দক্ষিণ কোরিয়ায় চিকিৎসকদের ধর্মঘট, স্বাস্থ্যসেবায় অচলাবস্থা

দক্ষিণ কোরিয়ায় ধর্মঘটে নেমেছেন সরকারি হাসপাতালগুলোর চিকিৎসকরা। আজ মঙ্গলবার কাজে যোগ দেননি ১৬ শতাধিক চিকিৎসক। আগের দিন সোমবার ইন্টার্ন ও আবাসিক মিলে ৬ হাজারের বেশি চিকিৎসক পদত্যাগ করেছেন। সরকারি হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসকের সংখ্যা বাড়ানোর পরিকল্পনার প্রতিবাদে তারা ধর্মঘটে নেমেছে। খবর বিবিসির।

দক্ষিণ কোরিয়ায় ধর্মঘটে নেমেছেন সরকারি হাসপাতালগুলোর চিকিৎসকরা

অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থাভুক্ত (ওইসিডি) দেশগুলোর মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ায় ‘রোগী প্রতি চিকিৎসক’ অনুপাত সবচেয়ে কম রয়েছে। শুধু তাই নয়, দেশটিতে ৯০ শতাংশের বেশি হাসপাতালই বেসরকারি এবং সেখানে স্বাস্থ্যসেবা খুবই ব্যয়বহুল। বেশিরভাগ বেসরকারি হাসপাতাল স্বাস্থ্য বীমা অর্থপ্রদানের সঙ্গে জড়িত।

তাই সরকার আরও মেডিকেল কলেজ স্থাপন ও সরকারি হাসপাতালগুলোতে আরও চিকিৎসক নিয়োগ করার উদ্যোগ নিয়েছে। কিন্তু বর্তমান চিকিৎসকদের আশঙ্কা, সেটি হলে তাদের প্রতিযোগিতার মাত্রা আরও বাড়বে।

সিউল ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ প্রফেসর সুনম্যান কওন বলেন, আরও ডাক্তার মানেই তাদের জন্য বেশি প্রতিযোগিতা এবং আয় কমে যাওয়া... এই কারণেই তারা চিকিৎসক সরবরাহ বাড়ানোর প্রস্তাবের বিপক্ষে।

ড. কওন আরও বলেন, জুনিয়র চিকিৎসকরা সরকারের এই নীতির বিরোধিতা বেশি করছেন, কেননা, তাদের আশঙ্কা, ক্যারিয়ারের শুরুতেই সবচেয়ে বড় ধাক্কা খেতে যাচ্ছেন তারা।

সিউলের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ইয়ুনহাপ জানিয়েছে, ধর্মঘটী চিকিৎসকদের মধ্যে ইন্টার্ন বা জুনিয়র চিকিৎসক রয়েছেন ২৭০০ জন। দেশের শীর্ষ পাঁচটি সরকারি হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসকদের মধ্যে এই সংখ্যা এক-তৃতীয়াংশ।

দক্ষিণ কোরিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আজ মঙ্গলবার থেকে ধর্মঘটের ঘোষণা দিয়েছিলেন আয়োজকরা। তারই পরিপ্রেক্ষিতে ১৬৩০ জন চিকিৎসক কাজ করতে আসেননি।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চিকিৎসকদের এই পদক্ষেপের কারণে দেশের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। বেশ কয়েকটি হাসপাতাল জরুরি অবস্থায় চলে গেছে। কেননা, জুনিয়র চিকিৎসকরাই মূলত জরুরি ওয়ার্ড স্টাফিংয়ের কাজগুলো করে থাকে।

কোরিয়ান মেডিকেল রেসিডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন (ডেজিয়ন অ্যাসোসিয়েশন) এবং কোরিয়ান ইন্টার্ন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা ধর্মঘটে সমর্থন দেওয়ায় সঙ্কট আরও বিস্তৃত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

দক্ষিণ কোরিয়ার চিকিৎসকরা বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় বেশি বেতনভোগী। ওইসিডির ২০২২ সালের তথ্যমতে, একটি সরকারি হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বছরে গড়ে ২ লাখ মার্কিন ডলারের বেশি বেতন পান।