বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা: প্রতিদিন স্বাস্থ্যঝুঁকির মুখে ১৬ লাখ মানুষ

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও) জানিয়েছে, অনিরাপদ খাবার খেয়ে প্রতিদিন আনুমানিক ১৬ লাখ মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ছে। খাদ্যজনিত রোগে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যাও দিন দিন উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। শুক্রবার (৭ জুন) জেনেভায় জাতিসংঘের এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পুষ্টি ও খাদ্য নিরাপত্তার প্রধান ফ্রান্সেস্কো ব্রাঙ্ক। খবর আনাদোলু।

নিরাপদ খাদ্যের অভাব বিশ্বজুড়ে

তিনি বলেন, অনেকে এখন পর্যন্ত খাদ্য নিরাপত্তার ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন নয়। ফলে বিশ্বে অনিরাপদ খাদ্য গ্রহণ আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। এটি এ হারে বাড়তে থাকলে স্বাস্থ্যঝুঁকি জরুরি পর্যায়ে পৌঁছে যেতে পারে। এখনই সতর্ক না হলে যে কোনো মুহূর্তে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ও সৃষ্টি হতে পারে সতর্ক করেন ফ্রান্সেস্কো ব্রাঙ্ক।

ডাব্লিউএইচওর এই কর্মকর্তা বলেন, বিশ্বে ৫ বছরের কম বয়সী শিশুর সংখ্যা ৪০ শতাংশের বেশি। অনিরাপদ খাদ্যের কারণে রোগাক্রান্ত শিশুর সংখ্যাও উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা সীমানা চেনে না উল্লেখ করে তিনি এ বিষয়টিকে বিশ্বজুড়ে স্বাস্থ্য বিপর্যয়ের কারণ হতে পারে বলেও মন্তব্য করেন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

এ কারণে দেশগুলোর সরকারকে স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য তাদের জাতীয় কর্মপরিকল্পনাগুলোতে খাদ্য সুরক্ষার স্পষ্ট এবং ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়গুলো আপডেট করার আহ্বান জানান ফ্রান্সেস্কো ব্রাঙ্ক। একইসঙ্গে প্রাণী, পরিবেশ ও মানব স্বাস্থ্যের জন্য সমন্বিত নজরদারি ব্যবস্থার দিকে এগিয়ে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্যও তিনি অনুরোধ করেন।

উল্লেখ্য, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) নিরাপদ খাদ্যকে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের ক্ষেত্রে মৌলিক বিষয় হিসেবে নির্ধারণ করেছে। সেক্ষেত্রে অনিরাপদ খাদ্য গ্রহণে সৃষ্ট ঝুঁকি মোকালায় সাধারণ মানুষকে নিরাপদ খাদ্য গ্রহণে উৎসাহিত করতে সব দেশের সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ।

এফএও কর্মকর্তা মার্কাস লিপ বলেছেন, নিরাপদ খাদ্য হলো আরও ভাল উৎপাদন, পুষ্টি, পরিবেশ এবং জীবনকে সক্ষম করার জন্য এফএও’র কৌশলগত পরিকল্পনা পূরণের অন্যতম পূর্বশর্ত। এ লক্ষ্যমাত্রা পূরণে সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানদের নিরাপদ খাদ্য কর্মসূচি শতভাগ বাস্তবায়নে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, একটি নিরাপদ ও টেকসই কৃষি খাদ্য ব্যবস্থায় উৎপাদিত খাদ্য একটি স্বাস্থ্যকর জীবনে অবদান রাখে, উৎপাদনশীলতার স্থায়িত্ব উন্নত করে, যা অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও দারিদ্র্য বিমোচনকে পরিচালিত করে। আর পুরো বিষয়টি জনস্বাস্থ্যকে রক্ষা করবে এবং শিশুমৃত্যুর হার কমিয়ে দেবে।