ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী: সাতটি ফ্রন্ট থেকে হামলার শিকার হচ্ছি

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় হামলা শুরুর পর থেকে বিশ্ব নেতৃবৃন্দ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে জানিয়েছিলেন, এই যুদ্ধ অবিলম্বে বন্ধ না করলে তা পুরো মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে। সেই আশঙ্কা ধীরে ধীরে বাস্তবে রূপ লাভ করছে। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) বলেছেন, আমাদের দেশ এখন বহুমুখী যুদ্ধে লিপ্ত রয়েছে। আমরা প্রতিরোধের চেষ্টা করে যাচ্ছি।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ত

ইসরায়েলের পার্লামেন্টে দেওয়া এক ভাষণে প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ত বলেন, তেল আবিব বর্তমানে সাতটি ফ্রন্ট থেকে হামলার শিকার হচ্ছে। ফ্রন্টগুলো হচ্ছে- গাজা, লেবানন, সিরিয়া, জুডিয়া ও সামারিয়া (পশ্চিম তীর), ইরাক, ইয়েমেন ও ইরান। এর মধ্যে আমরা ছয়টি ফ্রন্টে পাল্টা হামলা চালিয়েছি। এ সময় তিনি গাজা যুদ্ধ ঘিরে বিপজ্জনক আঞ্চলিক উত্তেজনার মাঝে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে সামরিক অভিযানের ইঙ্গিত দেন।

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে ঢুকে অতর্কিতে হামলা চালায় ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস। তাদের এই হামলায় ইসরায়েলের সেনাসদস্যসহ এক হাজার ২০০ জন নিহত হয়। সে সময় আরও ২৪০ জনকে ধরে নিয়ে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায়।

গাজায় ইসরায়েলি হামলা

অভাবনীয় ওই হামলার শিকার হয়ে সেদিনেই গাজা উপত্যকায় নির্বিচার হামলা চালাতে শুরু করে ইসরায়েল। দুই মাসের বেশি সময় ধরে চলা এই যুদ্ধে এরই মধ্যে মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে গাজা। ইসরায়েলি হামলায় এ পর্যন্ত ২১ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৫০ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছে। ২৩ লাখ মানুষের আবাসস্থল গাজা থেকে এরই মধ্যে ৮৫ শতাংশ লোকজন তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছেন।

এদিকে দিন যতই যাচ্ছে ইসরায়েলকেন্দ্রিক লড়াই ততটাই বিস্তৃত হচ্ছে। লেবাননের হিজবুল্লাহ মাঝে মধ্যেই ইসরায়েলে রকেট ছুড়ছে, ইসরায়েলও তার জবাব দিচ্ছে। সিরিয়াতেও লড়াই করছে তেল আবিব। পশ্চিম তীর থেকে মাঝে মধ্যে ইসরায়েলের ওপর হামলা হচ্ছে। ইয়েমেনও এই লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়েছে। লোহিত সাগর দিয়ে ইসরায়েলমুখী বা ইসরায়েলি মালিকানাধীন জাহাজগুলোতে তারা হামলা চালাচ্ছে। এছাড়া ইরাকেও তারা হামলার শিকার হচ্ছে। অন্যদিকে সিরিয়ায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর জ্যেষ্ঠ জেনারেল নিহত হয়। ফলে ইরানেরও এই সংঘাতে জড়িত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সব মিলিয়ে গাজা ছাড়াও বাইরের আরও বেশ কিছু ফ্রন্টে লড়াই চালিয়ে যাওয়া নিয়ে চিন্তায় পড়তে হচ্ছে নেতানিয়াহু প্রশাসনকে।