রাফা সীমান্ত ক্রসিং: মিশর-ইসরায়েলের মধ্যে বিভেদ বাড়ছে

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর রাফা সীমান্ত ক্রসিং দখল করা এবং রাফায় সম্ভাব্য আক্রমণের পরিপ্রেক্ষিতে ইসরায়েল ও প্রতিবেশী মিশরের মধ্যে বিভেদ বাড়ছে। মিশর বারবার ইসরায়েলকে ১৯৭৯ সালের শান্তি চুক্তি লঙ্ঘনের বিষয়ে সতর্ক করেছে। তারপরেও ইসরায়েলি বাহিনী গত সপ্তাহে রাফা সীমান্ত ক্রসিংয়ের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।

রাফাহ সীমান্ত ক্রসিং

ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যে আলোচনার অন্যতম প্রধান মধ্যস্থতাকারী হলো মিশর। গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং ইসরায়েলি জিম্মি ও ফিলিস্তিনি বন্দী বিনিময় এই আলোচনার লক্ষ্য।

রাফায় সীমান্ত ক্রসিং দখল না করার জন্য মিশর বারবার ইসরায়েলকে সতর্ক করে দিয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও ২০০৭ সালে গাজা থেকে প্রত্যাহারের পর প্রথমবারের মতো ইসরায়েলি বাহিনী রাফা সীমান্ত ক্রসিংয়ের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।

মিশরই প্রথম আরব রাষ্ট্র যারা ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করেছে। কিন্তু বিশ্লেষকরা বলছেন, দক্ষিণ গাজা উপত্যকার রাফায় ইসরায়েলের কর্মকাণ্ড এই শান্তি চুক্তিকে বিপন্ন করছে। যদিও অনেকেই ইসরায়েলের সঙ্গে মিশরের সম্পর্ক ছিন্ন করার বিষয়ে সন্দিহান। তবে এই ঘটনা গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে প্রতিবেশী রাষ্ট্র দুটির মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার ইঙ্গিত দেয়। 

১২ মে, রোববার মিশর জানিয়েছে, দেশটি আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকার গণহত্যা মামলায় যোগ দেবে। এটি ইসরায়েলের সঙ্গে মিশরের সম্পর্ক খারাপ হওয়ার আরেকটি নিদর্শন।

৭ মে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী রাফা সীমান্ত ক্রসিংটি দখল করার পর এটি বন্ধ করে দেয়। গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকায় এই ক্রসিং দিয়েই মানবিক সহায়তা পাঠানো হতো।

মিশরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সামেহ শুকরি রোববার ইসরায়েলকে রাফা ক্রসিংয়ের ফিলিস্তিনি অংশটি বন্ধ করার দায়ভার বহন করার আহ্বান জানিয়েছেন।

মিশরের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী নাবিল ফাহমি বিশ্বাস করেন, রাফা ক্রসিং দখলের পর বর্তমানে তার দেশ এবং ইসরায়েলের মধ্যে সমন্বয়ের কোনও স্থান নেই। তিনি আশারক আল-আওসাত পত্রিকায় দেওয়া সাক্ষাতকারে বলেছেন, মিশর রাফা ক্রসিংয়ে ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণকে অবৈধ বলে মনে করে।

ফাহমি আরও বিশ্বাস করেন, ইসরায়েল গাজা যুদ্ধের অবসান ঘটাতে চায় না। তিনি রাফাতে ইসরায়েলের সামরিক অভিযানের সম্প্রসারণের দিকে ইঙ্গিত করে এই মন্তব্য করেছেন। তারপরেও গাজায় একটি যুদ্ধবিরতি হতে পারে বলে আশা করছেন তিনি।

সূত্র: দ্য নিউ আরব