গাজায় ৫০ শতাংশ ঘরবাড়ি ধ্বংস, উদ্বাস্তু ১৭ লাখ

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার বিমান হামলায় অর্ধেকের বেশি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়েছে। এতে বাস্তুচ্যুত হয়েছে ১৭ লাখের বেশি মানুষ। গত বছর ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় অব্যাহত বোমা হামলায় হত্যা ও ধ্বংস চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। স্যাটেলাইট ডেটা বিশ্লেষণ করে এ নিয়ে নতুন পর্যবেক্ষণ রিপোর্ট প্রকাশ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকরা। খবর বিবিসির।

গাজার ডিসেম্বরের আগে ও পরের ছবি বিশ্লেষণে মেলে ধ্বংসের প্রমাণ

বিদায়ী বছরের ডিসেম্বরের আগে ও পরের স্যাটেলাইট ছবি বিশ্লেষণ করে গাজায় ধ্বংসযজ্ঞের করুণ বাস্তবতা তুলে ধরেছেন নিউইয়র্ক সিটি ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক কোরি শের এবং ওরেগন স্টেট ইউনিভার্সিটির জ্যামন ভ্যান ডেন হোয়েক।

গবেষকরা স্যাটেলাইট ছবির তুলনামূলক বিশ্লেষণে জানিয়েছেন, গাজাজুড়ে আবাসিক এলাকাগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে। অতীতে ব্যস্ত শপিং সড়কগুলো এখন ধ্বংসস্তূপের পাহাড়, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, কৃষিজমিগুলো বিরাণভূমি।

প্রাপ্ত স্যাটেলাইট ডেটা বিশ্লেষণে দেখা গেছে, পুরো গাজা উপত্যকায় ১ লাখ ৪৪ হাজার থেকে ১ লাখ ৭৫ হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়েছে। এটি গাজার মোট ভবনের ৫০ শতাংশ থেকে ৬১ শতাংশ।

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের অভ্যন্তরে হামাসের যোদ্ধা আকস্মিক হামলা চালায়। এতে ইসরায়েলি সরকারের তথ্যমতে, একদিনের হামলায় ইসরায়েলে ১১৩৯ জন নিহত এবং ২৪০ জনকে জিম্মি করেছে হামাস। ওই হামলার প্রতিশোধ নিতেই গত প্রায় চারমাস ধরে গাজায় টানা হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ইসরায়েলি হামলায় মঙ্গলবার পর্যন্ত ২৬ হাজার ৭৫১ জন নিহত এবং ৬৫ হাজার ৬৩৬ জন আহত হয়েছে।

জাতিসংঘের তথ্যমতে, ব্যাপক হতাহতের পাশাপাশি গত চার মাসে ১৭ লাখ মানুষ অর্থাৎ, গাজার মোট জনসংখ্যার ৮০ ভাগের বেশি বাস্তুচ্যুত হয়েছে। তাদের মধ্যে অর্ধেকের মতো মানুষ উপত্যকার দক্ষিণ প্রান্তে আটকে পড়েছে, সেখানে গড়ে উঠেছে গৃহহীনদের তাঁবুর শহর।

বেসামরিক হত্যা ও ধ্বংসের বিষয়ে অবশ্যই সাফাই দিয়ে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) বলেছে, হামাস যোদ্ধা ও তাদের সন্ত্রাসী অবকাঠামো উভয়ই বিমান হামলার লক্ষ্যবস্তু হয়েছে।