যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হারল টাইগাররা

ব্যাটিংটা ভালো হয়নি। কোনোরকম খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে দেড় শ’ পার করে বাংলাদেশ। পরে দুর্দান্ত বোলিংয়ে জেগেছিল আশা। সেই আশার গুঁড়েবালি। শেষের আলগা বোলিংয়ের চড়া মূল্য দিতে হলো টাইগারদের। আজ মঙ্গলবার রাতে খর্বশক্তির যুক্তরাষ্ট্রের কাছে পাঁচ উইকেটে হেরে গেছে নাজমুল হোসেন শান্তর দল।

প্রথমবারের দেখাতেই যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হেরে বসল বাংলাদেশ। ছবি: বিসিবি

টেক্সাসে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ছয় উইকেটে ১৫৩ রান তোলে বাংলাদেশ। জবাবে পাঁচ উইকেট ও তিন বল হাতে রেখে রোমাঞ্চকর জয় তুলে নেয় যুক্তরাষ্ট্র (১৫৬/৫)। এই জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজে এগিয়ে গেল স্বাগতিকরা। আগামী বৃহস্পতিবার একই ভেন্যুতে সিরিজ বাঁচাতে মাঠে নামবেন শান্ত-সাকিবরা।

ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ অবশ্য বাংলাদেশের হাতেই ছিল। দলীয় শতকের আগে যুক্তরাষ্ট্রের পাঁচ উইকেট তুলে নিয়েছিল টাইগাররা। শেষ চার ওভারে স্বাগতিকদের দরকার ছিল ৫৪ রান। এরপর শুরু হয় কোরি অ্যান্ডারসন ও হারমিত সিং ঝড়। সেই ঝড়ো ছত্রখান হয়ে যায় বাংলাদেশের বোলিং লাইন।

১৭, ১৮ ও ১৯তম ওভারে যুক্তরাষ্ট্র রান নেয় যথাক্রমে ১৭, ১৪ ও ১৫। শেষ ওভারে আট রান আগলে রাখার চ্যালেঞ্জ ছিল মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের। কিন্তু তিন বলেই চার-ছক্কায় তিনি হজম করেন ১১ রান। তাতেই হয়ে গেল যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস। প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলতে নেমেই জয়ের স্বাদ পেল তারা। টেস্টখেলুড়ে দলের বিপক্ষে এটা যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় জয়। এর আগে আয়ারল্যান্ডকে হারিয়েছিল তারা।

১৩ বলে দুই চার ও তিন ছক্কায় ৩৩ রানে অপরাজিত থাকেন হারমিত। ভারতীয় বংশোদ্ভুত এই অলরাউন্ডারের হাতেই উঠেছে ম্যাচ সেরার স্বীকৃতি। তার সঙ্গী কোরি অ্যান্ডারসন ২৫ বলে ৩৪ রানে অপরাজিত থাকেন। এ ছাড়া স্টিভেন টেলর ২৯ বলে ২৮, অধিনায়ক মোনাক প্যাটেল ১০ বলে ১২, আন্দ্রেস গুস ১৮ বলে ২৩ ও নিতিশ কুমার ১০ বলে ১০ রান করেন।

বাংলাদেশের পক্ষে ৪১ রানে দুই উইকেট নেন তিনি। ফিজ দুটো উইকেটই নেন দ্বাদশতম ওভারে। জয়ের আশা জাগে তাতে। এরপরই খেই হারিয়ে ফেলেন ফিজসহ অন্য বোলাররা। বেধরক মার খান যুক্তরাষ্ট্রের কাছে। ৩১ রানে একটি শিকার শরিফুল ইসলামের। সাকিব আর হাসান উইকেট না পেলেও তিন ওভারে ১৬ রান দিয়েছেন।

এর আগে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশের শুরুটা ছিল ধীরগতির। মিরপুরের প্রায় ‘আদর্শ’ মন্থর উইকেটে শম্বুক গতিতে চলতে থাকেন দুই ওপেনার লিটন দাস ও সৌম্য সরকার। পঞ্চম ওভারে ৩৪ রানে ভাঙে উদ্বোধনী জুটি। পরপর দুই ওভারে ফেরেন লিটন-সৌম্য। ১৫ বলে ১৪ রানে আউট হন লিটন। ১৩ বলে ২০ রানে ফেরেন সৌম্য।

পরে উইকেটে এসে প্রস্তর যুগের ব্যাটিং করেন অধিনায়ক শান্ত। ১১ বলে স্রেফ তিন রানে বিদায় নেন বাঁহাতি ব্যাটার। বাংলাদেশ মান বাঁচানোর সংগ্রহ পেয়েছে মূলত তাওহিদ হৃদয় ও মাহমুদউল্লাহ ঝড়ে। ৪৭ বলে চারটি চার ও দুটি ছক্কায় ৫৮ রান করেন হৃদয়। ২২ বলে ৩১ রানে আউট হন মাহমুদউল্লাহ।

যুক্তরাষ্ট্রের বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল স্টিভেন টেলর। তিন ওভারে নয় রানে দুই উইকেট নেন তিনি। একটি করে শিকার নেত্রভালকার, আলি খান ও জেসি সিংয়ের। অথচ এমন উইকেটে খেলে অভ্যস্ত বাংলাদেশ। টেক্সাসের উইকেট অনেকটাই মিরপুরের আদলে ছিল। কিন্তু চেনা উইকেটের ফায়দা নিতে পারেননি শান্তরা। বরং যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হেরে লজ্জায় ডুবলেন তারা।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ: ১৫৩/৬ (২০ ওভার)।
যুক্তরাষ্ট্র: ১৫৬/৫ (১৯.ও ওভার)।
ফল: যুক্তরাষ্ট্র ৫ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচ সেরা: হারমিত সিং (যুক্তরাষ্ট্র)।