মালদ্বীপ: প্রেসিডেন্ট মুইজ্জুর দলের বিশাল জয়

মালদ্বীপের পার্লামেন্ট নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে জয়ী হয়েছে প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জুর দল পিপলস ন্যাশনাল কংগ্রেস (পিএনসি)। রোববার (২১ এপ্রিল) সকাল থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। প্রায় ৫২ শতাংশ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। রাতেই এ নির্বাচনের ফল ঘোষণা করা হয়। খবর আল জাজিরা ও রয়টার্স

ভোট দিচ্ছেন প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু

নির্বাচনের ঘোষিত ফলে দেখা গেছে, ৯৩টি আসনের মধ্যে ৬৮টিতে জয় পেয়ে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করেছে মুইজ্জুর দল পিএনসি। সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় আসনের চেয়ে এ সংখ্যাটি অনেক বেশি। দ্বিতীয় স্থানে থাকা মালদিভিয়ান ডেমোক্রেটিক পার্টি পেয়েছে ১০টি আসন। এছাড়া মালদিভস ডেভেলপমেন্ট অ্যালায়েন্স দুটি, জমহুরি পার্টি একটি, মালদিভস ন্যাশনাল পার্টি একটি করে আসন লাভ করে। বাকি ১১টি আসন পেয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।

মালদ্বীপের নির্বাচনে মোট ভোটার ছিলেন দুই লাখ ৮৪ হাজার ৬৬৩ জন। এর মধ্যে ভোট দিয়েছেন এক লাখ ৪৭ হাজার ৯০২ জন। এর মধ্যে দুই হাজার ৪৮৫টি ভোট বাতিল গণ্য হয়েছে।

মালদ্বীপের যে কোনো নির্বাচনে ভারত ও চীনের প্রভাব থাকে স্পষ্ট

মালদ্বীপ একটি স্বাধীন দেশ হলেও এর নির্বাচন ব্যবস্থায় ভারত ও চীনের প্রবল প্রভাব দেখা যায়। গত বছরের সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হয়েছিলেন ভারতবিরোধী হিসেবে পরিচিত মোহাম্মদ মুইজ্জু। কিন্তু পার্লামেন্ট পিপলস মজলিসে মুইজ্জুর দল পিএনসি ও তাদের শরিকদের আসন ছিল মাত্র আটটি।

ফলে মুইজ্জু প্রেসিডেন্ট হলেও পার্লামেন্টের নিয়ন্ত্রণ ছিল তার পূর্বসূরি ভারতপন্থী ইব্রাহিম মোহাম্মদ সালেহর দল মালদিভিয়ান ডেমোক্রেটিক পার্টির (এমডিপি) নিয়ন্ত্রণে। এ কারণে প্রেসিডেন্ট হওয়া সত্ত্বেও মুইজ্জু তার কাজে বারবার বাধা পাচ্ছিলেন। এ অবস্থায় এবারের নির্বাচনকে মোহাম্মদ মুইজ্জুর জন্য কঠিন পরীক্ষা বলে মনে করা হচ্ছিল।

মুইজ্জু প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকেই মালদ্বীপে ভারতবিরোধী মনোভাব তীব্রভাবে পরিলক্ষিত হয়। যে কোনো কাজে ‘ভারতই প্রথম’ এ রীতি ভেঙে দেন মুইজ্জু। যোগাযোগ বাড়িয়ে দেন চীনের সঙ্গে। এমনকি ভারতের প্রধানমন্ত্রীর লাক্ষাদ্বীপ ভ্রমণ ইস্যুতে মালদ্বীপ ও ভারতের মধ্যকার সম্পর্কে বড় ধরনের উত্তেজনা দেখা দেয়।

বিষয়টি নিয়ে পর্যটন খাতে বড় চাপ পড়ার আশঙ্কা থাকলেও নতি স্বীকার করেনি মালদ্বীপ। উল্টো ভারতীয় সেনাদের মালদ্বীপ ছাড়ার আলটিমেটাম দিয়ে বসেন প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু। সব মিলিয়ে প্রভাবশালী প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে এক ধরনের চরম বৈরিতা চলছে মালদ্বীপের বর্তমান প্রশাসনের। এমন সময়েই অনুষ্ঠিত হয় পার্লামেন্ট নির্বাচন। যাতে বড় ধরনের জয় পেলেন প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু।