ধনকুবের ট্রুং মাই ল্যানকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত

ভিয়েতনামের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ব্যাংক জালিয়াতির মামলায় রিয়েল এস্টেট টাইকুন ট্রুং মাই ল্যানকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। অর্থ আত্মসাৎ, ঘুষ ও ব্যাংকিং নিয়ম লঙ্ঘনের দায়ে বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) ৬৭ বছর বয়সী ল্যানকে এ সাজা দেওয়া হয়। খবর আল জাজিরা, বিবিসি ও রয়টার্স।

আদালতে মাই ল্যান

মাই ল্যান ছিলেন ভিয়েতনামের নামী রিয়েল এস্টেট সংস্থা ‘ভ্যান থিন পাট হোল্ডিং গ্রুপ’-এর চেয়ারপার্সন। তার বিরুদ্ধে ১২ দশমিক পাঁচ বিলিয়ন ডলার (৩০৪ ট্রিলিয়ন ডং) আর্থিক জালিয়াতির অভিযোগ আনা হয়েছে।

মামলার বিবরণীতে বলা হয়, ২০১১ সালে মাই ল্যান ছিলেন হো চি মিন সিটির একজন নামকরা ব্যবসায়ী। ওই সময় তিনটি ছোটখাটো ব্যাংক মিলে ভিয়েতনামের বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক ‘সায়গন কমার্শিয়াল ব্যাংক’ গঠন করে। আর তাতে বড় ভূমিকা রাখেন মাই ল্যান।

ভ্যান থিন পাট হোল্ডিং গ্রুপ

ভিয়েতনামের আইন অনুযায়ী, কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে কারো পাঁচ শতাংশের বেশি শেয়ার থাকলে তাকে নিষিদ্ধ করা হয়। কিন্তু সে আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে অনেকগুলো শেল কোম্পানি ও তার প্রক্সিদের মাধ্যমে সাইগন কমার্শিয়ালের ৯০ শতাংশেরও বেশি শেয়ারের মালিক হয়েছিলেন ল্যান।

এতে তিনি ওই ব্যাংকের একচ্ছত্র নেতৃত্বের সুবিধা ভোগ করেন। সেই ক্ষমতার সুযোগ নিয়ে তিনি প্রথমে তার মনোনীত লোকদেরকে ব্যাংকটির ব্যবস্থাপক হিসেবে নিয়োগ দেন। এরপর তাদের মাধ্যমে তার নিয়ন্ত্রিত শেল কোম্পানিগুলোকে শত শত ঋণ প্রস্তাব অনুমোদন করার ব্যবস্থা করেছেন। জানা গেছে, ব্যাংকটির দেওয়া ঋণের ৯৩ শতাংশই নিয়েছেন মাই ল্যান।

মাই ল্যানের বিচার শুরু হয়েছিল গত বছরের ৫ আগস্ট। এ মামলায় ২ হাজার ৭০০ মানুষের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। মামলা পরিচালনায় ছিলেন ১০ জন রাষ্ট্রীয় কৌঁসুলি এবং প্রায় ২০০ আইনজীবী। মামলায় মাই ল্যানের পাশাপাশি এ কেলেঙ্কারিতে সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে আরও ৮৫ জনের। দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় তাদের সবাইকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়েছে। চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অন্যদের ৩-২০ বছর পর্যন্ত বিভিন্ন মেয়াদে স্থগিত কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। মাই ল্যানের স্বামী এরিক চু ও ভাতিজিকে যথাক্রমে ৯ ও ১৭ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

এদিকে মাই ল্যান সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তার পরিবারের এক সদস্য জানিয়েছেন, আমরা শেষ পর্যন্ত আমাদের লড়াই চালিয়ে যাব।