পৃথিবীতে আঘাত হেনেছে ভয়াবহ সৌরঝড়। ২০ বছরের বেশি সময়ের ব্যবধানে শুক্রবার আঘাত হানে শক্তিশালী এই সৌরঝড়। এতে অস্ট্রেলিয়ার তাসমানিয়া থেকে যুক্তরাজ্যের আকাশ পর্যন্ত বর্ণিল আলোর ঝলসানি (অরোরা) দেখা দেয়। মহাকাশ বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, সপ্তাহান্ত পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে এই সৌরঝড়। তাতে বিশ্বজুড়ে স্যাটেলাইট ও পাওয়ার গ্রিডে বিঘ্ন ঘটতে পারে। খবর বিবিসির।

aroraসৌরঝড়ের কারণে যুক্তরাজ্যের আকাশে দেখা দেয় বর্ণিল আলোর ঝলসানি

যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ওশেনিক অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফেরিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (এনওএএ) মহাকাশীয় আবহাওয়া পূর্বাভাস কেন্দ্র জানিয়েছে, শুক্রবার গ্রিনিচ মান সময় (জিএমটি) ১৬:০০ টার দিকে সূর্য থেকে বেশ কয়েকটি ‘করোনাল ম্যাস ইজেকশন (সিএমই)’ বা মেরুজ্যোতি নিক্ষিপ্ত হয়েছে। এর ফলে সূর্য থেকে পৃথিবীতে প্লাজমা ও চৌম্বকক্ষেত্রের উদ্গীরণ ঘটে। তা পরিণত হয় প্রচণ্ড ভূচৌম্বকীয় ঝড়ে।

এবারের সৌরঝড় দেখা গেছে যুক্তরাজ্যের প্রায় সব জায়গা থেকে। উত্তর আয়ারল্যান্ড, স্কটল্যান্ড ও ইংল্যান্ডের উত্তর অংশের লোকরা শুক্রবার সন্ধ্যা থেকেই সৌরঝড়ের খেরা দেখেছেন আকাশে।

যুক্তরাজ্যের আবহাওয়া অফিসের মুখপাত্র স্টিফেন ডিক্সন বলেছেন, আজ শনিবার রাতেও দেখা যাবে আলোর ঝলসানি। তবে এটি ঠিক কোথায় ঘটবে, সেটি নিশ্চিত নয়।

ইউরোপের উত্তরাঞ্চলীয় অনেক দেশ থেকেই মেরুজ্যোতি দেখা গেছে। অস্ট্রিয়া, জার্মানি, স্লোভাকিয়া, সুইজারল্যান্ড, ডেনমার্ক এবং পোল্যান্ডের মানুষ নানা রঙের আলো উপভোগ করেছে। তারা মোবাইল ও ক্যামেরায় বন্দি করেছে সেই লাইট শো।

যুক্তরাষ্ট্রের এনওএএ বলেছে, আলোর ঝলসানি দক্ষিণে আলাবামা এবং উত্তর ক্যালিফোর্নিয়া পর্যন্ত দেখা যেতে পারে। চীনের উত্তরে ফুচিয়ায়ও দেখা গেছে সৌরঝড়ের আলো।

সৌরঝড়ের কারণে উত্তর ইউরোপ ও অস্ট্রেলিয়ায় দেখা যাওয়া নর্দান লাইট বা আলোর ঝলসানির মনোমুগ্ধকর ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করছেন অনেকে।

ইংল্যান্ডের ব্রেকসায়ারে রিডিং বিশ্ববিদ্যালয়ের স্পেস ফিজিক্সের অধ্যাপক ম্যাথিউ ওয়েনস বলেন, সিএমইর প্রভাবমূলত গ্রহের উত্তর এবং দক্ষিণ অক্ষাংশে অনুভূত হবে। তারা কতদূর প্রসারিত হবে সেটি নির্ভর করবে ঝড়ের চূড়ান্ত শক্তির ওপর।

সৌর ঝড়ের গতি আলোর গতি থেকে ভিন্ন। সূর্য থেকে আলো পৃথিবীতে পৌঁছাতে ৮ মিনিট সময় লাগে। কিন্তু সিএমইর গতি আরও স্থির। কর্মকর্তারা বলছেন, বর্তমান সিএমইর গতি গড়ে প্রতি সেকেন্ডে ৮০০ কিলোমিটার (৫০০ মাইল)।

পৃথিবীতে ২০০৩ সালের অক্টোবরে আঘাত হেনেছিল সৌরঝড় ‘হ্যালোইন স্টর্ম। দুই দশক আগের ওই সৌরঝড়ে গণহারে বিদ্যুৎ–বিচ্ছিন্নের শিকার হয় সুইডেন এবং দক্ষিণ আফ্রিকায়ও বৈদ্যুতিক অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

এবারের সৌরঝড় দীর্ঘায়িত হলেও স্যাটেলাইট অপারেটর, এয়ারলাইন্স এবং পাওয়ার গ্রিডে সম্ভাব্য ব্যাঘাতের আশঙ্কা করা হচ্ছে। নাসা বলছে, মহাকাশযানও উচ্চ মাত্রার বিকিরণের ঝুঁকিতে রয়েছে।

Stay ahead of the curve with the latest news and insights on technology, mobile computing, laptops, and outer space. Our team of expert writers brings you in-depth analysis of the latest trends and breakthroughs, along with hands-on reviews of the newest gadgets and devices. From the latest smartphones to the mysteries of the cosmos, we've got you covered.