নাভালনির মরদেহ কোথায়? দেখতে দেওয়া হয়নি বৃদ্ধা মাকেও

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কট্টর সমালোচক আলেক্সেই নাভালনির মরদেহ এখনও পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়নি। এমনকি তার বৃদ্ধা মা সাইবেরিয়ার কারাগার পর্যন্ত ছুটে গেলেও তাকে মরদেহ দেখতে দেওয়া হয়নি। লাশ ঠিক কোথায় রাখা হয়েছে, তাও জানানো হচ্ছে না স্বজনদের। পুতিনবিরোধী এই নেতাকে হত্যার পর এখন মরদেহ অজ্ঞাত স্থানে লুকিয়ে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন নাভালনিপন্থীরা। খবর বিবিসির।

রাশিয়াজুড়েই নাভালনিকে স্মরণ করছেন তার সমর্থকরা

রুশ কারা কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিক চিঠি দিয়ে নাভালনির পরিবারকে তার মৃত্যুর খবর দিয়েছে। ছেলের মৃত্যুর খবর পেয়ে মা লুদমিলা ছুটে যান সাইবেরিয়ার আর্কটিক কারাগারে। কিন্তু ৬৯ বছরের এই বৃদ্ধা মাকে ছেলের লাশটি দেখতে দেওয়া হয়নি।

নাভালনির মায়ের অভিযোগ, ছেলের লাশ গ্রহণ করতে তিনি পেনাল কারাগারে যান। কিন্তু তাকে বলা হয় নাভালনির লাশ সালেখার্ড শহরের মর্গে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু তিনি সেই মর্গে গিয়ে দেখতে পান, সেটি বন্ধ রয়েছে। বুকে কষ্ট চেপে ফিরে আসেন তিনি।

সন্তানহারা বৃদ্ধা মায়ের সঙ্গে এমন ঘটনা ঘটার পর নাভালনির মুখপাত্র কিরা ইয়ারমিশ বলেন, রাশিয়ার বিরোধীদলীয় নেতার এই মৃত্যু স্বাভাবিক নয়, তাকে হত্যা করা হয়েছে। আর হত্যাকাণ্ডের প্রমাণ লোপাট করার জন্যই এখন মৃতদেহ স্বজনের কাছে হস্তান্তর করা হচ্ছে না।

ইয়ারমিশ বলেন, আমাদের বিশ্বাস প্রেসিডেন্ট পুতিনই তার সমালোচক হিসেবে পরিচিত নাভালনিকে ষড়যন্ত্র করে মেরে ফেলছেন।

কারাগার থেকে নাভালনির মাকে পাঠানো অফিসিয়াল মৃত্যুর নোটিশে তার মৃত্যুর সময় ১৬ ফেব্রুয়ারি, রাত ২টা ১৭ মিনিট লেখা। ৪৭ বছর বয়সী নাভালনির আকস্মিক মৃত্যু হয়েছে বলে নোটিশে জানানো হয়।

রাশিয়ায় কারাবন্দি কেউ মারা গেলে তার লাশ দুই দিনের মধ্যে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করার বিধান রয়েছে। কিন্তু নাভালনির ক্ষেত্রে আইনও মানছে না পুতিন সরকার।

এমনকি নাভালনির মৃত্যু নিয়ে দেশজুড়ে প্রতিবাদ মিছিল বা বিশ্বজুড়ে সমালোচনার ঝড় বইলেও এ নিয়ে এখনও কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি প্রেসিডেন্ট পুতিন বা ক্রেমলিন সরকার।

নাভালনি ২০২১ সাল থেকে কারাবন্দি রয়েছেন। উগ্রপন্থি সংগঠনে অর্থায়নের অভিযোগে ২০২৩ সালের আগস্টে তাকে ১৯ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

রাশিয়ায় প্রায় ১০ বছর ধরে পুতিনবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন নাভালনি। এ কারণে তিনি ছিলেন পুতিনের চক্ষুশূল। এর আগেও নাভালনিকে দুইবার হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এসব কারণেই পুতিনবিরোধী এই নেতাকে হত্যা করা হয়েছে বলেই আশঙ্কা করছেন তার সমর্থকরা।