মার্কিন সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করতে যাচ্ছে টিকটক!

বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয় ভিডিও শেয়ারিং অ্যাপ টিকটক আইন করে পুরো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ করতে যাচ্ছে দেশটির সরকার। এমন পদক্ষেপের বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছে টিকটকের মালিক চীনা কোম্পানি বাইটড্যান্স। খবর আরটি।

টিকটক

বাইটড্যান্স কোম্পানির মার্কিন শাখার কর্মকর্তা এবং টিকটকের পাবলিক পলিসি বিভাগের প্রধান মাইকেল বেকারম্যান সোমবার (২২ এপ্রিল) বলেন, টিকটক নিষিদ্ধ করতে যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসে রিপাবলিকান পার্টি ও ডেমোক্র্যাট দল একসঙ্গে হাঁটছে। এটি আমাদের জন্য খুবই অনাকাঙ্ক্ষিত বিষয়। তবে যদি যুক্তরাষ্ট্রে এই আইন চালু হয়, তাহলে যেদিন মার্কিন প্রেসিডেন্ট এ আইনে স্বাক্ষর করবেন, সেদিনই আমরা এর বিরুদ্ধে মামলা চালানোর কার্যক্রম শুরু করব।

চীনা কোম্পানি বাইটড্যান্স ২০১৬ সালে কন্টেন্ট শেয়ারিং অ্যাপ টিকটক বাজারে আনে। প্রথম থেকেই এটি ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের কাছে বিপুল জনপ্রিয়তা লাভ করে। ছয় বছরের মাথায় ২০২২ সালে বিশ্বজুড়ে এর ব্যবহারকারীদের সংখ্যা ৭৫ কোটি ছাড়িয়ে যায়।

মার্কিন সরকার বিভিন্ন সময়ে টিকটক নিষিদ্ধ করতে চাইলেও দেশটির সাধারণ জনগণের মধ্যেও টিকটক খুব জনপ্রিয়। বিভিন্ন জরিপে দেখা গেছে, বর্তমানে দেশটিতে টিকটক ব্যবহারকারীদের সংখ্যা ১৭ কোটি ছাড়িয়ে গেছে, যাদের অধিকাংশই তরুণ-তরুণী।

বাইডেন সই করলেই টিকটক নিষিদ্ধের বিল কার্যকর হবে

২০২১ সালে টিকটকের বিরুদ্ধে নাগরিকদের স্পর্শকাতর ব্যক্তিগত তথ্য চুরির অভিযোগ আনে মার্কিন কর্তৃপক্ষ। একই বছরে মার্কিন সেনা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অ্যাপটি ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। পরের বছর ২০২২ সালে দেশটির অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীকেও একই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। এবার পুরো দেশজুড়ে সবার জন্য টিকটক নিষিদ্ধ করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।

সম্প্রতি মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে টিকটক নিষিদ্ধের প্রস্তাব ৩৬০-৫০ ভোটে পাস হয়। এখন প্রেসিডেন্ট বাইডেন সই করলেই তা আইনে পরিণত হবে।

বেকারম্যান বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে আইনটি পাস হলে তার ফলাফল হবে অত্যন্ত ভয়াবহ। কারণ যুক্তরাষ্ট্রের ১৭ কোটি ব্যবহারকারীর অনেকেই এটিকে আয়ের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করেন। তাদের সংখ্যা কম করে হলেও ৭০ লাখ। টিকটক বন্ধ করলে তাদের আয়ের বড় একটি পথ বন্ধ হয়ে যাবে। তাই টিকটক বন্ধের আইন হলে আমাদের আদালতে যাওয়ার কোনো বিকল্প থাকবে না।

মার্কিন প্রশাসন টিকটকের বিরুদ্ধে তথ্য চুরির অভিযোগ আনলেও আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষকদের কেউ কেউ বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে চীনা অ্যাপ টিকটকের ব্যাপক জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতা দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে মার্কিন রাজনীতিবিদ ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কোম্পানিগুলোর জন্য। তারই জেরে টিকটক বাতিলে আইন পর্যন্ত হতে যাচ্ছে দেশটিতে।