেকে খারকিভ ও ওডেসার মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোকে রক্ষা করতে এই অস্ত্র দিতে মিত্রদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন।

তিনি বলেছিলেন, সাম্প্রতিক রুশ হামলাগুলোতে ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে পুরো দেশ ব্ল্যাকআউটের শিকার হয়েছে। এ পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি থেকে রক্ষা পেতে দ্রুত প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র দরকার।

কুলেবার এ আহ্বানের পরিপ্রেক্ষিতে গত সপ্তাহে ন্যাটোর সামরিক কমিটির চেয়ারম্যান অ্যাডমিরাল রব বাউয়ারও ইউক্রেনকে সহায়তা করতে সদস্য দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান।

উল্লেখ্য, প্যাট্রিয়ট সিস্টেম হল ইউক্রেনকে যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহ করা অস্ত্রের মধ্যে সবচেয়ে ব্যয়বহুল। এর প্রতিটির দাম প্রায় ১১০ কোটি ডলার। রাশিয়া অবশ্য দাবি করছে, এসব অস্ত্রে তাদের অগ্রযাত্রা বিঘ্নিত হবে না। এরই মধ্যে তারা এমন কয়েকটি অস্ত্র ধ্বংস করেছে বলেও দাবি করেছে।