ইসমাইল হানিয়ার পুত্রবধূ: আরবদের কাছ থেকে কোনো আশা করবেন না

আরবদের কাছে কোনো সাহায্য চাই না। কোনো কিছু আশাও করি না। কেউ সাহায্যের জন্য আরবদের প্রতি আহ্বানও জানাবেন না। কারণ তারা মৃত। ইসরায়েলি হামলায় নিহত স্বামীর দেহ ছুঁয়ে এসব কথা বলেন হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়ার পুত্রবধূ ও হাজেম হানিয়ার স্ত্রী। খবর মুসলিম মিরর।

ইসমাইল হানিয়ার পুত্রবধূ ও তার তিন ছেলে

গত বুধবার (১০ এপ্রিল) ফিলিস্তিনে পবিত্র ঈদুল ফিতর পালিত হয়। সেদিন পরিবারের বাকি সদস্যদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করতে ইসমাইল হানিয়ার তিন সন্তান ও তাদের ছেলে মেয়ে গাড়িতে করে শাতি শরণার্থী শিবিরে যাচ্ছিলেন। সেই গাড়িতেই ড্রোন হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। এতে ইসমাইল হানিয়ার ছেলে মোহাম্মদ হানিয়া; হাজেম হানিয়া এবং তার মেয়ে আমাল; আমির হানিয়া এবং তার ছেলে খালেদ ও মেয়ে রাজান ঘটনাস্থলেই নিহত হন। এ হামলায় আরও কয়েকজন আহত হয়।

এ হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ইসরায়েলি বাহিনীর তীব্র সমালোচনা করে ইসমাইল হানিয়া বলেন, দখলদাররা মনে করে তারা আমাদের ছেলেদের হত্যা করলে আমরা আমাদের অবস্থান পরিবর্তন করে ফেলব। তাদের এ ধারণা ভুল। আমার ছেলেদের রক্ত গাজার শহিদ জনগণের রক্তের চেয়ে বেশি মূল্যবান নয়। কারণ তারা সবাই আমার ছেলে। আমাদের ওপর আরও হামলা চললেও আমরা আল-কুদস ও আল-আকসাকে মুক্ত করা থেকে পিছপা হব না। আমাদের যাত্রা আমরা অব্যাহত রাখব।

ইসমাইল হানিয়া

হানিয়া আরও বলেন, হামাস কোনোভাবেই তাদের দাবিগুলো থেকে সরে আসবে না। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে স্থায়ী যুদ্ধবিরতি ও বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের তাদের বাড়িতে প্রত্যাবর্তন। তারা যদি মনে করে আমাদের সন্তানদের ওপর হামলা চালালে আমরা অবস্থান পাল্টে ফেলব, তাহলে তারা ভুলের মধ্যে আছে। গত কয়েক মাসে তার পরিবারের ৬০ জনকে ইসরায়েলি বাহিনী হত্যা করেছে বলেও জানান তিনি।

এদিকে ছয় মাসের বেশি সময় ধরে গাজায় হামলা চালালেও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত সে অর্থে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি মুসলিম প্রধান দেশগুলো। নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে চলেছে আরব বিশ্বও। ইসমাইল হানিয়ার সন্তানদের দাফন-কাফনের সময় সেই আক্ষেপই তুলে ধরলেন নিহত হাজেম হানিয়ার স্ত্রী।

এদিন জানাজার পূর্বে তিনি বলেন, ছয়মাস ধরে গাজায় অব্যাহতভাবে গণহত্যা চালানো হচ্ছে। কিন্তু আরব দেশগুলো গাজার মানুষদের সমর্থনে এগিয়ে আসেনি। এই আরবদের কাছে কারও সাহায্য চাওয়ার দরকার নেই। একসময় তাদেরই আমাদের দরকার হবে। আমাদের জন্য কখনও ওদের প্রয়োজন পড়বে না।

তিনি এ সময় আরও বলেন, ইসরায়েলিরা ব্যর্থ হয়েছে। কারণ হাজিম বেঁচে আছে। সে এই দুনিয়া থেকে বিদায় নিলেও ওই দুনিয়ায় নতুন করে বাঁচবে। সেখানে তাকে কোনো দুঃখ স্পর্শ করতে পারবে না। সেখানেই সে ভালো থাকবে।