‘বন্যার তোড়ে চোখের সামনে ভেসে গেল মানুষ-পশু-ঘরবাড়ি’

আফগানিস্তানের মধ্যাঞ্চলীয় গোর প্রদেশে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় অন্তত ৫০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। আজ শনিবার ভোরে এ ঘটনা ঘটেছে। হঠাৎই পানির স্রোত ধেয়ে এসে ভাসিয়ে নিয়ে যায় মানুষ, গবাদি পশু ও ঘরবাড়ি। আগের সপ্তাহে দেশেটির উত্তরের বাগলান প্রদেশে আকস্মিক বন্যায় একদিনে ৩০০ জনের প্রাণহানি ঘটে। খবর বিবিসির।

আফগানিস্তানে আকস্মিক বন্যা সবকিছু ভাসিয়ে নিয়ে চলে যায়

গোর প্রদেশের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ৫০ জনের প্রাণহানি ছাড়াও আরও কয়েকজন নিখোঁজ রয়েছে। বন্যার পানি ধেয়ে আসার মাত্র কয়েক মিনিট আগে লোকজন টের পায় এবং অনেকেই ছুটে গিয়ে নিরাপদ উঁচু জায়গায় আশ্রয় নিতে পারেনি।

কর্তৃপক্ষ বলছে, বন্যায় হাজার হাজার গবাদি পশু মারা গেছে। প্রায় দুই হাজার ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়েছে এবং ভেঙে গেছে বেশিরভাগ রাস্তাঘাট। প্রাদেশিক রাজধানী ফিরোজকোহতে শত শত দোকানপাট এখনও পানির নিচে রয়েছে।

ফিরোজকোহের একজন বাসিন্দা জহির জাহিদ বলেন, একটি বিশাল পানির স্রোত সবকিছু ধুয়ে দিয়েছে, স্থানীয় একটি মসজিদের লাউডস্পিকার থেকে আকস্মিক বন্যার সতর্কতা জারির পর আমরা নিরাপদ জায়গার খোঁজে দৌড়াচ্ছিলাম।

জহির বলেন, আমি পরিবার-পরিজন নিয়ে পাহাড়ের উচুঁ জায়গায় আশ্রয় নিয়েছি। তবে নিজের চোখে বন্যায় আমার ঘর ধ্বংস হতে দেখেছি। পরিবারের নারী ও শিশু, সবাই কাঁদছিল।

প্রাদেশিক গভর্নর আবদুল ওয়াহিদের কার্যালয়ের একজন মুখপাত্র বলেন, এ পর্যন্ত ৫০ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আরও কয়েক ডজন লোক নিখোঁজ রয়েছে।

প্রদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ রাজ্যে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করেছে এবং আশ্রয়, খাদ্য ও পানির জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আবেদন করেছে। আফগানিস্তানের আবহাওয়া বিভাগ দেশটির সমস্ত প্রদেশে আরও বৃষ্টি এবং সম্ভাব্য বন্যার বিষয়ে সতর্কতা জারি করেছে।

জাতিসংঘের সংস্থাগুলো সতর্ক করে বলেছে, সাম্প্রতিক বন্যায় মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে। কারণ ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় প্রবেশ না করতে পারায় উদ্ধার তৎপরতাও মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

জাতিসংঘ ও তালেবান কর্মকর্তাদের মতে, গত সপ্তাহে বাগলান প্রদেশে একদিনের আকস্মিক বন্যায় ৩০০ জনেরও বেশি মানুষ মারা গেছে। গত সপ্তাহে অস্বাভাবিকভাবে ভারী বর্ষণে উত্তরাঞ্চলের বেশ কয়েকটি গ্রাম ধ্বংস হয়ে যায়।

জাতিসংঘের ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম অনুসারে, আকস্মিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত বাগলান প্রদেশে বাস্তুচ্যুত হওয়া মানুষদের কোনো বাড়ি নেই, কোনো জমি নেই এবং জীবিকার কোনো উৎস নেই।