ভোটের ফল জোটে, শরীক খুঁজছে এএনসি

নেলসন ম্যান্ডেলার দল খ্যাত আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেসের (এএনসি) জন্য ভরাডুবিই বলা চলে। ৩০ বছর ধরে দক্ষিণ আফ্রিকায় ক্ষমতাসীন দলটি এবার সবচেয়ে খারাপ ফল করেছে পার্লামেন্ট নির্বাচনে। ফল মেনে নিয়ে এরইমধ্যে সরকার গঠনে জোটের শরীক খুঁজছে ক্ষমতাসীন দলটি। খবর বিবিসি ও আল জাজিরার।

ভোটে ভালো ফল করার পর আনন্দ র্যালি করে জ্যাকব জুমার সমর্থকরা

দক্ষিণ আফ্রিকার পার্লামেন্ট নির্বাচনে ৪০০ আসনে ভোটগ্রহণ হয়েছে বুধবার। আজ শনিবার ৯৯.৫১ শতাংশ আসনের ভোটের ফল প্রকাশ করেছে দেশটির নির্বাচন কমিশন। তাতে দেখা গেছে, কোনো দলই সরকার গঠন করার মতো একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি, বাগাতে পারেনি ৫০ শতাংশ ভোট।

ভোটের ফল অনুযায়ী, ৯৯ শতাংশ ভোটের মধ্যে এএনসি পেয়েছে মাত্র ৪০ শতাংশ ভোট। ভোটে দ্বিতীয় হয়েছে মধ্য-ডানপন্থী জোট ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (ডিএ)। জোটটি পেয়েছে ২২ শতাংশ ভোট। ১৫ শতাংশ ভোট পেয়ে তৃতীয় হয়েছে সাবেক প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমার দল এমকে। এছাড়া কট্টরপন্থী ইএফএফ পেয়েছে ৯ শতাংশ ভোট।

ভোটের ফলের তুলনামূলক চিত্রে দেখা যাচ্ছে, এএনসি এবার ইতিহাসের সবচেয়ে কম ভোট পেয়েছে। গত নির্বাচনেও তারা ৫৭ শতাংশ ভোট পেয়েছিল। যেহেতু, তারা ভোটে প্রথম হলেও সরকার গঠন করার মতো একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি।

একসময় নেলসন ম্যান্ডেলার নেতৃত্বে যে দলটি বর্ণবাদের অবসান ঘটিয়েছে, ৩০ বছরের মাথায় এসে সে দলটির ভোটে এমন শোচনীয় অবস্থা দক্ষিণ আফ্রিকায় রাজনৈতিক পালাবদলের ইঙ্গিত।

ভোটের ফল বলছে, ক্ষমতায় থাকতে হলে এক বা একাধিক ছোট দলের সঙ্গে চুক্তি করতে হবে এএনসিকে। তাই ফল মেনে নিয়ে এরইমধ্যে জোট সরকার গঠনের আলোচনার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন এএনসি নেতারা।

জোট সরকার গঠনের ক্ষেত্রে এএনসির হয় ডিএ নয়তো এমকের দ্বারস্থ হতে হবে। তবে জটিলতা সেখানেই।

ভোটে দ্বিতীয় মধ্য-ডানপন্থী জোট ডিএ ক্ষমতাসীন দল এএনসির কিছু নীতির ঘোর বিরোধী। যেমন এএনসির অন্যতম নীতি কালো অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের পক্ষে নয় ডিএ। সেক্ষেত্রে তারা জোট সরকারে আসবে কিনা, তা এখনই বলা যাচ্ছে না।

আবার মাঠে নতুন হলেও ভোটে তৃতীয় এমকে পার্টি সাবেক প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমার দল। এএনসির নেতৃত্বে থাকা বর্তমান প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসার সঙ্গে ক্ষমতার দ্বন্দ্বেই একসময় দলটি থেকে বেরিয়ে যান জ্যাকব জুমা এবং নতুন দল খুলে রাজনীতির মাঠে আসেন।

জ্যাকব জুমার দল এমকে এরইমধ্যে জানিয়েছে, রামাফোসা প্রেসিডেন্ট থাকলে তার সঙ্গে কাজ করা সম্ভব নয়। তাই জোটের জট খুলবে কীভাবে, সেটি আলোচনাসাপেক্ষ, বলাই বাহুল্য।