বিদেশে থাকা ইউক্রেনীয়দের সেনাবাহিনীতে যোগদানের নির্দেশ

বিদেশে থাকা ইউক্রেনীয় পুরুষ নাগরিকদের দেশে ফিরে সেনাবাহিনীতে যোগদানের নির্দেশ দিয়েছে যুদ্ধের শিকার দেশটি। প্রায় দুই বছর ধরে রাশিয়ার সামরিক আগ্রাসনের মুখে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বৃহস্পতিবার এ নির্দেশ দিয়েছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি নতুন করে আরও পাঁচ লাখ সেনা নিযুক্ত করার পরিকল্পনা ঘোষণার দুইদিনের মাথায় এ তথ্য মিললো। খবর বিবিসির।

দখলদার রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আরও সেনা দরকার জেলেনস্কির

ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রুস্তেম উমেরভ বলেছেন, বিদেশে বসবাসরত ২৫ থেকে ৬০ বছর বয়সী প্রত্যেক ইউক্রেনীয়কে দ্রুত সামরিক বাহিনীতে এসে রিপোর্ট করতে বলা হবে। তিনি এটিকে একটি ‘আমন্ত্রণ’ হিসেবে বর্ণনা করলেও জানিয়েছেন, এ আহ্বান যারা উপেক্ষা করবে দেশে তারা নিষেধাজ্ঞায় পড়বে।

ইউক্রেনে ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সেনাবাহিনী। দখলদার রুশবাহিনীর বিরুদ্ধে সম্প্রতি ইউক্রেনের পাল্টা আক্রমণ থমকে গেছে বলে মনে হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে সম্মুখযুদ্ধে আরও সেনা দরকার ইউক্রেনের।

যদিও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি জানিয়েছেন, রুশ সেনাদের বিরুদ্ধে প্রায় সাড়ে চার লাখ সেনা যুদ্ধ করছে। আরও সাড়ে চার থেকে পাঁচ লাখ নতুন সেনা নিয়োগের দাবি জানিয়েছে সামরিক বাহিনী।

নতুন সেনা নিয়োগের বিষয়টি নিয়ে আরও আলোচনা দরকার জানিয়ে জেলেনস্কি মঙ্গলবার সাংবাদিকদের আরও বলেন, তবে যুদ্ধের সময়ে নতুন সেনা নিয়োগ স্পর্শকাতর বিষয় এবং সেনাবহর দ্বিগুণ করা ব্যয়বহুলও বটে।

তার এই বক্তব্যের দুই দিনের মাথায় বৃহস্পতিবার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের নতুন ঘোষণা এলো।

ডাই ওয়েল্ট, বিল্ড ও পলিটিকো নামের মিডিয়া আউটলেটে এক সাক্ষাৎকারে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী উমেরভ বলেন, এই নিয়োগ কোনো শাস্তি নয় বরং সম্মানের বিষয়। তারা স্বেচ্ছায় না এলে কী হবে তা নিয়ে আমরা এখনও আলোচনা করছি।

প্রতিরক্ষামন্ত্রীর এমন বক্তব্যের পর সমালোচনার মুখে মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইলারিয়ন পাভলিউক বলেন, বিদেশ থেকে নাগরিকদের ডেকে আনা নিয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে যদি ইউক্রেনের নাগরিকরা সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে চায়, তারা দেশে এসে যোগ দিতে পারেন। এতে কোনো ধরনের জবরদস্তি নেই বলে দাবি করেন ইলারিয়ন।

গত নভেম্বরে ইইউর পরিসংখ্যান সংস্থা ইউরোস্ট্যাটের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার হামলা শুরুর পর থেকে ১৮-৬৪ বছর বয়সী প্রায় ৭ লাখ ৬৮ হাজার ইউক্রেনীয় পুরুষ ইউরোপীয় দেশগুলোতে চলে গেছে।

ইউক্রেন সরকার বা সামরিক বাহিনী কীভাবে বিদেশে বসবাসরত নাগরিকদের এই যুদ্ধের মুহূর্তে সেনাবাহিনীতে যোগদানে উত্সাহিত করতে সক্ষম হবে তা স্পষ্ট নয়। ইউক্রেনের বাইরে কোনো নিয়োগ কেন্দ্র নেই এবং ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষের কাছে কাউকে বাধ্য করার কোনো উপায়ও নেই।