মেসি: সেরা খেলে সিটি, জিতে মাদ্রিদ

লিওনেল মেসি তার প্রাক্তন কোচ পেপ গার্দিওলার অধীনে ম্যানচেস্টার সিটিকে বিশ্বের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ফুটবল দল হিসেবে অভিহিত করেছেন। তবে স্বীকার করেছেন যে, ফলাফলের দিক থেকে রিয়াল মাদ্রিদই সেরা। যদিও লিওনেল মেসি যতদিন বার্সেলোনায় ছিলেন রিয়ালের ঘরে সাফল্য খুব কমই এসেছে। মেসি স্পেন ছেড়ে যাওয়ার পরবর্তী সময়ে বেশ আধিপত্য বিস্তার করে খেলে যাচ্ছে লস ব্লাঙ্কসরা।

লিওনেল মেসি

গার্দিওলা গত বছর সিটিকে প্রিমিয়ার লিগ, চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ও এফএ কাপ জয়ের ঐতিহাসিক ট্রেবল এনে দেন। চলতি মৌসুমেও তিনি সিটিকে টানা চতুর্থ প্রিমিয়ার লিগ শিরোপা জিতিয়েছেন। তবে গত ১ জুন চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদের কাছে হেরে সিটির স্বপ্নভঙ্গ হয়। রিয়াল পরে ১৫তম শিরোপা জয় করে।

সেরা দল কাকে মনে করেন - এমন প্রশ্নে ইনফোবায়েকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে মেসি বলেন, ‘ফলাফলের দিক থেকে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন রিয়াল মাদ্রিদই সেরা।’

‘কিন্তু খেলার দিক থেকে আমার কাছে গার্দিওলার সিটি পছন্দ। যে দলেই গার্দিওলা থাকেন, সে দলই বিশেষ হয়ে ওঠে। তার অনুশীলন পদ্ধতি, কাজের ধরন, খেলোয়াড়দের খেলার ধরন সবই ব্যতিক্রম।’

‘খেলার মানের দিক থেকে আমার কাছে সিটিই সেরা, আর ফলাফলের দিক থেকে রিয়াল মাদ্রিদ।’

গার্দিওলার অধীনে বার্সেলোনায় ১৪টি শিরোপা জিতেছেন মেসি, যার মধ্যে তিনটি লা লিগা শিরোপা, দুটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ও দুটি ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ শিরোপা।

কোপা আমেরিকা নিয়ে মেসির আশা

বর্তমানে মেসি আর্জেন্টিনার জাতীয় দলের সঙ্গে মিয়ামিতে অনুশীলন করছেন। আগামী ২০ জুন থেকে ১৪ জুলাই পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত কোপা আমেরিকায় আলবিসেলেস্তেদের নেতৃত্ব দেবেন তিনি। ২০২২ বিশ্বকাপজয়ী আর্জেন্টিনা বর্তমান কোপা আমেরিকার চ্যাম্পিয়ন।

মেসি বলেন, ‘আমার মনে হয় আর্জেন্টিনা সবসময়ই ফেভারিট। বিশ্বকাপ, কোপা আমেরিকা বা অন্য যেকোনো টুর্নামেন্ট শুরু হলে আর্জেন্টিনা বা ব্রাজিল দুই দলই ফেভারিট হয়, বিশেষ করে এবারের কোপা আমেরিকায়। কিন্তু বর্তমানে দক্ষিণ আমেরিকার সব দলই খুব শক্তিশালী। উরুগুয়ে, কলম্বিয়া ও ইকুয়েডর খুবই ভালো দল। সব ম্যাচ খেলা কঠিন হবে, তবে আমার মনে হয় এটি একটি খুবই প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ কোপা আমেরিকা হবে।’

৩৬ বছর বয়সী মেসি স্বীকার করেন, বিশ্বকাপ জেতা তার জীবনে একটা পরিতৃপ্তির অনুভূতি এনে দিয়েছে, তবে তার জীবন স্বাভাবিকভাবেই এগিয়ে চলছে।

তিনি বলেন, ‘স্পষ্টতই সবকিছু জেতা এবং জাতীয় পর্যায়ে সবকিছু অর্জন করার পর এটা একটা ভিন্ন অভিজ্ঞতা, অন্যরকম শান্তি আছে। বিশ্বকাপ জেতাটা আমার কাছে অনুভূত হয়েছে পরিতৃপ্তি পাওয়ার মতো। আমি সবকিছু অর্জন করেছি, আমার লক্ষ্য ও স্বপ্নগুলো পূরণ করতে পেরেছি।

‘মনে হচ্ছে সবকিছু বদলে গেছে, আবার কিছুই বদলায়নি। হ্যাঁ, আমরা আমাদের লক্ষ্য অর্জন করেছি, স্পষ্টতই এটাই ছিল সবচেয়ে বেশি চাওয়া, আমি, আমার পরিবার এবং সবার।’

‘কিন্তু তারপরও জীবন চলতে থাকে। আমাকে প্যারিস সেন্ট জার্মেইঁতে (পিএসজি) থাকতে হয়েছে, (এরপর) এখানে (মিয়ামিতে) থাকতে হয়েছে এবং জিনিসগুলো অর্জন করার চেষ্টা, জেতার চেষ্টা চালিয়ে যেতে হয়েছে।’

‘এখন আমাদের জাতীয় দলের সঙ্গে আরেকটি চ্যালেঞ্জ আছে, কোপা আমেরিকা জেতার চেষ্টা।’

কখন অবসরে যাবেন?

২০২৫ সালের ডিসেম্বরে ইন্টার মিয়ামির সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে মেসির। তিনি জাতীয় দল থেকে কখন অবসর নেবেন, সে সম্পর্কে কোনো ইঙ্গিত দেননি।

আর্জেন্টাইনারা আশাবাদী যে, ২০২৬ সালের বিশ্বকাপে মেসিকে খেলতে দেখা যাবে, যেটি অনুষ্ঠিত হবে যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো ও কানাডায়।

‘এটা নির্ভর করবে আমি কেমন অনুভব করি, শারীরিকভাবে কেমন থাকি, তার ওপর। আমাকে নিজের ব্যাপারে বাস্তববাদী হতে হবে। জানতে হবে প্রতিযোগিতা করতে এবং সতীর্থদের পাশে থেকে সাহায্য করার মতো কাজের জন্য আমি উপযুক্ত কি না।’

‘সময় বাকি আছে এবং সেই মুহূর্তে আমি কেমন থাকব জানি না। বয়স একটি বাস্তবতা, যদিও এটি একটি সংখ্যা। আমি যে ম্যাচগুলো খেলতে যাচ্ছি, সেগুলো ইউরোপে খেলা ম্যাচগুলোর মতো নয়। তবে এটা নির্ভর করবে আমি কেমন অনুভব করি, আমার সতীর্থদের পাশে থাকার সময় কেমন অনুভব করি এবং আমি এখনও প্রতিযোগিতা করতে পারি কিনা, তার ওপর।’