বাধ্য হয়েই আভদিভকা ছাড়লো ইউক্রেনীয় বাহিনী

পূর্বাঞ্চলীয় যুদ্ধকবলিত শহর আভদিভকা থেকে নিজেদের সেনা প্রত্যাহার করে নিয়েছে ইউক্রেন। গোলাবারুদের ঘাটতিতে রুশ সেনাদের সামনে আর দাঁড়াতে পারছিল না ইউক্রেনীয় সেনারা। ইউক্রেনের নতুন সেনাপ্রধান জেনারেল ওলেক্সান্ডার সিরস্কি শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। খবর বিবিসি ও রয়টার্সের।

যুদ্ধের কারণে জনশূণ্য পরিত্যক্ত শহরে পরিণত হয়েছে ইউক্রেনের আভদিভকা

কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ পূর্বাঞ্চলীয় শহর আভদিভকা। শহরটি এক দশক আগে রুশ দখলকৃত দোনেৎস্ক অঞ্চলের প্রবেশদ্বার হিসেবে বিবেচিত। তবে এতদিন ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণে থাকলেও সেটি আর রক্ষা করতে পারলো না তারা।

২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি সামরিক আগ্রাসন শুরুর পর আভদিভকা ঘিরে বেশ কয়েক মাস ধরেই প্রচণ্ড যুদ্ধ হয়েছে ইউক্রেনীয় ও রুশ বাহিনীর। কয়েক মাসের এই যুদ্ধে সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে আভদিভকা শহরটি।

ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর কমান্ডার-ইন-চিফ ওলেক্সান্ডার সিরস্কি বলেছেন, ২০২৩ সালের মে মাসের পর থেকেই আভদিভকা ঘিরে সবচেয়ে বড় অগ্রগতি করেছে রাশিয়া। অবশেষে রুশ সেনাদের ঘিরে ফেলা এড়াতে এবং সৈন্যদের জীবন বাঁচাতে পিছু হটতে হয়েছে আমাদের।

ওলেক্সান্ডার সিরস্কি বলেন, রুশ সেনাদের হাতে ঘেরাও হওয়ার আগেই আমাদের সৈন্যদের আরো সুবিধাজনক প্রতিরক্ষামূলক অবস্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

এদিকে ডেপুটি সেনাপ্রধানও নিশ্চিত করেছেন, রুশ সেনাদের একটি বিশাল আর্টিলারি সুবিধা রয়েছে এবং তারা নিজেদের সৈন্যদের মৃতদেহের ওপর দিয়েই অগ্রসর হচ্ছে।

ইউক্রেন সরকারের দাবি অনুযায়ী, ইউক্রেনীয় সেনারা গোলাবারুদের তীব্র ঘাটতির মধ্যেই আভদিভকায় যুদ্ধরত ছিল। গোলাবারুদের অভাবের প্রভাব পড়েছে যুদ্ধক্ষেত্রে। এমন পরিস্থিতিতে রুশ বাহিনী আভদিভকার চারপাশ ঘিরে ফেলবে- আশঙ্কার মধ্যে ইউক্রেনের সেনাদের প্রত্যাহার করা হয়েছে।

ইউক্রেনীয় তথ্যমতে, শহরটিতে যুদ্ধের আগে প্রায় ৩২ হাজার মানুষের বাস ছিল। তবে এখন শহরটি জনশূণ্য।

বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমারা ইউক্রেনে প্রতিশ্রুত সামরিক সহায়তা দিতে দেরি করায় বিপাকে পড়েছে যুদ্ধকবলিত দেশটি।

অবশ্য গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র সিনেটে ৬০বিলিয়ন ডলারের একটি সহায়তা তহবিল পাস করেছে। যদিও তা হাউসে আটকে আছে।

তখনই মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সতর্ক করে বলেছিলেন, ইউক্রেনকে নতুন সামরিক সহায়তা প্যাকেজ দিতে দেরি করায় দেশটি গোলাবারুদের ঘাটতিতে পড়েছে। এ কারণে আভদিভকার নিয়ন্ত্রণ হারাতে পারে ইউক্রেন।