মেসির রেকর্ড পারিশ্রমিক, এমএলএসের ২৫ দলের চেয়েও বেশি!

বার্ষিক ২০.৪৫ মিলিয়ন ডলারের রেকর্ড পারিশ্রমিক লিওনেল মেসিকে মেজর লিগ সকারের (এমএলএস) সর্বোচ্চ পারিশ্রমিকপ্রাপ্ত খেলোয়াড় বানিয়েছে। শুধু তাই নয়, এমএলএস প্লেয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন বৃহস্পতিবার যে তথ্য প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যায়, লিগের ২৫টি ক্লাবের পুরো দলের সম্মিলিত বেতনও তার চেয়ে কম! খবর আরব নিউজ।

লিওনেল মেসি

খেলোয়াড়দের ইউনিয়ন নিয়মিতভাবে লিগের সকল ফুটবলারের বেতন প্রকাশ করে। আটবারের ব্যালন ডি’অর বিজয়ী মেসি তালিকায় শীর্ষে থাকাটা অবাক করার কিছু নয়। তবে তার বেতন ও অন্যান্য খেলোয়াড় এবং ক্লাবের মধ্যে যে বিশাল ব্যবধান তা সত্যিই চোখে পড়ার মতো।

মেসির মোট পারিশ্রমিক ২০,৪৪৬,৬৬৭ ডলার। মৌলিক বেতন ১২ মিলিয়ন ডলার এবং বাকিটা বিভিন্ন বোনাস। এই অর্থের হিসেবে কিন্তু আর্জেন্টাইন বিশ্বকাপজয়ী এই তারকার বাণিজ্যিক চুক্তি, এন্ডোর্সমেন্ট ও অ্যাডিডাস, অ্যাপলের মতো কোম্পানিগুলোর স্পন্সরশিপ থেকে পাওয়া বিপুল অঙ্কের অর্থ যোগ হয়নি।

মেসি ২০১৭ সালে তার সর্বশেষ চুক্তি সই করেছিল স্প্যানিশ ক্লাব বার্সেলোনার সঙ্গে। চার বছরের সে চুক্তি অনুযায়ী, তিনি প্রতি মৌসুমে ১৩৮ মিলিয়ন ইউরো (বেতন ও অন্যান্য সুবিধা মিলিয়ে) আয় করতেন। বার্সার সঙ্গে চুক্তি শেষ হওয়ার পর, ২০২১ সালের আগস্টে তিনি প্যারিস সেইন্ট জার্মেইতে (পিএসজি) যোগ দেন। সেখানে তিনি ৩০-৩৫ মিলিয়ন ইউরো আয় করছিলেন বলে জানা যায়।

৩৬ বছর বয়সী মেসি গত বছরের জুলাই মাসে ইন্টার মিয়ামিতে যোগ দিয়েছেন। এই চুক্তি ২০২৫ মৌসুমের শেষ পর্যন্ত বহাল থাকবে। শোনা যাচ্ছে, তিনি এখনও বার্সা থেকে অর্থ পাচ্ছেন। বার্সার সভাপতি হুয়ান লাপোর্তা ২০২২ সালের জানুয়ারিতে বলেছিলেন, ২০২৫ সাল পর্যন্ত ক্লাব মেসিকে বকেয়া বেতন পরিশোধ করতে হবে।

মেসির আগে এমএলএসের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিকপ্রাপ্ত খেলোয়াড় ছিলেন টরেন্টোর ইতালিয়ান স্ট্রাইকার লরেঞ্জো ইনসিনিয়ে, তার আয় ছিল ১৫.৪ মিলিয়ন ডলার। তালিকায় তৃতীয় স্থানে আছেন মেসির স্প্যানিশ সতীর্থ ও বার্সার সাবেক মিডফিল্ডার সার্জিও বুস্কেটস, তার আয় ৮.৮ মিলিয়ন ডলার।

মিয়ামির সাবেক বার্সা তারকা উরুগুয়ের স্ট্রাইকার লুইস সুয়ারেজ এবং স্প্যানিশ ফুলব্যাক জর্ডি আলবা দুজনেই বছরে ১.৫ মিলিয়ন ডলার করে আয় করেন। ইন্টার মিয়ামির মোট বেতন ৪১.৬৮ মিলিয়ন ডলার। ৩১.৪১ মিলিয়ন ডলার নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছে টরেন্টো। বর্তমান লিগ চ্যাম্পিয়ন কলম্বাস ক্রু ১৫.১৯ মিলিয়ন ডলারের বেতন নিয়ে লিগে ২১তম স্থানে রয়েছে।

মেসি এমন অনেক সতীর্থের সাথেড্রেসিং রুম শেয়ার করেন যাদের আয় তার পারিশ্রমিকের সামান্য অংশ মাত্র। নিয়মিত সদস্য ডিফেন্ডার নোয়া অ্যালেনের আয় মাত্র ৯১,৩৮৩ ডলার। ২০২৪ সালে এমএলএসের গড় বেতন ৫৯৪,৩৯০ ডলার, যা গত বছরের তুলনায় ১২.১ শতাংশ বেশি।

‘ডেজিগনেটেড প্লেয়ার’ নিয়মের কারণেই মিয়ামি মেসিকে এত বেশি বেতন দিতে পারছে। ২০০৭ সালে ডেভিড বেকহ্যামকে ৬.৫ মিলিয়ন ডলার বার্ষিক বেতনে চুক্তি করার জন্য এই নিয়ম আনা হয়েছিল, যেখানে পাঁচ বছরে তার আয় ছিল প্রায় ৫০ মিলিয়ন ডলার।

এমএলএসের মানদণ্ডে মেসির আয় অনেক বেশি হলেও তা যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য প্রধান খেলাধুলার শীর্ষ তারকাদের তুলনায় অনেক কম। গত বছর সিনসিনাটি বেঙ্গলসের কোয়ার্টারব্যাক জো বুরো লিগ রেকর্ড গড়ে ৫৫ মিলিয়ন ডলার মূল্যের পাঁচ বছরের চুক্তি সই করেন। বাস্কেটবলে সর্বোচ্চ আয়কারী গোল্ডেন স্টেট ওয়ারিয়র্সের স্টিফেন কারি ৫১.৯ মিলিয়ন ডলার আয় করেন।