আশা জাগিয়ে হার বাংলাদেশের

নিউইয়র্কে আশা জাগিয়ে হেরেছে বাংলাদেশ। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে তাদের হার চার রানে। শেষ ওভারে ১১ রান দরকার ছিল। সেটা তুলতে পারেনি টাইগাররা। ডালাসে শ্রীলংকার বিপক্ষে দুই উইকেটে জয় দিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল তারা। এবার দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে হেরে গেলেও সুপার এইটের আশা রয়েছে। গ্রুপ পর্বে আরও দুটি ম্যাচ রয়েছে নাজমুল হোসেন শান্তদের।

তাওহীদ হৃদয় ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ জয়ের আশা জাগিয়েছিলেন। ছবি: বিসিবি

শেষ ওভারে ক্রিজে ছিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও জাকের আলী অনিক। তবে তারা ব্যর্থ হয়েছেন। প্রথমেই ওয়াইড পায় বাংলাদেশ। তখন ৬ বলে ১০ রান দরকার। রিয়াদ একটি রান নেন। এরপর জাকের দুটি রান নিলেন। সব ঠিকই চলছিল। দক্ষিণ আফ্রিকার বাঁ-হাতি স্পিনার কেশব মহারাজ মাথা ঠান্ডা রেখেছেন। তৃতীয় বলে তার বল তুলে মারতে গিয়ে আউট হন জাকের। রিশাদ স্ট্রাইকে আসেন। পায়ে লেগে বাই পান। ২ বলে তখন দরকার ৭ রান। রিয়াদ পঞ্চম বলটি তুলে মেরেছিলেন। কিন্তু মার্করাম বাজপাখির মতো লাফিয়ে ক্যাচ নেন। শেষ বলে দরকার ছিল ছয় রান। তাসকিন আহমেদ স্ট্রাইকে ছিলেন। এক রান নিতে পারেন তিনি। ছক্কা মারার চেষ্টা করে পারলেন না।

এ ম্যাচের আম্পায়ারিং নিয়ে কথা উঠবে। তখন ১৬.২ ওভার। রিয়াদের পায়ে লেগে বল চলে গেল বাউন্ডারিতে। আবেদনের জন্য আউট দেন আম্পায়ার। পরে রিভিউয়ে সিদ্ধান্ত পাল্টে গেলেও চার রান বাই পাওয়া হয়নি। বাংলাদেশ অবশেষে সেই চার রানেই হেরেছে।

১১৪ রান এই মাঠের জন্য পাহাড়। সেটা আগের দিন টের পেয়েছে পাকিস্তান। ১২০ রানই করতে পারেনি পাকিস্তান। তারা ভারতের কাছে ছয় রানে হেরেছে। বাংলাদেশ সব জেনেই এসেছে। বোলাররা তাদের কাজ করে দিয়েছিল। ব্যাটাররা চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। তানজিদ হাসান তামিম (৯) দুটি দৃষ্টিনন্দন চার মেরে আউট হন। লিটন দাস ১৩ বলে নয় করেছেন। সাকিব আল হাসান আবারও ব্যর্থ। এবার চার বলে করেছেন তিন রান। শান্ত ২৩ বলে ১৪ রানে যখন সাজঘরের পথে তখন দলীয় স্কোরবোর্ডের পরিস্থিতি এমন - ৫০/৪!

তাওহিদ হৃদয় ও মাহমুদউল্লাহ খেলা ধরার চেষ্টা করেন। পঞ্চম উইকেটে ৪৪ রানের জুটি ছিল। বাংলাদেশ জয়ের সুবাতাস পেয়েছে। হৃদয় (৩৭) কাগিসো রাবাদার বলে লেগ বিফোর দ্য উইকেট হন। জাকের আলী অনিক ক্রিজে আসেন। তিনি ইনিংসের শেষ ওভারে আউট হন (৮)। রিয়াদও আশা জাগিয়ে আউট হন (২০)। জয়ের অনেক কাছে গিয়ে হেরেছে টাইগাররা।

আঙুলে সেলাই থাকার পরেও বাংলাদেশ দলের সঙ্গে অনুশীলন করেন বাঁ-হাতি পেসার শরিফুল ইসলাম। গুঞ্জন ছিল ঝুঁকি নিয়ে তাকে নামিয়ে দেবেন প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। অবশ্য সেটা হয়নি। শরিফুল শ্রীলংকা ও দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যাচ খেলতে পারলেন না। শরিফুল শ্রীলংকার সঙ্গে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার সময় আঙুলে চোট পান।

বাংলাদেশ দলে পরিবর্তন ছিল। সৌম্য সরকারের বদলে জাকের আলী অনিককে নেওয়া হয়। নিউইয়র্কে নাসাউ কাউন্টি ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিং নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। বাংলাদেশ স্বপ্নের মতো শুরু পায়। স্বপ্নের নায়ক ছিলেন ডানহাতি পেসার তানজিম হাসান সাকিব। রেজা হেনড্রিকস (০) ও কুইন্টন ডি কককে (১৮) সাজঘরে ফেরত পাঠান তিনি। দলের রান তখন ১৯। এইডেন মার্করামকে (৪) বোল্ড করেন তাসকিন আহমেদ। ট্রিসস্ট্যান স্টাবস সাকিবের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন। ২৩ রানে চার উইকেট হারায় প্রোটিয়ারা।

এসময় ইনিংস মেরামতের কাজ শুরু করেন হেনরিখ ক্লাসেন ও ডেভিড মিলার। পঞ্চম উইকেটে তাদের জুটি ৭৯ বলে ৭৯ রান তুলে। ক্লাসেন ৪৬ ও মিলারের স্কোর ২৯। মিলারের ক্যাচ অবশ্য ফেলেছেন উইকেটরক্ষক লিটন দাস। কঠিন ছিল অবশ্য ক্যাচটি। পেসার সাকিব ৪ ওভারে ১৮ রান দিয়ে তিন উইকেট নেন। ১৯ রানে দুই উইকেট তাসকিনের।

বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পরের দুটি ম্যাচ খেলবে ক্যারিবিয়ানে নেদারল্যান্ডস ও নেপালের সঙ্গে। ১৩ জুন নেদারল্যান্ডসের ম্যাচটি রয়েছে সেন্ট ভিনসেন্টে। ১৭ জুন এই মাঠেই প্রতিপক্ষ নেপাল।