গাজার জন্য নববর্ষ উদযাপন বাতিল করেছে যে দেশগুলো

আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা পরে ২০২৩ সাল শেষ হয়ে যাবে। অথচ অক্টোবরের শুরুতে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনী যে গণহত্যা শুরু করেছে তা শেষ হওয়ার কোনো লক্ষণই দেখা যাচ্ছে না। প্রতিদিন শিশু এবং নারীসহ অসংখ্য মানুষ নিহত হচ্ছে। এর ফলে বিশ্বজুড়ে ক্রমবর্ধমান ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিনিয়ত বিশ্বের বিবেকবান মানুষ যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানাচ্ছে। এরই মধ্যে কিছু দেশ গাজাবাসীর প্রতি সংহতি জানাতে নববর্ষ উদযাপন নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

বিধ্বস্ত গাজা উপত্যকা

এবার ২৫ ডিসেম্বর ইসরায়েল অধিকৃত ফিলিস্তিনি অঞ্চল পশ্চিম তীর, দক্ষিণ লেবানন, ইরাক এবং সিরিয়ায় খ্রিষ্টানদের ধর্মীয় উৎসব বড়দিন উদযাপন করা হয়নি। নববর্ষ উৎসবের ক্ষেত্রেও কিছু দেশ এই উদাহরণ অনুসরণ করছে।

২৮ ডিসেম্বর, বৃহস্পতিবার পাকিস্তান জানিয়েছে, গাজায় ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন দেখানোর জন্য নববর্ষের উদযাপন নিষিদ্ধ করা হবে। দেশটির সরকার সাড়ম্বরে নববর্ষের উৎসব করার পরিবর্তে জনগণকে সাধারণভাবে নতুন বছরকে স্বাগত জানানোর আহ্বান জানিয়েছে। 

জাতির উদ্দেশে টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ভাষণে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার-উল-হক কাকার বলেছেন, ‘গাজা উপত্যকার পরিস্থিতির কারণে সরকার নববর্ষ উদযাপন সংক্রান্ত সব ধরনের অনুষ্ঠান সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করেছে।' 

বৃহস্পতিবার সংযুক্ত আরব আমিরাতের একটি আমিরাত শারজাহ গাজা যুদ্ধের কারণে নববর্ষের আগের দিন সব আতশবাজি নিষিদ্ধ করেছে। শারজাহ পুলিশ একটি ফেসবুক পোস্টে বলেছে, ‘গাজা উপত্যকায় আমাদের ভাইবোনদের সঙ্গে সংহতি এবং মানবিক সহযোগিতার আন্তরিক অভিব্যক্তি প্রকাশের জন্য এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।' 

অবশ্য সংযুক্ত আরব আমিরাতের বাকী ছয় আমিরাত এবং মধ্যপ্রাচ্যের অন্য কোথাও নববর্ষ উৎসব বাতিল করা হয়নি। পরিকল্পনা অনুযায়ী তা উদযাপন করা হবে বলে জানা গেছে। 

সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী আবুধাবিতে শেখ জায়েদ ফেস্টিভ্যালে ঘন্টাব্যাপী আতশবাজি প্রদর্শন করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। দুবাই গ্লোবাল ভিলেজ, আটলান্টিস দ্য পাম জুমেইরা এবং বুর্জ খলিফার মতো পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে একাধিক আতশবাজি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। 

লেবাননের রাজধানী বৈরুতে রাস্তায় নববর্ষ উদযাপনের আয়োজন করা হয়েছে। অন্যদিকে কাতারের রাজধানী দোহা এবং লুসাইল সিটি নববর্ষের থিমযুক্ত ইভেন্ট এবং আতশবাজি প্রদর্শনের আয়োজন করেছে।  

এছাড়া সৌদি আরব, তুরস্ক, মিশর এবং জর্ডানের জনগণ নতুন বছর উপলক্ষে বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের সঙ্গে উৎসবে যোগ দেবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এদিকে সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম ইনস্টাগ্রামে গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে নতুন বছর শুরু করার জন্য একটি ইভেন্ট খোলা হয়েছে। ‘কাউন্ট ডাউন টু সিজফায়ার’ নামের ইভেন্টটিতে এখন পর্যন্ত ৩০ হাজার সদস্য যোগ দিয়েছে। গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে ৩১ ডিসেম্বর ব্যানার প্রদর্শন করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।  

উল্লেখ্য, ৭ অক্টোবর গাজা উপত্যকায় সামরিক অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। অব্যাহত বিমান হামলা এবং স্থল অভিযানের ফলে অবরুদ্ধ এই উপত্যকায় এ পর্যন্ত ২১ হাজার ৮২২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। নিহতদের বেশিরভাগই নারী এবং শিশু ছিল। 

সূত্র: দ্য নিউ আরব