জোরদার হচ্ছে রুশ হামলা, অস্ত্রের জন্য মরিয়া ইউক্রেন!

দিন যতই যাচ্ছে, ইউক্রেনের রুশ হামলার পরিমাণ ততই বাড়ছে। সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ইউক্রেনের সৈন্যদের অস্ত্র-গোলাবারুদ সংকট। শিগগির বড় ধরনের অস্ত্রের চালান না পেলে রণক্ষেত্রে বড় ধরনের বিপাকে পড়ে যাবে বলে জানিয়েছেন ইউক্রেনের সৈন্যরা। খবর রয়টার্স।

ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা

ইউক্রেনের গানার কমান্ডার ওলেক্সান্ডার কোজাচেঙ্কো জানান, যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া এম৭৭৭ হাউইটজার দিয়ে একবারে ১০০টি গোলাবর্ষণ করা যায়, কিন্তু তারা সেখানে ১০টি গোলা বসাতেও হিমশিম খাচ্ছে। অন্যদিকে ৯৩তম মেকানাইজড ব্রিগেডের কর্নেল পাভলো পালিসা সতর্ক করে জানিয়েছেন, আমরা এখন প্রতিকূল পরিবেশে আছি। শত্রুরা প্রচুর অস্ত্র নিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালাচ্ছে। তাই দীর্ঘ যুদ্ধের জন্য আমাদের আরও অনেক বেশি অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম প্রয়োজন।

এদিকে সামরিক পর্যবেক্ষকরা জানাচ্ছেন, গত বছর ইউক্রেন নিজেদের ভূমি উদ্ধারে যতটা সফলতা দেখিয়েছিল, তা এখন আবার নেতিবাচক অবস্থানে চলে গেছে। অস্ত্র ঘাটতির কারণে তাদের জায়গাগুলো আবারও দখল করে নিচ্ছে রুশ বাহিনী। সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রবণতা অনেক বেড়েছে।

যুদ্ধক্ষেত্রে ইউক্রেনের সেনা

সামরিক বিশ্লেষক পাসি পারোইনেন বলেন, ২০২৩ সালে ইউক্রেনের বিভিন্ন অংশে পাল্টা হামলা শুরু হয়। এতে রাশিয়া তাদের দখল করা অনেকখানি জায়গা ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। কিন্তু ২০২৩ সালে রুশ বাহিনী যে পরিমাণ জায়গা ছেড়েছিল, ২০২৪ সালের এই কয়েক মাসেই তার চেয়ে বেশি জায়গা দখল করে নিয়েছে।

রাশিয়ার এই অগ্রগতিতে ইউক্রেনের শীর্ষ নেতাদের কপালে ভাজ ফেলছে। কারণ এরই মধ্যে কিয়েভের সামরিক কেন্দ্র হিসেবে কাজ করা গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলো রুশ হামলার লক্ষ্যে পরিণত হয়েছে। উত্তরপূর্ব খারকিভ অঞ্চলে ইউক্রেনের পরিস্থিতি এরই মধ্যে বেশ খারাপ হয়েছে। আগামীতে রুশ বাহিনী দোনবাস দখলের চেষ্টা করবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

মূলত অস্ত্র সংকটের কারণেই এ অসহায় অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে ইউক্রেনীয় বাহিনীর। রাশিয়ার অঢেল অস্ত্রের সামনে তাদের সীমিত অস্ত্র প্রায়ই অকার্যকর বলে প্রমাণিত হচ্ছে। বর্তমানে ইউক্রেনীয় সেনাদের মূল ভরসা যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সাহায্য। তবে প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুলতা, রক্ষণাবেক্ষণের ঘাটতি ইত্যাদি কারণে পশ্চিমা বিশ্বের দেওয়া অস্ত্রগুলো দিয়ে কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছে না ইউক্রেন।

এ অবস্থায় রুশ বাহিনী হামলা আরও জোরদার করতে পারে বলে ধারণা করছেন ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। ফলে মিত্রদের কাছে আরও বেশি আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ও যুদ্ধবিমান দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জেলেনস্কি।