হানিয়া: একসময় ইসরায়েলি আগ্রাসন ভেঙে পড়বে, বিতাড়িত হবে

ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরো প্রধান ইসমাইল হানিয়া বলেছেন, চূড়ান্ত পরিণতিতে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড থেকে ইহুদিবাদী ইসরায়েলের মুছে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত এবং এটি একটি ঐতিহাসিক সত্য। বুধবার (১৫ মে) নাকবা দিবসের বার্ষিকী উপলক্ষে দেওয়া এক ভাষণে হামাস নেতা এ কথা বলেন। খবর আল মায়াদিন।

ইসমাইল হানিয়া

১৯৪৮ সালের ১৫ মে পশ্চিমা ষড়যন্ত্রে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড জবর দখল করে অবৈধভাবে ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা হয়। সে সময় রাতারাতি সাড়ে সাত লাখ ফিলিস্তিনিকে বাস্তুচ্যুত করা হয়, যারা আজও মাতৃভূমিতে ফিরতে পারেননি। ফিলিস্তিনিরা দিবসটিকে ‘নাকবা’ বা ‘বিপর্যয়’ দিবস হিসেবে স্মরণ করে।

দিবসটির স্মরণে দেওয়া এক ভাষণে হামাস নেতা বলেন, আমাদের এই পবিত্র ভূমি থেকে ইসরায়েলের অপসারণ কোরআনের একটি অনিবার্যতা এবং ঐতিহাসিক সত্য। ইসরায়েলিরা ফিলিস্তিনি জাতি ও তাদের পবিত্র স্থানগুলোকে ধ্বংস করতে চেয়েছিল। কিন্তু এখন তাতে তারা সফল হয়নি। এখন পর্যন্ত ফিলিস্তিন ইস্যু আমাদের সচেতন জনগণ এবং সারা বিশ্বের স্বাধীনতাকামী মানুষের হৃদয়ে বিদ্যমান রয়েছে।

৭ অক্টোবর ইসরায়েলের অভ্যন্তরে গিয়ে চালানো অভিযান সম্পর্কে হানিয়া বলেন, সেদিনের হামলা ফিলিস্তিনের মুক্তি ও স্বাধীনতা আন্দোলনের পটভূমি হিসেবে কাজ করবে। সেদিন ফিলিস্তিনের যোদ্ধারা ইসরায়েলের ভেতরে গিয়ে সুরক্ষিত শক্ত ঘাঁটিগুলোতে ঢুকে পড়েছে এবং তাদের অপরাজেয় বাহিনীকে নাস্তানাবুদ করে দিয়েছে। তারা সে ব্যর্থতার লজ্জা ঢাকতে ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর বিশেষ করে নারী ও শিশুদের ওপর হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে।

গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন

হামাসকে গাজা থেকে বিতাড়িত করা হবে বলে ইসরায়েল যে দাবি করছে, তা নাকচ করে দিয়ে ইসমাইল হানিয়া বলেন, আমরা নিশ্চিতভাবেই বিশ্বাস করি, যত সময়ই লাগুক না কেন, একসময় ইসরায়েলি আগ্রাসন ভেঙে পড়বে এবং ইসরায়েল আমাদের ভূমি থেকে বিতাড়িত হবে।

সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি সম্পর্কে হামাসপ্রধান বলেন, যেকোনো যুদ্ধবিরতি চুক্তি করতে চাইলে ইসরায়েলকে অবশ্যই স্থায়ীভাবে যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে এবং গাজা থেকে সব সেনা প্রত্যাহার করতে হবে। আর বন্দি থাকা ইসরায়েলিদের ফেরাতে হলে অবশ্যই গাজার উদ্বাস্তু জনগণকে তাদের ঘরবাড়িতে ফেরার সুযোগ দিতে হবে, গাজার পুনর্গঠন করতে হবে এবং ১৬ বছর ধরে চলা অবরোধ প্রত্যাহার করতে হবে।

সাম্প্রতিক সময়ে মিশর, কাতারসহ বিভিন্ন মধ্যস্থতাকারীদের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব ইসরায়েলিদের কর্তৃক প্রত্যাখ্যানের বিষয়টি উল্লেখ করে হানিয়া বলেন, তাদের আগ্রাসন ও যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার পূর্বপরিকল্পিত পদক্ষেপ দেখে বুঝা যায়, বন্দি ইসরায়েলিদের ব্যাপারে তাদের কোনো উদ্বেগ নেই।

হানিয়া গত ১৪ এপ্রিল ইসরায়েলে ইরারে প্রতিশোধমূলক অভিযানকে স্বাগত জানান। এর পাশাপাশি তিনি বলেন, যুদ্ধের পর গাজার ব্যবস্থাপনার বিষয়টি কেবলমাত্র জাতীয় ঐকমত্যের দ্বারাই নির্ধারিত হবে।