সেই ২৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি আপাতত বহাল!

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতির মামলায় হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের ওপর সাময়িক স্থগিতাদেশ দিয়েছেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। তাই আপাতত চাকরি যাচ্ছে না সেই ২৬ হাজার শিক্ষকের। সেই সঙ্গে তাদের বেতন-ভাতা ফেরত দেওয়ার আদেশের ওপরও স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে। এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে আগামী ১৬ জুলাই।

ভারতের সুপ্রিম কোর্ট

মামলার বিবরণীর তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬ সালের এসএসসি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছিল। এর জেরে ওই দফায় নিয়োগ পাওয়া পুরো প্যানেলটিই বাতিল করে দেন কলকাতা হাইকোর্ট। এর ফলে চাকরিহারা হন ২৫ হাজার ৭৫৩ জন শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী। একইসঙ্গে নিয়োগের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত পাওয়া সব বেতন-ভাতা ১২ শতাংশ সুদসহ ফিরিয়ে দেওয়ারও আদেশ দেওয়া হয়। মঙ্গলবার (৭ মে) সুপ্রিম কোর্ট এই রায় স্থগিত করেন। একই সঙ্গে পশ্চিম মন্ত্রিসভার বিরুদ্ধে ‘সুপারনিউমেরারি পদ তৈরি’ ইস্যুতে যে তদন্ত চলছিল, সেটিতেও স্থগিতাদেশ দেন সুপ্রিম কোর্ট।

ভারতের সর্বোচ্চ আদালত আগামী ১৬ জুলাই এই মামলার পরবর্তী শুনানির ধার্য করেছেন। ততদিন পর্যন্ত এই চাকরি বাতিল বা বেতন ফেরানোর রায়ে স্থগিতাদেশ বহাল থাকবে। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, যোগ্য ও অযোগ্যদের আলাদা করা সম্ভব হলে পুরো প্যানেল বাতিলের দরকার হবে না। তাই কীভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত ওই শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের মধ্যে যোগ্য ও অযোগ্যদের আলাদা করা যাবে, তা ঠিক করতে হবে।

পর্যবেক্ষণে আরও বলা হয়, পরবর্তী সময়ে চাকরি বহাল থাকুক আর নাই থাকুক, ওই সময়ে নিয়োগ পাওয়া ২৫ হাজার ৭৫৩ জন শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর সবাইকে মুচলেকা দিতে হবে। আর যাচাই-বাছাইয়ের পর যারা অযোগ্য বিবেচিত হবেন বা যাদের নিয়োগ অবৈধ বলে প্রমাণিত হবে, তাদের চাকরি বাতিল হবে এবং বেতন-ভাতা ফেরত দিতে হবে।

একই সঙ্গে সুপ্রিম কোর্ট এ-ও জানিয়েছে যে, পশ্চিমবঙ্গ হাইকোর্টের রায়ে স্থগিতাদেশ দেওয়া হলেও সে রায়ে কোনো ভুল ছিল না। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ বলেন, ‘হাইকোর্টের রায় সম্পূর্ণ ঠিক ও সন্দেহাতীত। নিয়োগ দুর্নীতির কারণে চাকরি খারিজের যে সিদ্ধান্ত হাইকোর্ট নিয়েছিল, তা বৈধ ও যথার্থ।

তবে এরপরও স্থগিতাদেশের ব্যাখ্যা দিয়ে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চ জানান, আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে যোগ্য-অযোগ্য বাছাই করা। এটি যদি সম্ভব হয়, তাহলে যারা আসল অভিযুক্ত কেবল তাদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়া হোক।