পাকিস্তান: সবচেয়ে জনপ্রিয় দল পিটিআই, জনপ্রিয় নেতা ইমরান!

পাকিস্তানে আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সে নির্বাচনের আগে প্রকাশিত এক জরিপে দেখা গেছে, দেশটির সবচেয়ে জনপ্রিয় দল এখন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই), আর সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা দলটির সাবেক চেয়ারম্যান ইমরান খান। দুটি ক্ষেত্রেই সমর্থনের হার দ্বিতীয় স্থান অধিকারীর তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। খবর জিওনিউজ।

ইমরান খান

জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে জরিপ পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ‘গ্যালাপ’ গত জুন-জুলাইয়ে একটি জরিপ চালায়। এতে দেখা গেছে, জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৩৮ শতাংশ পিটিআইকে সমর্থন করছে, যেখানে নওয়াজ-শাহবাজের পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ বা পিএমএল(এন)কে সমর্থন করছে ১৬ শতাংশ মানুষ। অন্যদিকে পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) সমর্থন আরও খানিকটা কম, মাত্র ১০ শতাংশ। এর তুলনায় তেহরিক-ই-লাব্বাইক পকিস্তানের (টিএলপি) সমর্থন বেশি, ১৫ শতাংশ। জরিপে দেখা গেছে, পিটিআই সবচেয়ে বড় প্রদেশ পাঞ্জাবসহ পুরো দেশেই পিএমএল(এন)-এর চেয়ে এগিয়ে আছে।

গ্যালাপের জরিপ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০১৮ সালের সাধারণ নির্বাচনের সময় পিটিআই যতটা জনপ্রিয় ছিল, এখন সেটা আরও বেড়েছে। অন্যদিকে ২০১৮ সালের তুলনায় পিএমএলএনের সমর্থন কমে এসেছে।

নওয়াজ শরিফ ও শাহবাজ শরিফ

জরিপে আরও দেখা গেছে, জনপ্রিয়তায় সবার চেয়ে এগিয়ে আছেন ইমরান। তার প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন ৬০ শতাংশ অংশগ্রহণকারী। এছাড়া সাদ রিজভি ও পারভেজ এলাহি ৩৮ শতাংশ, শাহ মেহমুদ কোরেশির ৩৭ শতাংশ সমর্থন রয়েছে। অন্যদিকে নওয়াজের প্রতি ৩৬ শতাংশ, শেহবাজ শরিফের প্রতি ৩৫ শতাংশ এবং মরিয়ম নওয়াজের প্রতি ৩০ শতাংশ অংশগ্রহণকারী সমর্থন জানিয়েছেন। তবে ভুট্টো পরিবারের বিলাওয়াল ভুট্টো বা জারদারিকে এই মূল্যায়নে যুক্ত করা হয়নি।

পাকিস্তানের আসন্ন নির্বাচনের বহুমুখী চাপের মুখে রয়েছে পিটিআই। মূলত ক্ষমতায় থাকাকালে এবং পরবর্তী সময়ে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে মুখ খোলায় দেশের প্রভাবশালী এ গোষ্ঠীটি ইমরান খানের ওপর বেশ ক্ষিপ্ত। তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নির্বাচন কমিশন ও সরকার। সম্প্রতি সামরিক বাহিনীর বেশ কিছু বিধি-নিষেধের কারণে বিপাকে পড়েছে পিটিআই। সেই সঙ্গে সরকারের প্রণীত বিভিন্ন আইন ও কার্যক্রম এবং নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত রায় দলটির বিরুদ্ধে গেছে। ফলে চেয়ারম্যান পদ হারিয়েছেন ইমরান। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অযোগ্য ঘোষিত হয়েছেন। দল নির্বাচনে ব্যাট হাতে লড়ার অধিকার হারিয়েছেন। সরকারি দলের চাপের মুখে একের পর এক শীর্ষ নেতা দল ছেড়েছেন।

এই বহুমুখী চাপের মুখে পিটিআই পিষ্ট হলেও সুবিধাজনক অবস্থানে থাকার কথা ছিল নওয়াজের পিএমএলের। কিন্তু জরিপে তা দেখা যায়নি। নির্বাচনে হয়ত পিএমএলএনই সুবিধাজনক অবস্থায় থাকবে, কিন্তু গ্যালাপের প্রতিবেদন তাতে প্রশ্ন তোলার সুযোগ করে দিয়েছে।