অবিশ্বাস্য রনি, সাকিবদের নাটকীয় জয়

পাঁচ রানে পাঁচ উইকেট নিয়েছিলেন আবু হায়দার রনি। জাতীয় দলের বাইরে থাকা এই পেসার আর উইকেট পাননি। বরং খরচ করেছেন আরও সাত রান। তাতেই বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) সেরা বোলারের তালিকায় চার নম্বরে উঠে এসেছেন রনি। তার আগুনঝরা বোলিংয়ের সুবাদে রংপুর রাইডার্স তুলে নিয়েছে এক উইকেটের নাটকীয় জয়। অনুমিতভাবেই ম্যাচ সেরা হয়েছেন রনি।

তামিম ইকবালকে ফেরানোর পর রংপুর রাইডার্সের উল্লাস

আজ চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে নয় উইকেটে ১৫১ রানের লড়াকু পুঁজি তোলে ফরচুন বরিশাল। জবাবে নয় উইকেট হারিয়ে ম্যাচের তিন বল বাকি থাকতে দারুণ জয় তুলে নেয় রংপুর রাইডার্স (১৫৫/৯)। টুর্নামেন্টের ১১ ম্যাচের নয়টিতে জিতে শীর্ষস্থান ধরে রাখল তারা। সমান ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে তিনে থাকল বরিশাল। পরের ম্যাচে জিতলেই প্লে-অফ নিশ্চিত হয়ে যাবে তাদের।

বরিশাল-রংপুরের দলীয় লড়াইয়ের ফাঁকে ফুটে উঠেছিল সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবালের ব্যক্তিগত নৈপুণ্য প্রদর্শনের দ্বৈরথ। এই লড়াইয়ে এক অর্থে জয় হয়েছে সাকিবেরই। আগে ব্যাটিংয়ে নেমে বরিশাল অধিনায়ক তামিম যেভাবে ঝড় তুলেছিলেন সেটি থামিয়েছেন বাঁহাতি অলরাউন্ডার। সেটিও প্রথম বলেই। ম্যাচে সাকিবের শিকার এই একটিই।

২০ বলে তিন চার ও দুই ছক্কায় ৩৩ রানে আউট হন তামিম। আরেক ওপেনার টম ব্যান্টন ২৪ বলে করেছেন ২৬ রান। তিনে নেমে ২৭ বলে চারটি চার ও তিন ছক্কায় ৪৬ রানে আউট হন কাইল মেয়ার্স। ১১তম ওভারে দলীয় শতক পার করা বরিশাল বড় সংগ্রহের ইঙ্গিতই দিয়েছিল। ১১০ রানে এক উইকেট ছিল তাদের। এরপরই কমে, আসে বরিশালের রানের গতি।

আচানক ধস নামে তামিম অ্যান্ড কোংয়ের ব্যাটিং লাইনে। ১২৯ রানের মধ্যে আট উইকেট হারিয়ে অলআউটের আশঙ্কায় পড়েন তারা। শেষ দিকে মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন ও ওবেদ ম্যাককয়ের সুবাদে অলআউট এড়িয়েছে বরিশাল। প্রথমজন নয় বলে ১০ এবং দ্বিতীয়জন ১২ বলে ১২* রান করেন। চার ওভারে ১২ রানে পাঁচ উইকেট নিয়ে বরিশালের মিডল অর্ডার গুঁড়িয়ে দেন রনি। ৩১ রানে দুটি শিকার হাসান মাহমুদের।

রান তাড়ায় উড়ন্ত সূচনা করেছিল রংপুর রাইডার্স। প্রথম দুই ওভারে ২১ রান করে তারা। তৃতীয় ওভারের দ্বিতীয় বলে শূন্য রানে ফেরেন ওপেনার মুমিনুল হক সৌরভ। এরপর শুরু হয় সাকিব-ব্রেন্ডন কিং ঝড়। এই দুজনের ঝড়ে পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার আগেই এক উইকেটে ৭৪ রান তুলে ফেলে রংপুর। নুরুল হাসান সোহানের দলের জয়টা তখন সময়ের ব্যাপার বলে মনে হচ্ছিল।

কিন্তু বরিশালের মতো রংপুরেরও মিডল অর্ডারে ধস নামে। ৮৭ রানের মধ্যে পাঁচ উইকেট তুলে নিয়ে লড়াইয়ে ফেরে তামিমের দল। সাকিব-কিং দুজনই ফিরেছেন পরপর দুই ওভারে। ২২ বলে তিন চার ও চার ছক্কায় ২৯ রানে ফেরেন কিং। ১৫ বলের ইনিংসে চারটি চার ও এক ছক্কায় সাকিব করেন ২৯ রান। বিপর্যয়ের পর হাল ধরেন টম মুরস ও জিমি নিশাম।

টম ১৭ বলে ১৭ রানে আউট হন। নিশাম সমান বলে দুটি করে চার-ছক্কায় ২৮ রানে আউট হন। ডোয়াইন প্রিটোরিয়াস ১৫ বলে ১৩ রান করেন। শেষ দিকে এক রানের ব্যবধানে পরপর দুই উইকটে হারায় রংপুর। ম্যাচ তখন সময়তায়। রংপুরের দরকার এক রান; বরিশালের এক উইকেট। শেষ পর্যন্ত রংপুরই হেসেছে শেষ হাসি। বরিশালের পক্ষে তিনটি করে উইকেট নেন ম্যাককয় ও মেহেদি হাসান মিরাজ। দুটি শিকার মেয়ার্সের।