আইসিসির কাছে সবার আগে ভারত
- Details
- by ২৪ লাইভ নিউজপেপার ডেস্ক
আইসিসিকে ইন্ডিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল বলা ভালোই বিপদে পড়তে হয়েছে সংস্থাটির প্রেসিডেন্ট মুস্তফা কামালকে। ওই কারণে নানা আলোচনা-সমালোচনা ও ক্ষোভ-বিক্ষোভের পর পদত্যাগ করতেই বাধ্য হয়েছেন তিনি। কিন্তু মুস্তফা কামাল কি আসলেই খুব একটা ভুল বলেছিলে? ইতিহাস তো বলে আসলেই আইসিসির কাছে সবার আগে ভারত। ক্রিকেট- বাণিজ্যের মোট লাভের ৭০ শতাংশের যোগানদাতা ভারত; তো তাদেরকে বাদ দিয়ে কি আর ক্রিকেটের কথা চিন্তা করতে পারে আইসিসি? পারে না, পারে না বলেই ভারতের সুবিধার্থে সব কিছুই করতে রাজি ‘ইন্ডিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল’!
গত কয়েক বিশ্বকাপ ধরেই ফরমেশন নিয়ে নানা রকম পরীক্ষা নিরীক্ষা করছে আইসিসি। ২০০৭ সাল থেকে ২০১৫ পর্যন্ত, একই ফরম্যাটে দুই বিশ্বকাপ হয়নি! এমনকি ২০১৫-এর মতো হবে না ২০১৯ বিশ্বকাপও! অর্থাৎ পরের বিশ্বকাপেও নতুন ফরমেশন দেখতে পারবেন সমর্থকরা।
পরিতাপের বিষয় হলো এই বিশ্বকাপে ১৪ দল খেললেও সামনের বিশ্বকাপে দল কমে দাঁড়াবে দশ-এ। আইসিসি সহযোগী দেশগুলোকে বিশ্বকাপে দেখতে চায় না। যদিও মুখে মুখে তারা ক্রিকেটের বিশ্বায়নের গল্প শোনায়।
২০১৫ বিশ্বকাপের উত্তাপ ইতোমধ্যেই শেষ। তারপরও চলুন একবার ফিরে তাকানো যাক। এই বিশ্বকাপে দুই গ্রুপে ভাগ হয়ে মোট ১৪টি দল খেলেছে। গ্রুপ পর্বে অনুষ্ঠিত হয়েছে মোট ৪২টি ম্যাচ। অর্থাৎ একেকটি দল বিশ্বকাপের ৪২টি ম্যাচ হওয়া পর্যন্ত নিজেদের সুযোগ পেতো। বিশ্বকাপে মোট ম্যাচ ছিলো ৪৯টি। এর মধ্যে আইসিসির ‘প্রিয় দল’ ভারত নিশ্চিত ছিলো ৪২ পর্যন্ত। পরে তারা আরো দুটি ম্যাচ খেলেছে। সব মিলিয়ে ৪৮ ম্যাচ পর্যন্ত টিকে ধোনির দল। ভারতকে বেশি সময় বিশ্বকাপে টিকিয়ে রাখা মানেই ভারতের ১২৫ কোটি মানুষকে ধরে রাখা। তাদের ধরে রাখা মানেই আইসিসির বেশী লাভ!
সুতরাং ভারতকে টিকিয়ে রাখত হবে যে কোনো মূল্যে! অন্তত যতোটুকু সম্ভব। আইসিসির এই প্রবণতা শুরু হয়েছে ২০০৭ বিশ্বকাপ থেকে। ওই বিশ্বকাপের ফরমেশন কি মনে আছে? সেবার চারটি গ্রুপে ভাগ হয়ে খেলেছে ১৬টি দল। গ্রুপ পর্বে ম্যাচ হয়েছে ছয়টি করে। অর্থাৎ ২৪ ম্যাচ পরেই বাদ পড়ে গেয়ে আটটি দল। আইসিসির জন্য ‘দুঃখের’ বিষয় ছিলো বাদ পড়া আট দলের একটি ছিলো ভারত
ওই বিশ্বকাপে ম্যাচ ছিলো মোট ৫১টি। ২৪ ম্যাচ পর ভারতের বাদ পড়া মানে ছিলো অর্ধেক বিশ্বকাপের মধ্যেই আইসিসির সেরা ‘লক্ষ্মীকে’ হারানো। ফলে সেবার বেশির ভাগ ম্যাচেই বাণিজ্যিকভাবে ক্ষতির মুখে পড়েছে আইসিসি। আইসিসির তাই মাথা ঠিক যোগাড় ছিলো না তখন। ওই কারণেই ২০১১ সালে এসে হাস্যকর এক ফরমেশন তৈরি করে তারা।
২০১১ এর ফরমেশনটাও মোটামুটি ২০১৫-এর মতোই ছিলো। সেবার খেলেছে মোট ১৪টি দল বিশ্বকাপ খেলে দুই গ্রুপে ভাগ হয়ে। গ্রুপ পর্বে অনুষ্ঠিত হয় মোট ৪২ টি ম্যাচ। অর্থাৎ ৪২ ম্যাচ পর্যন্ত ভারতের টিকে থাকা নিশ্চিত। কারণ গ্রুপ পর্বে ৩-৪ টি ম্যাচ জিতলেই কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত। সাথে ভারতের ১২৫ কোটি দর্শকও নিশ্চিত। শেখর ধাওয়ানের ক্যাচটা ছক্কা হয়ে গেলো কিনা, তা ভালোভাবে না দেখতে পারলেও, লাভের হিসেবটা ঠিকই করেছে আইসিসি! ২০১১ সালে ভারত চ্যাম্পিয়নও হয় এবং ওই আসরেই আইসিসি বিশ্বকাপ থেকে সবচেয়ে বেশি আয় করে।
এবার আসা যাক ২০১৯ বিশ্বকাপ প্রসঙ্গে। সামনের বিশ্বকাপে খেলবো মোট ১০টি। র্যাঙ্কিংয়ের সেরা আট দল খেলবে সরাসরি। বাকি দুই দল আসবে বাছাই পর্ব খেলে। এরপর আর কোনো গ্রুপ পর্ব থাকবে না। ১০ দল পরস্পরের বিপক্ষে খেলবে। এভাবে ম্যাচ দাঁড়াবে ৪৫টি। আগে প্রথম পর্বে ৪২টি ম্যাচ, হতো পরের বিশ্বকাপে হবে ৪৫টি। তিনটি ম্যাচ বেড়ে যাবে। তা দল যতোই কম হোক! এসব কিছু আইসিসি করছে ভারতকে বেশি খেলার সুযোগ দেওয়ার জন্য। এ কারণে তারা ক্রিকেটের উঠতি শক্তিগুলোর কথা চিন্তাই করছে না। যেমন আফগানিস্তান উঠে আসছে, আয়ারল্যান্ড তো ‘জায়ান্ট কিলার’ই হয়ে গেছে। নেপাল ভালো করছে। বিশ্বকাপ খেলার আকর্ষণে আরো কয়েকটি দেশ ‘কোমড়ে গামছা’ বেঁধে নেমেছে। কিন্তু আইসিসির খেয়াল সেদিকে নেই। ক্রিকেট ‘বেচে’ কেবল টাকা কামাই করাই তাদের একমাত্র উদ্দেশ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। এবং সে জন্যই সব ধরনের নিয়ম নীতি বাদ দিয়ে ভারত-তোষণ করে যাচ্ছে তারা- এ অবস্থায় কেউ যদি আইসিসিকে ‘ইন্ডিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলই’ বলে, তবে ভুল কোথায়?
আপনি আরো পড়তে পারেন
প্রতিবাদে পদত্যাগ কামালের
১৩ তারিখে আসছে পাকিস্তান
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.
Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.