যুক্তরাষ্ট্রকে প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র দিচ্ছে জাপান, ভাগ্য খুললো ইউক্রেনের

শান্তিবাদী নীতি থেকে সরে এলো জাপান। দেশটি জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রকে নিজস্ব তৈরি প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র দিচ্ছে টোকিও। প্রায় এক দশকের মাথায় অস্ত্র রপ্তানির নিয়ম পরিবর্তন করে এই ঘোষণা দিলো জাপান। তাদের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে হোয়াইট হাউস। কেননা, এতে সহজেই নিজেদের তৈরি মজুদ থেকে প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র ইউক্রেনে পাঠাতে পারবে যুক্তরাষ্ট্র। খবর বিবিসির।

জাপান নিজেদের অস্ত্র রপ্তানি নীতি পাল্টে যুক্তরাষ্ট্রকে দিচ্ছে প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র

রাশিয়ার চলমান আগ্রাসনে ইউক্রেনকে সহায়তার জন্য পশ্চিমা শক্তিগুলোর গোলাবারুদ শেষ হয়ে যাচ্ছে। ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও যুক্তরাষ্ট্রের কাছে আরও অস্ত্র সহায়তার জন্য ধর্না দিচ্ছেন। আর তাতে সাড়া দিয়ে বাইডেন প্রশাসন এরইমধ্যে ইউক্রেনকে প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র দিতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। এমন সময়ে যুক্তরাষ্ট্রকে প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র দেওয়ার ঘোষণা দিলো জাপান।

জাপানের অস্ত্র রপ্তানি নীতি অনুযায়ী, এতদিন টোকিও কেবলমাত্র সামরিক সরঞ্জামের অনুমোদনকৃত উপাদান মূল উৎপাদক লাইসেন্সধারী দেশে পাঠাতে পারতো। নতুন নিয়মে এখন সম্পূর্ণ প্রস্তত অস্ত্রও পাঠাতে পারবে দেশটি।

জাপানে মূলত মার্কিন প্রতিরক্ষা ঠিকাদার লকহিড মার্টিন এবং আরটিএক্সের লাইসেন্সের অধীনে মিতসুবিশি হেভি ইন্ডাস্ট্রিজ প্যাট্রিয়ট মিসাইল তৈরি করে থাকে।

শুক্রবার নিজেদের অস্ত্র রপ্তানি নীতিতে পরিবর্তন আনার পর জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘোষণা দিয়েছে, জাপান-মার্কিন জোটকে আরও শক্তিশালী করতে যুক্তরাষ্ট্রে প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র পাঠাবে টোকিও।

যদিও ক্ষেপণাস্ত্রগুলো শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্রেই পাঠানো যাবে এবং তৃতীয় কোনো দেশে পাঠানোর জন্য জাপানের অনুমোদনের প্রয়োজন হবে। কেননা, জাপান থেকে যুদ্ধরত কোনো দেশে অস্ত্র রপ্তানি এখনও নিষিদ্ধ।

তার মানে, জাপানের তৈরি প্যাট্রিয়ট যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি ইউক্রেনে পাঠাতে না পারলেও সেগুলো নিজেদের ভান্ডারে মজুদ রাখবে এবং নিজস্ব তৈরি প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র ইউক্রেনে পাঠাবে ওয়াশিংটন।

প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র অত্যাধুনিক বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র, বিশেষ করে ড্রোন ধ্বংসে খুবই কার্যকর। ইউক্রেনে যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহ করা সবচেয়ে উন্নত অস্ত্রগুলোর মধ্যে অন্যতম এই প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র।

এদিকে টোকিও যুক্তরাজ্যেও ১৫৫ মিমি আর্টিলারি শেল রপ্তানি করার কথা বিবেচনা করছে। কারণ লন্ডন-ভিত্তিক বিএই সিস্টেমের লাইসেন্সের অধীনে এই আর্টিলারি শেল তৈরি করে টোকিও।

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের আমলে অস্ত্র রপ্তানি নিষিদ্ধ নীতি গ্রহণ করেছিল জাপান। তবে জাপানের নিরাপত্তা ও ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে শান্তির দোহাই দিয়ে দেশটিকে ওই নীতি থেকে সরে আসতে বারবারই অনুরোধ জানিয়ে আসছিল যুক্তরাষ্ট্র। অবশেষে সেই ডাকে সাড়া দিলো জাপান।