রাশিয়ার দাবি, একমাসে ইউক্রেনের ৩৫ হাজার সেনা নিহত, ২৭০০ সামরিক যান ধ্বংস

বিভিন্ন যুদ্ধফ্রন্টে গত এক মাসে ৩৫ হাজারেরও বেশি সেনা হারিয়েছে ইউক্রেন। একইসঙ্গে বহু সামরিক সরঞ্জামও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সব মিলিয়ে সদ্য সমাপ্ত মে মাসে বড় ধরনের ধাক্কার মুখে পড়েছে ইউক্রেন বাহিনী। রাশিয়ার নতুন প্রতিরক্ষামন্ত্রী আন্দ্রে বেলৌসোভ শুক্রবার কাজাখস্তানের রাজধানী আস্তানায় এক বৈঠকে এ দাবি করেন। খবর আরটি।

রুশ হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত ইউক্রেনের একটি এলাকা

আস্তানায় অনুষ্ঠিত রাশিয়ার নেতৃত্বাধীন আঞ্চলিক নিরাপত্তা জোট কালেকটিভ সিকিউরিটি ট্রিটি অর্গানাইজেশনের (সিএসটিও) সম্মেলনে রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, চলমান যুদ্ধে রুশ বাহিনী ইউক্রেনীয় বাহিনীর সক্ষমতা হ্রাসের কৌশল নিয়ে এগুচ্ছে। সেই কৌশলে বেশ সাফল্যও আসছে।

আন্দ্রে বেলৌসোভ জানান, মে মাসজুড়ে ইউক্রেনের খারকিভে রুশ ও ইউক্রেনীয় বাহিনীর মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ হয়েছে। সেখানে প্রচুর ইউক্রেনীয় সেনা নিহত হয়েছে। ধ্বংস হয়েছে অগণিত সামরিক যানবাহন। একপর্যায়ে রুশ বাহিনীর এই প্রবল ধাক্কা সামলাতে না পেরে খারকিভে পিছু হটতে বাধ্য হয় ইউক্রেনীয় বাহিনী। এদিকে নিজ দেশে পিছু হটলেও নিজেদের শক্তিমত্তা দেখাতে ইউক্রেন রাশিয়ার অভ্যন্তরের বিভিন্ন বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালাচ্ছে বলে দাবি করেন রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী।

রুশ হামলায় পিছু হটছে ইউক্রেনীয় বাহিনী

তিনি বলেন, গত মে মাসে ইউক্রেন অন্তত ৩৫ হাজার সেনা হারিয়েছে। এর পাশাপাশি তাদের ২৯০টি ট্যাংকসহ দুই হাজার ৭০০-এর বেশি সামরিক যান ধ্বংস হয়েছে। ধ্বংস হওয়া এসব ট্যাংকের মধ্যে নামী-দামীখ্যাত যুক্তরাষ্ট্রের আব্রাহাম, ব্র্যাডলি এবং ইউরোপের লিওপার্ডও রয়েছে। এগুলো ছাড়াও একই সময়ে ইউক্রেনীয় বাহিনী অন্তত ১১টি যুদ্ধবিমান, চারটি হেলিকপ্টারসহ প্রায় ৭৩০টি ফিল্ড আর্টিলারি আগ্নেয়াস্ত্র ও মাল্টিপল রকেট লাঞ্চার হারিয়েছে।

অন্যদিকে রাশিয়ার বিভিন্ন স্থাপনা লক্ষ্য করে ইউক্রেন যেসব ড্রোন, রকেট ছুঁড়েছে, তার অধিকাংশই ধ্বংস করতে সক্ষম হয়েছে বলে দাবি করেন রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, সহস্রাধিক ইউএভি ড্রোন, ২৫০টিরও বেশি হিমার্স ও ভ্যাম্পায়ার রকেট, ৮০টিরও বেশি হ্যামার গাইডেড বোমা, ৫০টি এটিএসিএমএস ক্ষেপণাস্ত্র এবং ৮টি স্ক্যাল্প ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র লক্ষ্যে আঘাত হানার আগেই ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে।

বেলৌসোভ দাবি করেন, অস্ত্রের সরবরাহ ঠিক রাখতে ইউক্রেন পশ্চিমাদের মন জোগানোর চেষ্টা করছে। আর সে কারণেই নিজ দেশে পর্যদুস্ত হলেও তারা রাশিয়ার অভ্যন্তরে হামলা চালাচ্ছে। এ মাসের মাঝামাঝি সময়ে সুইজারল্যান্ডে একটি শান্তি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। রাশিয়ার অভ্যন্তরে চালানোর এসব হামলার পরিসংখ্যান তুলে ধরে কিয়েভ আরও বেশি অস্ত্র সরবরাহের জন্য পশ্চিমা মিত্রদের প্রতি আহ্বান জানাবে।