গাজার শরণার্থী শিবির টার্গেট করে হামলা জোরদার ইসরায়েলের

ফিলিস্তিনের গাজায় এখন শরণার্থী শিবিরগুলোকে টার্গেট করে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। শুক্রবার বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরে হামলায় একদিনে অন্তত ১৬২ জন নিহত হয়েছে। এতে গত তিনমাসের হামলায় গাজায় নিহত ছাড়িয়েছে ২২ হাজার ৬০০। এছাড়া আরও ৭ হাজার মানুষ নিখোঁজ রয়েছে। আশংকা করা হচ্ছে, তারা বিধ্বস্ত বাড়িঘরের ধ্বংসস্তুপের নিচে চাপা পড়ে রয়েছে। খবর বিবিসি ও আল জাজিরার।

গাজার রাফাহ শহরে শুক্রবার বিধ্বস্ত বাড়িতে এক ফিলিস্তিনি শিশু

গাজা উপত্যকাকে ফিলিস্তিনিমুক্ত করার উদ্দেশ্য নিয়েই হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। গত ৭ অক্টোবর থেকে নির্বিচার বোমা হামলায় বিভিন্ন আবাসিক এলাকা বিরাণ হয়ে গেছে। এখন উদ্বাস্তু ফিলিস্তিনিদের গাদাগাদি করে আশ্রয় নেওয়া ক্যাম্পগুলোতে হামলা জোরদার করেছে ইসরায়েল।

গত তিন মাসে আশ্রয় শিবিরগুলোতে হামলা চালিয়ে গেলেও সম্প্রতি টার্গেট করেই বিমান হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। শুক্রবার গাজার খান ইউনিস ও রাফাহ শহরসহ দেইর আল বালাহ, আল মাগাজি, নুসেইরাত ও বুরেজি শরণার্থী শিবিরে বোমা হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বিমান।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল-কুদরা বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় ১৬২ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৩১৮ জন আহত হয়েছে। এ নিয়ে গাজা যুদ্ধে এ পর্যন্ত নিহত ছাড়িয়েছে ২২ হাজার ৬০০ জন। নিহতদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু। তিন মাসে ৫৭ হাজার ৯১০ জন আহত হয়েছে।

আশরাফ আল-কুদরা জানান, ৭ অক্টোবর থেকে গাজার হাসপাতালগুলোতে হামলায় ৬১৩ জন নিহত হয়েছে, তাদের মধ্যে ৩২৬ চিকিৎসক। গাজার ২৬ টি হাসপাতাল ও ৫৩ টি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র ধ্বংস হয়ে গেছে। নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে ১২১টি অ্যাম্বুলেন্স। এছাড়া ৯৯ জন চিকিৎসককে ইসরায়েলি বাহিনী ধরে নিয়ে গেছে।

ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের অভ্যন্তরে হামলা চালায়। একদিনের ওই হামলায় ১১৩৯ ইসরায়েলি নিহত হয়। ওইদিনই গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।

বিগত তিন মাস ধরে চলা ইসরায়েলি হামলায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে পুরো গাজা উপত্যকা। ঘরবাড়ি হারিয়ে গাজার ৯০ শতাংশ মানুষ উদ্বাস্তু হয়েছে।

জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থা জানিয়েছে, উপত্যকার ২৪ লাখ বাসিন্দার মধ্যে ১৯ লাখের বেশি বাসিন্দা বাস্তুচ্যুত হয়েছে। একদিকে দিনেরাতে ইসরায়েলি বোমা, অন্যদিকে অবরোধের কারণে খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি ও ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে দিনযাপন করছে গাজাবাসী।