ইসরায়েলি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে ইতিবাচক সাড়া হামাসের

গাজায় যুদ্ধবিরতির নতুন একটি প্রস্তাবে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে হামাস। চুক্তিটির বিস্তারিত প্রকাশ না করা হলেও তাতে ছয় সপ্তাহ অর্থাৎ দেড় মাসের যুদ্ধবিরতি এবং আরও বেশি সংখ্যায় জিম্মি-বন্দি বিনিময়ের প্রস্তাব করা হয়েছে। ইসরায়েলের সঙ্গে মিলে খসড়া প্রস্তুত করেছে মধ্যস্থতাকারী যুক্তরাষ্ট্র, কাতার ও মিসর। খবর বিবিসির।

ইসরায়েলি হামলায় পুরো ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে গাজা

হামাসের এক জ্যেষ্ঠ নেতা জানিয়েছেন, গাজায় নতুন যুদ্ধবিরতির খসড়া প্রস্তুত হয়েছে এবং আমরা তাতে সাড়া দিয়েছি। তবে হামাসের পক্ষ থেকে গাজা পুনর্গঠন সংক্রান্ত কয়েকটি শর্তও যুক্ত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যস্থতাকারী হিসেবে অন্যতম দেশ কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুলরহমান আল থানি বলেছেন, এক সপ্তাহ আগে যুদ্ধবিরতি চুক্তির খসড়া হামাসের কাছে পাঠানো হয়েছিল। হামাস নেতারা সেটি নিজেদের মধ্যে পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ করে দেখেছেন।

কাতারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, হামাস আমাদের জানিয়েছে যে তারা চুক্তির ব্যাপারে ইতিবাচক। আশা করছি, শিগগিরই গাজায় একটি সফল যুদ্ধবিরতি চুক্তি উপহার দিতে পারব আমরা।

ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র- উভয়পক্ষই বলেছে, যুদ্ধবিরতি চুক্তি ইস্যুতে হামাসের দেওয়া জবাব পর্যালোচনা করে দেখছে তারা।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্য সফরে রয়েছেন। তিনি বলেছেন, হামাসের জবাব প্রসঙ্গে ইসরায়েলের মত জানতে নেতানিয়াহু সরকারের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন তিনি।

গতবছর ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা ইসরায়েলের অভ্যন্তরে অতর্কিত হামলা চালায়। এতে একদিনেই ১১৩৯ জন নিহত হয় বলে ইসরায়েলের দাবি। পাশাপাশি ২৪০ জন ইসরায়েলি ও বিদেশিকে জিম্মি করে নিয়ে যায় হামাস

হামাসের ওই হামলার প্রতিশোধ নিতে সেদিন থেকেই গাজায় নির্বিচার বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী।

বিগত চার মাস ধরে চলা ইসরায়েলি হামলায় গাজায় এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ২৭ হাজার ৫৮৫ জনের বেশি এবং আহত হয়েছে আরও ৬৮ হাজার ফিলিস্তিনি। এছাড়া ইসরায়েলি বাহিনীর বোমায় বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়ে উদ্বাস্ত হয়েছেন ১৭ লাখের বেশি ফিলিস্তিনি।

গাজায় ইসরায়েলি হামলার প্রথম মাসে ২৫ নভেম্বর থেকে ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সাত দিনের যুদ্ধবিরতি হয়েছিল। যুদ্ধবিরতির ওই ৭ দিনে চুক্তি অনুযায়ী ইসরায়েলি জিম্মিদের ১০৮ জনকে মুক্তি দেয় হামাস। বদলে বিভিন্ন কারাগার থেকে তিন শতাধিক ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেয় ইসরায়েল।

ইসরায়েলের হিসেব অনুযায়ী, হামাসের হাতে এখনও ১৩২ জন জিম্মি রয়েছেন। তাদের ফেরত পেতে ইসরায়েলে জিম্মিদের স্বজনরা ব্যাপক বিক্ষোভ-আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। আর এতেই বাধ্য হয়ে নতুন যুদ্ধবিরতি চুক্তির জন্য উদ্যোগী হয়েছে ইসরায়েল।