ন্যাটোর ৩২তম সদস্য হিসেবে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু সুইডেনের

যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্য হিসেবে যাত্রা শুরু হলো সুইডেনের। জোটটির ৩২তম সদস্য হিসেবে বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে যোগদান করে সুইডেন। ইউক্রেনে রুশ হামলার পর সুইডেন হচ্ছে দ্বিতীয় দেশ, যারা ন্যাটো জোটে যোগ দিলো। খবর বিবিসি ও সিএনএনের।

ন্যাটোতে যোগদানের নথি মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিঙ্কেনের হাতে তুলে দেন সুইডিশ প্রধানমন্ত্রী ক্রিস্টারসন

সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী উলফ ক্রিস্টারসন বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটন ডিসিতে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরে গিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ন্যাটোতে যোগদানের নথি হস্তান্তর করেন। এর মধ্য দিয়ে ন্যাটো জোটের সদস্য হওয়ার চূড়ান্ত ধাপ সম্পন্ন হয়েছে সুইডেনের।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন নথিগুলো গ্রহণ করেন। তিনি এ সময় বলেন, সুইডেনের ন্যাটো সদস্য পদ চূড়ান্ত হওয়া জোটের অন্যান্য সদস্যদের প্রায় দুই বছরের অক্লান্ত কূটনীতির ফসল। ব্লিঙ্কেন নথিগুলো স্টেট ডিপার্টমেন্টের একটি ভল্টে রাখেন। ভল্টটি ন্যাটো জোটের নথি বা চুক্তি সংরক্ষণাগার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

ন্যাটোর নিয়ম অনুযায়ী, কোনো দেশকে জোটের নতুন সদস্য হতে হলে পুরনো সদস্যদের সবার অনুমোদন নিশ্চিত করতে হয়। এই অনুমোদন লাভের জন্য দুই বছরের বেশি সময় ধরে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল সুইডেন।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক হামলার পর সুইডেন এবং নর্ডিক প্রতিবেশী ফিনল্যান্ড মস্কোর হুমকির বিষয়ে সতর্ক হয়ে ওঠে। তারা আবেদন করে ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার। কেননা, ন্যাটোর সদস্য কোনো দেশ হামলার শিকার হলে জোটের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সব সদস্যদেশ তার পাশে দাঁড়াবে।

ন্যাটোর সদস্যপদ পেতে সুইডেন জটিলতার সম্মুখিন হলেও ২০২৩ সালের এপ্রিলে জোটটিতে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দিতে সমর্থ হয় ফিনল্যান্ড। রাশিয়ার সঙ্গে ১৩০০ কিলোমিটারের সীমান্ত থাকা ফিনরল্যান্ড হয় ন্যাটোর ৩১তম সদস্য।

এদিকে ন্যাটোতে যোগদানের আবেদনের পর সুইডেন জোটের দুই সদস্যদেশ তুরস্ক ও হাঙ্গেরির কাছ থেকে বাধার সম্মুখিন হয়। তুরস্ক প্রথমে সুইডেনকে নিতে রাজি হয়নি। এরদোয়ান সরকারের বক্তব্য ছিল, স্টকহোম বরাবরই কুর্দি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। তবে চলতি বছর জানুয়ারিতে আপত্তি তুলে নিয়ে সমর্থন দেয় আঙ্কারা।

তুরস্ক ছাড়াও ন্যাটোর সদস্যপদ পেতে সুইডেনের বাধা ছিল হাঙ্গেরি। হাঙ্গেরীয় প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান অভিযোগ তুলেন, হাঙ্গেরির প্রতি বৈরি মনোভাব পোষণ করে সুইডেন। তবে শেষ পর্যন্ত কূটনৈতিক তৎপরতায় সুইডেন-হাঙ্গেরির মৈত্রী তৈরি হয়। সুইডেনকে ন্যাটোতে নিতে সম্মত হয় হাঙ্গেরিও।

অবশেষে ২০০ বছরের অসামরিক পক্ষপাতিত্ব নীতি থেকে বেরিয়ে এসে ন্যাটো সামরিক জোটের অংশ হলো সুইডেন।