চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে প্রথমবার বৈঠক করবেন ডেভিড ক্যামেরন

ডেভিড ক্যামেরন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার পর প্রথমবারের মতো তার চীনা প্রতিপক্ষ ওয়াং ইয়ের সঙ্গে দেখা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। চলতি সপ্তাহান্তে দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী একটি বৈঠকে মিলিত হবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

 ডেভিড ক্যামেরন এবং ওয়াং ই

ব্রিটেনের দুইটি সরকারি সূত্র জানিয়েছে, মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে ক্যামেরন এবং ওয়াংয়ের মধ্যে একটি বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ১৬ থেকে ১৮ ফেব্রুয়ারি জার্মানির মিউনিখ শহরে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। 

গত বছরের নভেম্বরে ঋষি সুনাকের মন্ত্রিসভায় আকস্মিকভাবে স্থান পেয়েছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। এরপর প্রথমবার কোনো চীনা মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করতে যাচ্ছেন তিনি।  

পররাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে ক্যামেরন চীনের সঙ্গে তার সম্পর্ক নিয়ে চাপের মধ্যে পড়েছেন। ওয়াং এর সঙ্গে আসন্ন বৈঠকে মানবাধিকার ও জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে ব্রিটেনের উদ্বেগ উত্থাপনের জন্য তার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তার দলের নেতারা।

ব্রিটিশ কনজারভেটিভ পার্টির সাবেক নেতা ইয়ান ডানকান স্মিথ চীনের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে সমালোচনা করেছিলেন। এরপর চীনা সরকার তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। তিনি বলেছেন, ‘ডেভিড ক্যামেরনের উচিত উইঘুরদের গণহত্যা, চীনের সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠীর দাস শ্রমের প্রসঙ্গ উত্থাপন করা। ব্রিটিশ সংসদ সদস্যদের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করার জন্যও তার আহ্বান জানানো উচিত।' 

এদিকে ব্রিটেনের চীনবিষয়ক ইন্টার-পার্লামেন্টারি অ্যালায়েন্সের নির্বাহী পরিচালক লুক ডি পুলফোর্ড বলেছেন, 'ব্রিটিশ নাগরিক জিমি লাইয়ের বিচার এবং তাকে নির্যাতন করার প্রসঙ্গ নিয়ে কথা বলতে হবে ক্যামেরনকে। এছাড়া ইউক্রেন যুদ্ধে পুতিনকে সমর্থন, উইঘুরদের প্রতি নৃশংসতা বন্ধের বিষয়েও চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে হবে তাকে।' 

চীনা বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক এবং সংবাদপত্রের প্রতিষ্ঠাতা জিমি লাইকে হংকংয়ের জাতীয় নিরাপত্তা বিপন্ন করার জন্য বিদেশি বাহিনীর সঙ্গে যোগসাজশের জন্য অভিযুক্ত করা হয়েছ। হংকং এর এই ব্যবসায়ী এবং রাজনীতিবিদ জনপ্রিয় সংবাদপত্র অ্যাপল ডেইলি প্রতিষ্ঠা করেছেন। তিনি হংকং এর গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত। 

এদিকে গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর একটি বিবৃতিতে লাইয়ের রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বিচার বন্ধ করার জন্য প্রকাশ্যে আহ্বান জানিয়েছিলেন ক্যামেরন। তিনি বলেছিলেন, ‘একজন বিশিষ্ট, স্পষ্টভাষী সাংবাদিক এবং প্রকাশক হিসাবে জিমি লাইয়ের মত প্রকাশের স্বাধীনতার উপর হস্তক্ষেপ করা হয়েছে।' 

উল্লেখ্য, ডেভিড ক্যামেরন চীনের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রাখার বিষয়ে বরাবরই গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। তিনি বিভিন্ন সাক্ষাতকারে এই বিষয়টি তুলে ধরেছেন। প্রধানমন্ত্রী হিসাবে তিনি চীনের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি ‘সোনালী যুগের’ সূচনা করেছিলেন। ২০১৫ সালে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং তার আমন্ত্রণে ব্রিটেনে সফর করেছিলেন।

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান