পাকিস্তানে নির্বাচনী প্রচারণার সময় ইমরান খানের দলের প্রার্থী গুলিবিদ্ধ

পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ইমরান খানের দল তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) এক স্বতন্ত্র প্রার্থীকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। খাইবার পাখতুনখোয়ার বাজৌর জেলার সিদ্দিকাবাদ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

ছবি - সংগৃহীত

চলতি মাসে নির্বাচনের নিরপেক্ষতা নিয়ে একটি 'বড় প্রশ্ন' উত্থাপন করে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ বলেছে যে, তাদের প্রার্থী এবং জনসমাবেশকে "সন্ত্রাসী হামলা" দ্বারা লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে। প্রযুক্তিগত কারণে ইমরান খানের দলের ঐতিহ্যবাহী নির্বাচনী প্রতীক ক্রিকেট ব্যাট কেড়ে নেওয়া হয়েছে এবং এর প্রার্থীরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

ডন পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, রেহান জেব খান যখন ওই এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছিলেন, তখন সশস্ত্র ব্যক্তিরা তার গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি চালায়। তাকে জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে তিনি মারা যান। হামলায় আরও চারজন আহত হয়েছেন বলে পাকিস্তানের সংবাদপত্রটি জানিয়েছে। ঘটনাটি 'টার্গেট কিলিং' বলে মনে হচ্ছে। পিটিআই বলেছে যে রেহান "জাতীয় পরিষদের একটি আসনে দলীয় সমর্থিত প্রার্থী" ছিলেন। দলটি এই হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। সিবিতে পিটিআইয়ের নির্বাচনী সমাবেশে হামলার পর জাতীয় পরিষদের প্রার্থীর হত্যার দায় অযোগ্য তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ওপর, বলেছে দলটি।

পিটিআই হামলার তদন্ত দাবি করে বলেছে, দায়ীদের দ্রুত শাস্তি হওয়া উচিত। তারা নির্বাচনে অংশ নেওয়া পিটিআই সমর্থিত সকল প্রার্থীর নিরাপত্তা চেয়েছে এবং পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনকে (ইসিপি) এই ঘটনার দিকে নজর দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। দলটির অভিযোগ, তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিজেদের সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনের পরিবর্তে একটি রাজনৈতিক দলকে ক্ষমতায় আনার দিকে মনোনিবেশ করছে।

সিবিতে পিটিআইয়ের সমাবেশে বিস্ফোরণের বিষয়টি নজর দেওয়ার জন্য পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতির প্রতি আহ্বান জানিয়েছে দলটি। পিটিআই নেতা ব্যারিস্টার গোহর আলী খান এই হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।

উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেছেন, মনোবল ভেঙে দেওয়া এবং পিটিআইকে নির্বাচন থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য একটি অগ্রহণযোগ্য পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন এই হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি নজরে আনলেও রেহানের নাম প্রকাশ করেনি। নির্বাচন কমিশন প্রাদেশিক কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে একটি প্রতিবেদনও চেয়েছে এবং দায়ীদের শাস্তি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। পিপিপি চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো-জারদারি এই হামলার নিন্দা জানিয়েছেন। পিপিপি কর্মীরা এ ধরনের কাপুরুষোচিত হামলাকে ভয় পায় না, তিনি বলেন। নির্বাচনী অফিস রক্ষায় ইসিপির পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।

সীমান্তের উভয় পাশে ইসলামপন্থী জঙ্গিরা সক্রিয় এমন একটি অঞ্চলে বুধবারের হামলার দায় এখন পর্যন্ত কেউ স্বীকার করেনি। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের উপজাতীয় অধ্যুষিত এলাকায় পিটিআইয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোনো প্রার্থীর এটি দ্বিতীয় হত্যাকাণ্ড। বেলুচিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে পিটিআইয়ের সমাবেশের পর ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বোমা হামলার একদিন পর বুধবার এ হামলা চালানো হলো।