গাজার সমর্থনে আন্দোলনরত মার্কিন শিক্ষার্থীদের প্রশংসায় খামেনি

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের রক্তক্ষয়ী হামলায় ক্রমবর্ধমান প্রাণহানির ঘটনার প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রশংসা করেছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। বৃহস্পতিবার (৩০ মে) তার সরকারি ওয়েবসাইটে যুক্তরাষ্ট্রের ছাত্র সমাজ তথা তরুণদের উদ্দেশে লেখা চিঠিটি প্রকাশিত হয়। খবর এএফপি।

আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি

চিঠিতে তিনি লেখেন, আমার এই চিঠি সেইসব তরুণদের উদ্দেশে লেখা, যাদের জাগ্রত বিবেক তাদেরকে গাজার নির্যাতিত নারী ও শিশুদের রক্ষায় এগিয়ে আসতে উদ্বুদ্ধ করেছে। তাদের প্রতি আমার সহানুভূতি ও সংহতির বার্তা। বর্তমানে যে ইতিহাস রচিত হচ্ছে, তাতে তারা সঠিক পক্ষে অবস্থান নিয়েছে।

তাদেরকে ‘প্রিয় তরুণ শিক্ষার্থী’ সম্বোধন করে তিনি বলেন, তোমরা প্রতিরোধ ফ্রন্টের একটা অংশ গড়ে তুলেছ এবং ইসরায়েলের প্রকাশ্য সমর্থক মার্কিন সরকারের নিষ্ঠুর চাপের মধ্যে থাকা সত্ত্বেও একটি সম্মানজনক সংগ্রাম শুরু করেছ।

ইরানের সর্বোচ্চ এই নেতা বলেন, ইসরায়েলিদের নির্মম নেটওয়ার্ক ফিলিস্তিনি জাতির ওপর বহু বছর ধরে অত্যাচার চালিয়ে আসছে এবং তাদের দেশ দখল করে তাদের ওপরই চরম নির্যাতন ও নিপীড়ন চালাচ্ছে। ফিলিস্তিনের গাজায় আজ তারা যে গণহত্যা চালাচ্ছে তা গত কয়েক দশক ধরে চলমান চরম জুলুম ও নিষ্ঠুরতারই ধারাবাহিকতা মাত্র।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ব্রিটিশ সরকারের সহায়তায় এক দল ইহুদি এই ভূখণ্ডে আসে। তারা সেখানে ‘ইসরায়েল’ নামে একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে। ব্রিটিশদের এই সাহায্যের পর যুক্তরাষ্ট্র এই দখলদারদের সবচেয়ে বড় পৃষ্ঠপোষকের দায়িত্ব পালন করছে। তারা ইসরায়েলকে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সমর্থনের পাশাপাশি অস্ত্র সরবরাহ অব্যাহত রেখেছে, পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির পথ খুলে দিয়েছে এবং এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সব সাহায্য করে যাচ্ছে। এখনও তাদের সেই সহায়তার ধারাবাহিকতা অব্যাহত রয়েছে।

খামেনি এমন পরিস্থিতিতে ফিলিস্তিনের পক্ষে রাস্তায় নেমে আসায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্রশংসা করে বলেন, ইতিহাসের পাতা যখন উল্টে যাচ্ছে, তখন তোমরা এর ডান প্রান্তে অবস্থান নিয়েছ। আমি তোমাদের প্রতি সহানুভূতি জানাই এবং তোমাদের দৃঢ়তাকে সম্মান করি। এ সময় তিনি তাদেরকে কুরআনের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার পরামর্শ দেন।

গত এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনপন্থীি বিক্ষোভ তুঙ্গে ওঠে। পরে পরিস্থিতি মোকাবেলায় ক্যাম্পাসে পুলিশ মোতায়েন করা তাদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। পুলিশ কয়েক ডজন শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তারও করে পুলিশ। নিউইয়র্কের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু হওয়া বিক্ষোভ আন্দোলন ইউরোপসহ অন্যান্য অঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়ে।