মুক্তিপ্রাপ্ত ১৩ ইসরায়েলি পরিবারে স্বস্তি

গাজায় হামাসের হাতে জিম্মি থাকা ১৩ ইসরায়েলি মুক্তি পাওয়ায় তাদের পরিবারে স্বস্তি ফিরেছে। যুদ্ধবিরতির চুক্তির আওতায় এই জিম্মিদের মুক্তি দিয়েছে হামাস। মুক্তিপ্রাপ্তদের সবাই নারী ও শিশু। বিনিময়ে কারাগারে বন্দি ৩৯ ফিলিস্তিনি নারী ও শিশুকে মুক্তি দিয়েছে ইসরায়েল। খবর বিবিসির।

মুক্তি পেয়েছে পাঁচ বছরের শিশু এমিলিয়া ও তার মা ডানিয়েল অ্যালোনি

টানা সাত সপ্তাহ যুদ্ধের পর হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে শুক্রবার চারদিনের জন্য যুদ্ধবিরতি শুরু হয়। যুদ্ধবিরতির চুক্তি অনুযায়ী, চারদিনে হামাস ৫০ ইসরায়েলিকে মুক্তি দেবে, বিনিময়ে ইসরায়েলের কারাগারে বন্দি ১৫০ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেওয়া হবে।

কাতারের মধ্যস্থতায় ওই যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথমদিনে ১৩ ইসরায়েলিকে মুক্তি দেয় হামাস। অন্যদিকে ৩৯ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দিয়েছে ইসরায়েল। এদিন ১০ জন থাই নাগরিক এবং একজন ফিলিপিনোকেও ছেড়ে দিয়েছে হামাস।

মুক্তিপ্রাপ্ত ১৩ ইসরায়েলি নারী-শিশুকে গাজা থেকে আন্তর্জাতিক রেড ক্রস মিশরে নিয়ে আসে। পরে সেখান থেকে মেডিকেল চেকআপের পর ইসরায়েলে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

ইসরায়েলিদের মধ্যে চারটি শিশু রয়েছে, তাদের বয়স যথাক্রমে দুই, চার, ছয় ও নয় বছর। এছাড়া একজন ৮৫ বছরের বৃদ্ধাও রয়েছেন।

মুক্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন কিব্বুৎজ নির ওজের বাসিন্দা ইয়োনি অ্যাশারের স্ত্রী ডোরন কাৎজ অ্যাশার, এবং তাদের দুই মেয়ে চার বছরের রাজ এবং দুই বছরের আভিভ।

স্ত্রী-সন্তান জীবিত ফেরায় অবশেষে স্বস্তির নি:শ্বাস ফেলেছেন ইয়োনি অ্যাশার। তিনি বলেন, আমাদের দিনগুলো ভয়ানক আতঙ্ক ও শোকের মধ্য দিয়ে গেছে। আমি আমার পরিবারকে ফিরে পেয়েছি, এখন তাদের ট্রমা থেকে বের করে আনতে হবে।

তিনি আরও বলেন, আমি আমার পরিবারের সদস্যদের ফিরে আসাকে উদযাপন করতে পারি না। অপহৃতদের শেষ ব্যক্তি ফিরে না আসা পর্যন্ত আমি উদযাপন করতে পারি না।

হামাসের হাত থেকে মুক্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে একজন মারগালিট মোসেস। ৭৮ বছরের এই ক্যান্সার বিজয়ী নারী নির ওজ থেকে অপহৃত হন। হামাসের হাত েথেকে জীবিত ফিরবেন কিনা, তা নিয়ে শঙ্কিত ছিল মোসেসের পরিবার।

মুক্তি পেয়েছে পাঁচ বছরের শিশু এমিলিয়া ও তার মা ডানিয়েল অ্যালোনি। নির ওজের বাসিন্দা অ্যালোনি অপহরণের সময় তার স্বামীকে মোবাইলে মেসেজ পাঠিয়েছিলেন, কিছু সন্ত্রাসী আমাদের ঘরে ঢুকে পড়েছে।

১৩ নারী-শিশুর মুক্তির পর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, আমরা প্রথম দফার জিম্মিদের ফিরিয়ে আনার কাজ সম্পন্ন করেছি। শিশুরা, তাদের মা ও বৃদ্ধা কয়েকজন নারী প্রথম দফায় মুক্তি পেয়েছেন।

নেতানিয়াহু বলেন, তবে আমি অপহৃতদের পরিবার এবং ইসরায়েলের নাগরিকদের বলছি, আমরা সমস্ত জিম্মিদের ফিরিয়ে আনতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।