কেন দুই হাতে একই ঘড়ি পরতেন ম্যারাডোনা?

প্রিয় খেলোয়াড়কে নিয়ে ভক্তদের সবসময়ই প্রবল আগ্রহ থাকে। সেটি তাদের ব্যক্তিগত জীবন এবং পারফরম্যান্স দুই দিক থেকেই। ডিয়েগো ম্যারাডোনার মতো মহাতারকাকে নিয়ে তো এখনও ভক্তকূলের কৌতুহলের শেষ নেই। কারণ, ছিয়াশির বিশ্বজয়ের নায়ক মাঠের ভেতরে এবং বাইরে দুদিকেই সমানভাবে আলোচনায় থাকতেন।

ডিয়েগো ম্যারাডোনা ও রোনালদো নাজারিও ভালো বন্ধু ছিলেন

ম্যারাডোনা প্রয়াত হয়েছেন তিন বছরেরও বেশি হবে। এখনও তাকে নিয়ে জানতে আগ্রহী সমর্থকরা। অনেকেই হয়ত লক্ষ্য করেছেন যে, ম্যারাডোনা দুই হাতে একইরকম ঘড়ি পরতেন। কিন্তু কেন? এটির ব্যাখ্যা অবশ্য আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি কখনোই দেননি। এবার ভক্তদের সেই কৌতুহল মেটালেন ম্যারাডোনার বন্ধু ও ব্রাজিল কিংবদন্তি রোনালদো নাজারিও।

দুই কিংবদন্তির মধ্যে বয়সের পার্থক্যটা চোখে পড়ার মতো। তবু দুজনের মধ্যে গভীর বন্ধুত্ব ছিল। এতটাই যে, একবার ম্যারাডোনা হাতের একটি ঘড়ি খুলে রোনালদোকে উপহার দিয়েছিলেন। সেই ঘড়িটা এখনও স্বযত্নে রেখে দিয়েছেন দুইবারের বিশ্বকাপজয়ী সাবেক ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার। ম্যারাডোনার স্মৃতি হিসেবে একমাত্র ওই ঘড়িটাই আছে রোনালদোর কাছে।

ম্যারাডোনার দুই হাতে ঘড়ি পরার ব্যাপারটা রোনালদোর কাছে ভালো লেগেছিল। সম্প্রতি ব্রাজিল কিংবদন্তি বলেছেন, ‘প্রথমবার তিনি যখন মাদ্রিদে আমার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন, আমরা এক সঙ্গে রাতের খাবার খেয়েছিলাম। আমি দেখেছি সে দুই হাতেই ঘড়ি পরে এসেছে। দুটি ঘড়ি ছাড়া তিনি কোথাও যেতেন না। আমি তাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম কেন আপনি দুই হাতে একই ঘড়ি পরেন?’

‘উত্তরে ম্যারাডোনা আমাকে বলেছেন, তার মেয়ে ঘড়ি দুটি এনেছিলেন। এরপর সেই ঘড়ি আর নেননি। তখন থেকেই দুই হাতে ঘড়ি পরার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। খাওয়া শেষে ম্যারাডোনা আমাকে একটি ঘড়ি খুলে দেন। আমি সেটা নিতে চাইনি। কিন্তু তিনি খুব রাগান্বিত হয়ে যান। তখন আমার কিছু করার ছিল না। তার এমন উদারতা এবং বন্ধুত্বের স্মারক হিসেবে আমি আমার বাকি জীবন এটা রেখে দেবো।’

অবশ্য ম্যারাডোনার দুই হাতে ঘড়ি পরা নিয়ে একটা গুঞ্জন আছে। অনেকেই মনে করেন, তিনি যেখানে যেতেন সেখানকার সময় দেখার জন্য একটি ঘড়ি পরতেন এবং অন্যটি নিজের দেশের সময় দেখার জন্য। কেউ কেউ মনে করতেন ফ্যাশনের জন্য জোড়া ব্যবহার করতেন ম্যারাডোনা। আবার অনেকের দাবি, ঘড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি এবং ব্র্যান্ডিংয়ের কারণে এমনটি করতেন তিনি।

২০২০ সালের নভেম্বরে প্রয়াত হন ম্যারাডোনা। বন্ধুর প্রয়াণে খুব ব্যথিত হয়েছিলেন রোনালদো। ওই সময় ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য মিররে এক কলামে তিনি লিখেছিলেন, ‘ডিয়েগো (ম্যারাডোনা) ফুটবলের বড় একজন কিংবদন্তি। তার মৃত্যুটা মেনে নেওয়া কঠিন। খবরটা শুনে আমি বিস্মিত হয়েছি। খুব কষ্ট পেয়েছি। তার পরিবারের জন্য সমবেদনা ও ভালোবাসা রইল। তিনি অনেক মানুষের জীবন পাল্টে দিয়েছিলেন। আমি সবসময়ই তার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকব। তিনি আমার অনুপ্রেরণা ছিলেন।’