মালেরকোটলায় রমজান: সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য দৃষ্টান্ত

রমজান মাসে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অনন্য দৃষ্টান্ত তুলে ধরেছে ভারতের পাঞ্জাবের মালেরকোটলা জেলা। এখানে মুসলিমদের ইফতারে নিমন্ত্রণ পাচ্ছেন হিন্দু-শিখ-খ্রিষ্টানসহ অন্য সব ধর্মের মানুষ। আবার মুসলমানদের জন্য ইফতারের আয়োজন করা হচ্ছে হিন্দুদের মন্দিরে ও শিখদের গুরুদুয়ারায়।

ইফতারে মুসলমান, শিখ ও হিন্দুদের সমান অংশগ্রহণ 

১৪৫৪ সালে প্রতিষ্ঠিত (যার নেপথ্যে ছিলেন আফগানিস্তানের একজন শাসক শেখ সদরউদ্দিন-ই-জাহান) এই জেলায় সুদীর্ঘকাল ধরে হিংসা-হানাহানির কোনো ইতিহাস নেই। রাজনৈতিক ক্রান্তিকালেও এই এলাকায় দেখা গেছে সম্প্রীতির সুবাতাস।

এ বছরও রমজানে মালেরকোটলায় সকল ধর্মের মানুষ একসঙ্গে ইফতারে অংশগ্রহণ করছেন। হিন্দুদের মন্দির ও শিখদের গুরুদুয়ারায় মুসলমানদের জন্য বিশেষ ইফতারের আয়োজন করা হয়েছে। অনেক গুরুদুয়ারায় রমজান মাসের প্রায় সব দিনই ইফতার ও নামাজের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

সর্বভারতীয় ব্রাহ্মণ ফ্রন্টের সভাপতি মহন্ত স্বরূপ বিহারী শর্মা বলেন, ‘আমরা যুগ যুগ ধরে হিন্দু, মুসলমান, শিখ, খ্রিষ্টানরা মালেরকোটলায় একসঙ্গে বাস করছি। আমরা কখনও রাজনীতিবিদদের সাম্প্রদায়িক আদর্শকে গুরুত্ব দিই না। এ ধরনের কোনো প্রচারও করতে দিইনি। আমরা মনে করি, কোনো ধর্মই ঘৃণা শেখায় না। তাই আমাদের উচিত সব উৎসব একসঙ্গে পালন করা।’

মুসলমানদের ইফতার প্রদান করছেন শিখ সম্প্রদায়ের লোকজন

আহমেদগড়ের শ্রী রাম মন্দির কমিটির চেয়ারম্যান দীপক শর্মা বলেন, ‘আগামী সপ্তাহে আমাদের মন্দিরে ইফতারের আয়োজন করা হবে। আমাদের কমিটির সদস্যরা ঈদুল ফিতরেও অংশগ্রহণ করবেন।’

স্থানীয় প্রভাবশালী নেতা নাসির খান বলেন, ‘এখানে হিন্দু ও শিখরাও মুসলমানদের সঙ্গে নামাজ পড়েছেন। এমন দৃশ্য দেশের আর কোথাও খুঁজে পাওয়া কঠিন।’

শিরোমণি আকালি দলের সভাপতি অমর সিং সারা বলেন, ‘পুরো দেশে ধর্মের নামে মানুষকে বোকা বানানো হচ্ছে। এ কারণেই রাজনীতিবিদদের কাছ থেকে দূরে থাকি।’

স্থানীয়রা জানান, মালেরকোটলা ঐতিহাসিকভাবেই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জন্য বিখ্যাত। ১৯৪৭ সালের দেশভাগের সময়ও এখানে শান্তি বিরাজমান ছিল।