ইমরানের দল পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্রদের চমক

পাকিস্তানে জাতীয় পরিষদের ভোটাভুটি হয়েছে বৃহস্পতিবার। রহস্যজনকভাবে ১২ ঘণ্টা দেরি করে শুক্রবার সকালে শুরু হয়েছে নির্বাচনের ফল ঘোষণা। আর তাতেই দেখা যাচ্ছে চমক। এ চমক দেখিয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পিটিআই সমর্থিত প্রার্থীরা। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ঘোষিত ফলাফলে এগিয়ে রয়েছেন ইমরানসমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। খবর ডন নিউজ, জিও টিভি ও বিবিসির।

ভোটের ফলে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই, কে আসছেন পাকিস্তানের ক্ষমতায়

নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ফলাফলে দেখা যায়, সর্বশেষ ঘোষিত ১৪৮ আসনের মধ্যে ৬১টিতে জয়ী হয়েছেন ইমরান সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। নওয়াজ শরিফের পিএমএল-এন পেয়েছে ৪৩ আসন। এছাড়া বিলওয়াল ভুট্টোর পিপিপি পেয়েছে ৩৮ আসন। এছাড়া এমকিউএম ৪টি ও অন্যরা দুটি আসনে জিতেছে।

এদিকে শুক্রবার রাত ৮টায় জিওনিউজ জানিয়েছে, ২৫১ আসনের ফলাফলে ইমরান খান সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ১০৬টিতে জয়লাভ করেছেন। এছাড়া, নওয়াজ শরীফের দল জিতেছে ৬৭টিতে এবং পিপিপি জিতেছে ৫১ আসনে।

এবার নির্বাচনে পিটিআইকে ঠেকাতে ইমরান খানকে দুর্নীতি মামলায় জেলে ঢোকানো হয়েছে। নির্বাচনের দুইদিন আগে দুই মামলায় ১০ ও ১৪ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এতে তিনি যেমন ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেননি, তেমনি পিটিআই প্রার্থীদের দলীয় প্রতীক ব্যাট নিয়েও ভোট করতে দেয়নি নির্বাচন কমিশন। দলটির সবাই বাধ্য হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোট করেছে।

সেই স্বতন্ত্রদের কাছে পাত্তা পাচ্ছে না ক্ষমতাসীন দল পাকিস্তান মুসলিম লীগ (পিএমএল-এন)। যদিও আসন প্রাপ্তিতে কাছাকাছি অবস্থানে রয়েছেন নওয়াজ শরীফের দল ও বিলাওয়াল ভুট্টোর দল পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)। মূলত দল তিনটির মধ্যে দেখা দিয়েছে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই।

পাকিস্তানে জাতীয় পরিষদে ২৬৬ আসনে সরাসরি ভোট হয়। নির্বাচনের আগের দিন দুর্বৃত্তের গুলিতে এক প্রার্থী নিহত হওয়ায় ওই আসনে ভোট স্থগিত করা হয়। এতে ২৬৫ আসনে ভোটগ্রহণ হয়েছে।

জাতীয় পরিষদে মোট আসন হলো ৩৩৬টি। ২৬৫ টিতে ভোট হলেও বাকি আসনগুলো নারী ও অন্য ধর্মাবলম্বীদের জন্য সংরক্ষিত। কোনো দল যদি এককভাবে সরকার গঠন করতে চায় তাহলে তাদের সরাসরি ভোটের ১৩৪ আসনে এবং সংরক্ষিতসহ মোট ১৭২টি আসনে জিততে হবে।

ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) আশা করছে, পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা সরাসরি ভোট হওয়া ১৫০ আসনে জয়লাভ করবে এবং কোনো জোট ছাড়াই দলটি সরকার গঠন করবে।

পিটিআইয়ের চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার গওহর আলী খান শুক্রবার জিও নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, পিটিআই সমর্থিত প্রার্থীরা সরকার গঠনের অবস্থানে আছে। আমরা পাকিস্তান পিপলস পার্টি বা পাকিস্তান মুসলিম লীগের (নওয়াজ) সঙ্গে যোগাযোগ করছি না।

তার দাবি, পিটিআই নেতারা নির্বাচনে ১৫০টি আসনে জিতেছে এবং কেন্দ্রে সরকার গঠনে প্রয়োজনীয় আসন পেতে সক্ষম দলটি।

গওহর আরও বলেন, আমরা কেন্দ্রীয়ভাবে ও পাঞ্জাবে সরকার গঠন করতে যাচ্ছি। খাইবার পাখতুনখোয়ায়ও পিটিআই স্পষ্টভাবে এগিয়ে আছে এবং সেখানেও সরকার গঠন করবো আমরা।

অন্যদিকে সরকার গঠনের আশা করছে নওয়াজের দল পিএমএল-এন। দলটির সিনিয়র নেতা ইসহাক দাবি করেন, তারা স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন এবং তারাই সরকার গঠন করবে। জয়ী অনেক স্বতন্ত্র প্রার্থীও তাদের দলের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন।

শেষ পর্যন্ত কোনো দলই যদি এককভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পায়, সেক্ষেত্রে জোট সরকার আসতে পারে দেশটিতে। এক্ষেত্রে পিটিআই অন্য কারও সঙ্গে জোট করতে পারে। আবার পিএমএল-এন ও পিপিপি জোট গঠন করেও ক্ষমতায় আসতে পারে।