রাফাহ অঞ্চলে হামলায় জিম্মি মুক্তির আলোচনা বাতিল করবে হামাস

গাজার উদ্বাস্তু ১৭ লাখ মানুষের শেষ আশ্রয়স্থল রাফাহ অঞ্চলকে ফিলিস্তিনিমুক্ত করতে বড় ধরনের স্থল হামলার পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক চাপ সত্ত্বেও তারা পরিকল্পনা থেকে পিছপা হচ্ছে না। তবে হামাস ঘোষণা দিয়েছে, রাফাহ অঞ্চলে হামলা হলে ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির ব্যাপারে চলমান যুদ্ধবিরতির আলোচনা বন্ধ করে দেবে তারা। খবর বিবিসি ও আল জাজিরার।

গাজার উদ্বাস্তু ১৭ লাখ মানুষের আশ্রয়স্থল রাফাহ

আল-আকসা টেলিভিশন চ্যানেলে রবিবার হামাসের একজন উর্ধ্বতন নেতা বলেছেন, রাফাহ শহরে ইসরায়েলের যেকোনো স্থল আক্রমণ মানে বন্দি বিনিময় আলোচনাকে উড়িয়ে দেওয়া।

হামাস যোদ্ধাদের হাতে এখনও অন্তত ১৩০ ইসরায়েলি জিম্মি রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। জিম্মিদের মুক্ত করে নিতে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকারের ওপর চাপ বাড়িয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলিরা।

এমন পরিস্থিতিতে নেতানিয়াহু সরকার বাধ্য হয়ে হামাস যোদ্ধাদের একটি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছিল। উভয়পক্ষে বন্দি বিনিময়ের শর্তে ওই যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেয় গাজায় চার মাসের বেশি সময় ধরে নির্বিচারে হামলা, হত্যা ও ধ্বংস চালিয়ে যাওয়া ইসরায়েল।

তবে ওই যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে গাজা পুনর্গঠনের কিছু শর্ত দেয় হামাস। তবে তাতে রাজি হয়নি নেতানিয়াহু সরকার।

এরপরই প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ঘোষণা দেন, মিসরের সীমান্তবর্তী গাজার রাফাহ শহরে স্থল অভিযানের। নেতানিয়াহু চান, পুরো শহরকে খালি করে ফেলতে। তার দাবি, রাফাতে হামাসের শক্ত ঘাঁটি রয়েছে। সেখান থেকে হামাসকে নিশ্চিহ্ন না করা পর্যন্ত যুদ্ধ চলবে।

রাফাহ অঞ্চলে এখন ১৭ লাখ ফিলিস্তিনির আশ্রয়। উত্তর গাজা, গাজা সিটি ও উপত্যকার দক্ষিণাঞ্চল থেকে ইসরায়েলি হামলায় ঘরবাড়ি হারিয়ে উদ্বাস্ত হয়ে কোনো রকম অঞ্চলটিতে আশ্রয় নিয়েছে এসব মানুষ।

রাফায় হামলা হলে অনেক বেশি বেসামরিক মানুষ হতাহত হবে এবং তাতে মানবিক বিপর্যয় ঘটবে বলে আশঙ্কা জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের।

জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র ও আরব দেশগুলো এরইমধ্যে ইসরায়েলকে পরিকল্পিত আক্রমণে এগিয়ে না যাওয়ার জন্য সতর্ক করে বলেছে, এটি ভয়ানক মানবিক বিপর্যয় ঘটাবে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় গাজার বিভিন্ন স্থানে ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ১১২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এ নিয়ে ৭ অক্টোবর থেকে হামরায় মৃতের সংখ্যা ২৮ হাজার ১৭৬ ছাড়িয়েছে। আহত হয়েছে আরও অন্তত ৬৭ হাজার ৭৮৪ ফিলিস্তিনি।