জাতিসংঘ: গাজার নাসের হাসপাতাল মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে

দক্ষিণ গাজা উপত্যকার খান ইউনিস শহরের নাসের হাসপাতাল এখন আর রোগীদের নিরাময়ের কোনো জায়গা নয়, বরং সেটি একটি মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে। জাতিসংঘের অফিস ফর দ্য কোঅর্ডিনেশন অব হিউম্যানিটারিয়ান অ্যাফেয়ার্সের (ওসিএইচএ) একজন কর্মকর্তা মঙ্গলবার হাসপাতালটি সম্পর্কে এ মন্তব্য করেন। খবর আনাদোলু।

নাসের হাসপাতাল

ওসিএইচএর গাজা শাখার মানবিক বিষয়ক সিনিয়র অফিসার জনাথন হুইটাল বলেন, হাসপাতালটির পরিস্থিতি খুবই ভয়ানক। করিডোরে মরদেহ পড়ে আছে। রোগীরাও থাকছে অস্বাভাবিক একটি পরিবেশের মধ্যে। সব মিলিয়ে এটি এখন আর কারো জন্য নিরাময় কেন্দ্র নয়, বরং মৃত্যুপুরী হিসেবেই গণ্য হচ্ছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট করা একটি ভিডিওতে হুইটাল বলেন, তিনি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এবং প্যালেস্টাইন রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির দলের সাথে হাসপাতালে আটকে পড়া গুরুতর আহত রোগীদের সরিয়ে নেওয়ার মিশন পরিচালনা করেছেন।

জনাথন হুইটাল

তিনি জানান, তারা এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে নাসের হাসপাতালে জ্বালানি, পানি ও চিকিৎসাসামগ্রী সরবরাহের চেষ্টা চালাচ্ছিলেন। শেষ পর্যন্ত তারা চারটি অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে হাসপাতালে পৌঁছেন। কিন্তু এটা প্রয়োজনের তুলনায় কিছুই নয়।

তিনি বলেন, আমরা খাদ্য, পানীয় ও চিকিৎসাসামগ্রী গাজায় পৌঁছানোর চেষ্টা করেছি, আমাদেরকে ধারাবাহিকভাবে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। অথচ উপযুক্ত ট্রিটমেন্টের অভাবে সেখানকার হাসপাতালগুলোতে রোগীরা মারা যাচ্ছে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক সপ্তাহের দীর্ঘ অবরোধের পর গত সপ্তাহে নাসের হাসপাতালে অভিযান চালায়। তাদের ভারী বোমাবর্ষণে হাসপাতালে অবস্থান নেওয়া হাজার হাজার বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি পালাতে বাধ্য হয়।

জাতিসংঘের একটি পরিসংখ্যানমতে, এরইমধ্যে প্রায় ৮৫ শতাংশ গাজাবাসী ইসরায়েলি আক্রমণে বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং তাদের প্রায় সকলেই খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। ইসরায়েলি হামলায় এ পর্যন্ত ২৯ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। আন্তর্জাতিক বিচার আদালত এক নির্দেশনায় তেল আবিবকে গণহত্যা আখ্যা দিয়ে অবিলম্বে এটা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু ইসরায়েল এ রায়ের দিকে ভ্রুক্ষেপ করেনি।