চুল পড়ে যাওয়া নিয়ে চিন্তায় কিমের দেশের লোকজন!

দক্ষিণ কোরিয়ার বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ক্রমশই চুল পাতলা হয়ে যাচ্ছে কিম জং উনের উত্তর কোরিয়ার লোকজনের। এটিকে অনেকে মহামারি বলেও আখ্যায়িত করেছেন। দেশটিতে ব্যবহৃত বিভিন্ন ধরনের সাবান ও ডিটারজেন্ট ব্যবহারের কারণেই এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। এছাড়া দেশটির সামরিক বাহিনীর কিছু নিয়মও এক্ষেত্রে অবদান রাখছে বলে মনে করা হচ্ছে। খবর হিন্দুস্তান টাইমস ও নিউ ইয়র্ক পোস্ট।

চুল পড়া বাড়ছে উত্তর কোরিয়ার লোকজনের

দক্ষিণ কোরিয়ার বিশেষজ্ঞরা বলেন, উত্তর কোরিয়ায় চুল পাতলা হয়ে যাওয়া বা সরাসরি টাক হয়ে যাওয়া মানুষের সংখ্যা ব্যাপকভাবে বাড়ছে। উত্তর কোরিয়া থেকে পালিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ায় চলে যাওয়া এবং বর্তমানে সিউলের কোরিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের একজন সিনিয়র গবেষক হিসেবে কর্মরত চোই জিয়ং হুন এ ব্যাপারে কয়েকটি যুক্তি তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, কয়েকটি কারণে সেখানকার মানুষের চুল পড়ে যাচ্ছে। প্রথমত, সেখানে লোকজন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ক্ষেত্রে কঠিন কিছু রাসায়নিক ব্যবহার করা হযে থাকে। তারা যেসব সাবান ও ডিটারজেন্ট ব্যবহার করে, সেগুলোর কারণেই তাদের চুল পাতলা হয়ে যাচ্ছে। অন্য দেশের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে নিষেধাজ্ঞা থাকায় সেখানে তুলনামূলক হালকা রাসায়নিক পণ্য ব্যবহারের সুযোগ নেই বললেই চলে।

কিম জং উন

আবার চুল পড়ে যাওয়া রোধ করতে যেসব জিনিস ব্যবহৃত হয় সেগুলো আসলে কতটুকু কার্যকরী তা পরীক্ষা করার উপায় নেই। অন্যদিকে উত্তর কোরিয়ার বেশিরভাগ নাগরিকের আর্থিক অবস্থা স্বচ্ছল না হওয়ায় মাথার চুল পড়া মোকাবেলায় খুব বেশি দামি কিছু তারা ব্যবহার করতে পারেন না।

আরেক বিশেষজ্ঞ অবশ্য চুল পড়ে যাওয়ার জন্য সেনাবাহিনীর সদস্যদের ব্যবহৃত ক্যাপকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, ক্যাপগুলোতে পর্যাপ্ত বায়ুচলাচলের সুযোগ না থাকায় তা চুলের ক্ষতি করতে পারে। কারণ এভাবে থাকার কারণে প্রচুর ব্যাকটেরিয়া তৈরি হয়, পরবর্তীতে তা চুলের জন্য ক্ষতির কারণ হয়। উত্তর কোরিয়ায় সাধারণত সক্ষম পুরুষদের জন্য ১০ বছর সশস্ত্র বাহিনীতে কাজ করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

এদিকে চুল পড়ার সমস্যা দক্ষিণ কোরিয়াকেও আক্রান্ত করছে বলে দেশটির বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানা গেছে। এমনকি গত বছরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এটি একটি বড় ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করেছে। সে নির্বাচনে লি জায়ে-মিউং চুল পড়ার চিকিৎসার জন্য সরকারকে অর্থ প্রদান করার প্রস্তাব দিয়ে ভোটারদের সমর্থন অর্জন করেছিলেন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতি পাঁচজনের একজন চুল পড়ার রোগে ভুগছেন।