ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক সীমিত করার কথা ভাবছে মিশর

মিশরীয় কর্মকর্তারা বলেছেন, ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক সীমিত করার কথা ভাবছে মিশর। দক্ষিণ গাজা উপত্যকার রাফাতে ইসরায়েলি হামলায় ক্ষুব্ধ হয়ে দেশটি এই পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে। মার্কিন পত্রিকা ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য পাওয়া গেছে।

ইসরায়েল ও মিশরের পতাকা

ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল মিশরীয় কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বলেছে, ইসরায়েল যখন রাফাতে হামলার কয়েক ঘণ্টা আগে কায়রোকে আগাম সতর্কতা দিয়েছিল তখন থেকে সমস্যার শুরু হয়েছিল।  

মিশরের সাবেক এমপি মোহাম্মদ আনোয়ার সাদাত বলেছেন, এখন আস্থার অভাব তৈরি হয়েছে। এখন আসলে উভয় পক্ষেই এক ধরনের সন্দেহ আছে। বর্তমান মতবিরোধটি ১৯৭৯ সালের শান্তি চুক্তির পর ইসরায়েল-মিশর সম্পর্কের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ সংকট।

৬ মে রাফায় হামলার বিষয়ে মিশরীয় গোয়েন্দাদের কাছে আগাম সতর্কবার্তা পাঠায় ইসরায়েল। এই হামলার বিষয়ে উভয় পক্ষের কর্মকর্তাদের মধ্যে কয়েক মাস আলোচনার পর এই সতর্কবার্তা পাঠানো হয়েছিল।  

ইসরায়েল বলেছে, এর ফলে মিশরে কোনো প্রভাব পড়বে না এবং লোকজনকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য কয়েক সপ্তাহের অনুমতি দেওয়া হবে।

একজন মিশরীয় কর্মকর্তা বলেছেন, এই আশ্বাসের কোনোটিই বাস্তবায়িত হয়নি। ইসরায়েল রাফা ক্রসিংয়ে প্রবেশের বিষয়ে মিশরকে খুব সংক্ষিপ্ত নোটিশ দিয়েছে।

মিশরের সঙ্গে রাফা ক্রসিং সালাহ আল-দিন (ফিলাডেলফি) করিডোর বরাবর অবস্থিত। এটি মিশর দ্বারা নিয়ন্ত্রিত একটি বাফার জোন বা নিরপেক্ষ এলাকা। এই ক্রসিং দিয়ে গাজা উপত্যকায় মানবিক সহায়তা পাঠানো হয়।

ইসরায়েলি বাহিনী ৭মে রাফায় স্থল অভিযান শুরু করে। পাশাপাশি রাফা সীমান্ত ক্রসিং এর ফিলিস্তিনি অংশ নিজেদের দখলে নেয়। এরপর মিশর রাফা ক্রসিং পরিচালনার জন্য ইসরায়েলের সঙ্গে কাজ করতে অস্বীকার করেছে বলে জানা গেছে।

মিশরই প্রথম আরব রাষ্ট্র যারা ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করেছে। ১৯৭৯ সালে ইসরায়েলের সঙ্গে শান্তি চুক্তি করে মিশর। একজন মিশরীয় কর্মকর্তা বলেছেন, এখনই ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন কিংবা স্থগিত করার কোনো পরিকল্পনা নেই। কিন্তু যতদিন ইসরায়েলি বাহিনী রাফা ক্রসিংয়ে থাকবে, মিশর রাফাতে ত্রাণবাহী একটি ট্রাকও পাঠাবে না। এছাড়া ইসরায়েল থেকে রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহারের বিষয়টিও বিবেচনা করা হচ্ছে।

পর্যবেক্ষকদের মতে, গাজার রাফা ক্রসিংয়ে ইসরায়েলি দখল কায়রোকে ক্ষুব্ধ করেছে। কারণ এর ফলে হামাসকে চাপ দেওয়ার জন্য ব্যবহার করা যায় এমন একটি হাতিয়ার কেড়ে নিয়েছে ইসরায়েল।

এদিকে একজন ইসরায়েলি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, রাফা ক্রসিং দখল করার কারণে গাজায় কোনো ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশ করেনি। অথচ ফিলিস্তিনি এই ছিটমহলে ত্রাণ প্রবেশে সহায়তা করতে ইসরায়েলের প্রতি নির্দেশ দিয়েছে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে)।

সূত্র: দ্য নিউ আরব