ক্রুস-মডরিচদের বাস্তবতা বোঝালেন রিয়াল কোচ

‘এসেছে নতুন শিশু, তাকে ছেড়ে দিতে হবে স্থান; জীর্ণ পৃথিবীতে ব্যর্থ, মৃত আর ধ্বংসস্তুপ-পিঠে চলে যেতে হবে আমাদের।’ সুকান্ত ভট্টাচার্যের বিখ্যাত এই পঙক্তিটি হয়ত শোনেননি লুকা মডরিচ, টনি ক্রুস কিংবা ন্যাচো ফার্নান্দেজ। কিন্তু রিয়াল মাদ্রিদে এই ত্রয়ীর বাস্তবতা অনেকটা সুকান্তর সেই বিখ্যাত ‘ছাড়পত্র’ কবিতার পঙক্তির মতোই!

এই মৌসুমে রিয়াল মাদ্রিদের সঙ্গে লুকা মডরিচ ও টনি ক্রুসের চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে

ইউরোপিয়ান ক্লাব ফুটবলের চলতি মৌসুমের মাঝপথ পাড়ি দেওয়ার পর প্রশ্ন উঠছে রিয়ালে তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে। স্প্যানিশ জায়ান্টরা তাদের নতুন চুক্তির প্রস্তাবনা পাঠায়নি। মডরিচ, ক্রুস কিংবা ন্যাচোও নিজ থেকে কিছু বলছেন না। তবে রোববার রাতে সেভিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ শেষে রিয়াল মাদ্রিদ প্রধান কোচ কার্লো আনচেলত্তির কথায় ভবিষ্যতের কিছুটা আঁচ করা যাচ্ছে।

আগামী ৩০ জুন শেষ হচ্ছে রিয়ালের সঙ্গে মডরিচ, ক্রুস ও ন্যাচোর চুক্তি। চুক্তি নবায়নে আগ্রহ নেই স্প্যানিশ ক্লাবটির। তাই বলে এই ত্রয়ীর প্রতি সম্মানের ঘাটতি নেই ক্লাবের। কিন্তু পরিস্থিতি এখন কঠিন। আনচেলত্তি সেই বাস্তবতা বোঝানোর চেষ্টা করলেন শিষ্যদের, ‘আমি কীভাবে মডরিচকে সহায়তা করতে পারি? এটা খুব কঠিন। আমি এটার অর্থ জানি।’

সেই অর্থটা কী? বিস্তারিত ব্যাখ্যায় আনচেলত্তি বলেছেন, ‘আমি বুঝতে পারছি লুকার (মডরিচ) মন খারাপ। কিন্তু এখানেই তার শেষ নয়। পুরো বিশ্ব এটা নিয়ে ভাবছে…কিন্তু সে ভাবছে না। কারণ, তার এখনও পা আছে, শক্তি আছে। তার ক্যারিয়ার এখনও শেষ হয়ে যায়নি। আপনি তার পারফরম্যান্স দেখুন। এটা (ভবিষ্যৎ) এখন তার হাতে। তার ওপর নির্ভর করছে। ক্রুস এবং ন্যাচোরও তাই।’

যাদের ছেড়ে দিতে চাচ্ছে রিয়াল তাদের প্রয়োজনীয়তা কিন্তু এখনও ফুরিয়ে যায়নি। এই তো স্প্যানিশ লা লিগায় সবশেষ ম্যাচে পয়েন্ট হারানোর ঝুঁকিতে পড়েছিল রিয়াল মাদ্রিদ। ঘরের মাঠে গোল করতে পারছিল না তারা। অবশেষে বেঞ্চ ছেড়ে উঠে আসার সাত মিনিটের মধ্যে ম্যাচের একমাত্র ও জয়সূচক গোল করেন মডরিচ। ম্যাচের বয়স তখন ৮১ মিনিট।

৩৮ বছর বয়সী মডরিচের এই পারফরম্যান্সে দারুণ খুশি রিয়াল মাদ্রিদ কোচ আনচেলত্তি। কিন্তু শিষ্যকে চলে যেতে হবে এটা ভেবেই মন খারাপ ইতালিয়ান কোচের। তার ভাষায়, ‘সে এখনও শীর্ষ পর্যায়ে খেলছে। আমি তাকে খুব ভালোবাসি। আমি জানি না সে বদলি হিসেবে এখানে (রিয়ালে) থাকতে চাইবে কি না। কিন্তু আমি বলব তার প্রতিটি মিনিটই মূল্যবান।’