গাজায় যুদ্ধাপরাধ তদন্তে মেক্সিকো ও চিলির আহ্বান

গাজায় ফিলিস্তিনিদের গণহত্যার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে মেক্সিকো এবং চিলি। ইসরায়েলের চলমান আগ্রাসনের ফলে বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধ তদন্তের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) প্রতি সুপারিশ করেছে দেশ দুটি।

বিধ্বস্ত গাজা উপত্যকা

১৮ জানুয়ারি, বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে মেক্সিকোর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, গাজায় ক্রমবর্ধমান সহিংসতার কারণে বিশেষ করে বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্যবস্তু করার বিরুদ্ধে উদ্বেগের কারণে এই সুপারিশটি করা হয়েছে।

বিবৃতিতে হেগভিত্তিক এই আদালতকে সম্ভাব্য অপরাধমূলক অভিযোগ প্রতিষ্ঠার জন্য উপযুক্ত ফোরাম বলে অভিহিত করা হয়েছে। মেক্সিকোর রেফারেলে গাজায় ইসরায়েলি কর্মকাণ্ড নিয়ে জাতিসংঘের অসংখ্য প্রতিবেদন উদ্ধৃত করা হয়েছে। এছাড়া আইসিসির এখতিয়ারের অধীনে অপরাধ গঠন করতে পারে এমন অনেক ঘটনার বিবরণ দেওয়া হয়েছে।  

এদিকে বৃহস্পতিবার চিলির রাজধানী সান্তিয়াগোতে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলবার্তো ভ্যান ক্ল্যাভেরেন এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, তার দেশ যেকোন সম্ভাব্য যুদ্ধাপরাধের তদন্তকে সমর্থন করে। সেগুলো ইসরায়েলি বা ফিলিস্তিনিদের দ্বারা সংঘটিত যুদ্ধাপরাধই হোক না কেন। 

গাজা উপত্যকায় বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুর বিরুদ্ধে সহিংসতার সর্বশেষ বৃদ্ধির বিষয়ে ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের কারণে মেক্সিকো এবং চিলি এই পদক্ষেপ নিয়েছে।

অবশ্য ইসরায়েল আইসিসির সদস্য নয়। হেগভিত্তিক এই আদালতের বিচারকে স্বীকৃতি দেয় না দেশটি।

তবে আইসিসি জানিয়েছে, অধিকৃত ফিলিস্তিনি অঞ্চলে সম্ভাব্য যুদ্ধাপরাধের জন্য ইসরায়েলের পাশাপাশি হামাস এবং অন্যান্য সশস্ত্র ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে ২০২১ সাল থেকে তদন্ত শুরু হয়েছে। আইসিসির প্রসিকিউটর করিম খান গত নভেম্বরে বলেছিলেন, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে সংঘটিত হামলার বিষয়েও তদন্ত করা হবে। 

মেক্সিকো জানিয়েছে, তারা গত সপ্তাহে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) সামনে উপস্থাপিত মামলাটি ঘনিষ্ঠভাবে অনুসরণ করেছে। এই মামলায় দক্ষিণ আফ্রিকা গাজায় গণহত্যা চালানোর জন্য ইসরায়েলকে অভিযুক্ত করেছে। এছাড়া আদালতের কাছে ইসরায়েলের সামরিক অভিযান অবিলম্বে বন্ধ করার দাবি জানিয়েছে।

এদিকে ১৯ জানুয়ারি, শুক্রবার ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মেক্সিকো এবং চিলির এই পদক্ষেপের প্রশংসা করেছে। এছাড়া ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে যে অপরাধ সংঘটিত হয়েছে তা তদন্ত করে দেখা উচিত বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।  

উল্লেখ্য, আইসিজে এবং আইসিসি জাতিসংঘের আদালত হলেও দুটির মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। আইসিজে কোনো ব্যক্তির বিচার করে না। আন্তর্জাতিক চুক্তির বাধ্যবাধকতাগুলো কোনো দেশ মানছে কি না, সেটা নির্ধারণ করার দায়িত্ব আইসিজের। সংস্থাটি এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়। অপরদিকে কোনো অপরাধ হয়েছে কি না তা তদন্ত করার দায়িত্ব আইসিসির।

সূত্র: দ্য নিউ আরব, আল জাজিরা