বিশ্ব ফুটবলের ইতিহাসে সবচেয়ে বাজে দল কোনটি? শিরোনাম দেখে হয়ত কিছুটা আঁচ করতে পারছেন পাঠকেরা। হ্যাঁ, দলটার নাম সান মারিনো। আন্তর্জাতিক ফুটবলে এটা ইউরোপ মহাদেশের একটি দল। বিশ্ব মানচিত্রের পঞ্চম ছোট দেশ সান মারিনো। দলটি ইউরোপের শীর্ষস্থানীয় প্রতিযোগিতায় নিয়মিতই অংশ নিয়ে থাকে।

euro qualifier san marinoআন্তর্জাতিক ফুটবলে ৩৮ বছর খেলে কেবল একটি জয় পেয়েছে সান মারিনো

সাধারণত মাঝারি মানের কোনো দলের বিপক্ষে মুখোমুখি হলেই নাজুক অবস্থা হয়ে যায় সান মারিনোর। আর যদি কোনো জায়ান্টের সামনে পড়ে তাহলে তো হতশ্রী চেহারা নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়। আট-দশ গোল হজম করা দলটার জন্য সাধারণ ব্যাপার। ২০০৬ সালে তো ইউরোপের পাওয়ার হাউজ জার্মানির বিপক্ষে ১৩-০ গোলে চূর্ণ হয়েছিল দলটি।

আন্তর্জাতিক ফুটবলে সান মারিনোর অবিষেক হয়েছিল ১৯৮৬ সালে। ৩৮ বছর আগে ডিয়েগো ম্যারাডোনার বিশ্বজয়ের ঘটনা অনেকটাই আড়াল করে দিয়েছিল পুঁচকে দলটির স্বপ্নযাত্রা। তবে ফুটবলে পরিচিতির জন্য ১৯৯০ সাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয় লা সেরেনিসিমাদের। বর্তমানে ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে ২১০ নম্বরে আছে সান মারিনো।

র‌্যাঙ্কিংয়ে এই দলটার নিচে আর কেউ নেই। অবশ্য ইরিট্রেয়া র‌্যাঙ্কিংয়ে প্রবেশের অপেক্ষায় আছে। র‌্যাঙ্কিংয়ের এই অবস্থানই বলে দিচ্ছে ফুটবলে সান মারিনোর অবস্থান কোথায়। ১৯৯০ সাল থেকে এই পর্যন্ত ২০১টি ম্যাচ খেলেছে তারা। যেখানে তাদের জয় কেবল একটিতে। সেটিও ২০ বছর আগে! ঘরের মাঠে লিখটেনস্টেইনের বিপক্ষে ১-০ গোলে জিতেছিল সান মারিনো।

গত ৩৪ বছরে দলটা হেরেছে ১৯২টি ম্যাচ। ড্র করেছে আটটি। এসব ড্র সান মারিনোর কাছে জয়ের সমতুল্য। অবশ্য জয় তো দূরের কথা, সান মারিনোর গোল করতে পারাটাও একটা বড় ঘটনা। কোনো ম্যাচে যেদিন সান মারিনো গোল করে সেদিন দেশটিতে উৎসব লেগে যায়। ড্র করলে টানা কয়েকদিন উৎসব চলতেই থাকে ইউরোপের দেশটিতে।

২০০৪ সালে প্রথম ও শেষবারের মতো সান মারিনো যে ম্যাচটা জিতেছিল সেটি প্রায় এক মাস ধরে উদযাপন করেছে তারা! দলটির অধিনায়ক মাত্তেও ভিটাওলি। ১৭ বছর আগে জাতীয় দলের জার্সিতে অভিষেক হয়েছিল তার। সর্বোচ্চ ৯০টি ম্যাচ খেলার রেকর্ডটা ভিটাওলির দখলে। স্রেফ একটা জয়ের জন্য তীর্থের কাক হয়ে বসে আছেন তিনি।

ভিটাওলি অপেক্ষা করছেন বছরের পর বছর। পুরো ক্যারিয়ারে জাতীয় দলের হয়ে কেবল একটি গোল করেছেন অধিনায়ক। সেটিও নয় বছর আগে ইউরো বাছাইয়ে; লিথুয়ানিয়ার বিপক্ষে। সেটা আবার ছিল অ্যাওয়ে ম্যাচে ১৪ বছরের মধ্যে দলটির প্রথম গোল! সান মারিনোর সামনে ক্যারিবিয়ান দল সেন্ট কিটস অ্যান্ড নেভিসের দুটি প্রদর্শনী ম্যাচ আছে।

ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে ১৪৭ নাম্বারে থাকা এই দলটির বিপক্ষে জয়ের স্বপ্ন দেখছে সান মারিনো। সেটি অবশ্য অসম্ভব নয়। তাদের আশা দেখাচ্ছে গত বছরের অক্টোবরে ডেনমার্কের বিপক্ষে অবিশ্বাস্য লড়াকু পারফরম্যান্সটা। সেই ম্যাচে ডেনিশদের কাছে ২-১ গোলে হেরেছিল দলটি। যা দেশটির ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম সেরা ম্যাচ হয়ে আছে।

সান মারিনোর জনসংখ্যা প্রায় ৩৩ হাজার। দেশটিকে ঘিরে রেখেছে ইউরোপের কুলিন দেশ ইতালি। সান মারিনোর আয়তন ৬১ বর্গ কিলোমিটার। যা ঢাকা শহরের পাঁচ ভাগের একভাগ! আয়তন যেমনই হোক না কেন, আর্থিকভাবে বেশ সমৃদ্ধ তারা। তবে দেশটিকে বিশ্ববাসী চিনতে পেরেছে এই ফুটবলের কারণেই। সেটিও খুব নিমর্মভাবে।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.