গাজায় যুদ্ধবিরতি ফিলিস্তিনিদের শোক করার সুযোগ দিয়েছে
- Details
- by আন্তর্জাতিক ডেস্ক
গাজা উপত্যকায় শুরু হয়েছে ৪ দিনের যুদ্ধবিরতি। ২৪ নভেম্বর, শুক্রবার সকালে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে অস্থায়ী এই যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর হাজার হাজার ফিলিস্তিনি রাস্তায় নেমে আসেন। তারা বাজার এমনকি যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকাগুলোতে যান।
ছবি - সংগৃহীত
এক মাসেরও বেশি সময় ধরে গাজায় নির্বিচারে বোমা বর্ষণ করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। ৪৬ দিন পরে কাতারের মধ্যস্থতায় এই যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে ইসরায়েল। এই যুদ্ধে ১৪ হাজার ৫০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছে। এছাড়া ৪ হাজারের বেশি মানুষ ধ্বংসস্তূপের নীচে আটকা পড়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
লন্ডনভিত্তিক নিউজ ওয়েবসাইট দ্য নিউ আরবের সঙ্গে কথা বলার সময় স্থানীয়রা জানিয়েছেন, তারা আশা করছেন এই যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে গাজার নিরীহ মানুষের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি আগ্রাসনের অবসানের সূচনা হবে।
রাফার বাসিন্দা মোহাম্মদ আবদেল আল পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে তাদের বাড়িতে পৌঁছানোর জন্য কয়েক কিলোমিটার পায়ে হেঁটে যেতে বাধ্য হয়েছেন। বাড়িতে পৌঁছানোর পর তিনি দেখতে পান তার নিজের বাড়িসহ আশেপাশের সবার বাড়িঘর সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে।
৬৩ বছর বয়সী ৬ সন্তানের এই বাবা বলেছেন, ‘ইসরায়েলি সেনাবাহিনী আমাদের সরে যেতে বলেছে। আমরা ভেবেছিলাম যে আমরা কয়েক দিনের মধ্যে ফিরে আসব, কিন্তু মনে হচ্ছে ইসরায়েল ইতোমধ্যেই গাজায় আমাদের জীবনের সমস্ত কিছু ধ্বংস করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।'
আবদেল আল তার ২০ সদস্যের পরিবারের সঙ্গে পশ্চিম রাফাতে জাতিসংঘের ত্রাণ সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ এর একটি স্কুলে আশ্রয় নিয়েছেন। তিনি এবং বাস্তুচ্যুত সকল ফিলিস্তিনি তাদের দৈনন্দিন খাদ্য ও পানির জন্য সংগ্রাম করে যাচ্ছেন। তার বাড়ি ধ্বংস হয়ে যাওয়ার কারণে এখন তিনি শরণার্থী শিবির ছাড়তে পারছেন না।
গাজার কেন্দ্রে আল নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরের জালাল আবু শার্খ এবং তার তিন ভাই এই যুদ্ধবিরতির ফলে ধ্বংসস্তূপের নীচে নিখোঁজ ৩০ জনকে উদ্ধার করার সুযোগ পাচ্ছেন। ছয় দিনেরও বেশি সময় ধরে তারা ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়ে ছিল।
আবু শার্খ দ্য নিউ আরবকে বলেছেন, ইসরায়েলি বিমান হামলার কারণে চিকিৎসা কর্মী এবং উদ্ধারকারীরা ধ্বংসস্তূপের নীচে এখনও কেউ জীবিত আছে কিনা তা পরীক্ষা করে দেখছেন।
৪২ বছর বয়সী এই ব্যক্তি বলেছেন, ‘যদি উদ্ধারকারীরা কোন আওয়াজ না শুনতে পান, তাহলে তারা এলাকা ছেড়ে চলে যাবেন। আমরা ইসরায়েলি হামলার ভয়ে এতদিন ধরে হতাহতদের উদ্ধার করার চেষ্টা করতে পারিনি।'
এই ৩০ জনের মধ্যে তার পরিবার দুজনকে উদ্ধার করেছে। এদের মধ্যে একজন নারী এবং তার ছেলে ছিল। এরা ধ্বংসস্তূপের নীচে চার দিন ধরে কোনো খাবার এবং পানি ছাড়া বেঁচে ছিল।
২২ নভেম্বর, বুধবার হামাস এবং ইসরায়েল সাময়িক যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেয়। ৪৬ দিনের রক্তক্ষয়ী সংঘাতের পরে এই যুদ্ধবিরতি দেওয়া হয়। ৭ অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকার ২৩ লাখের বেশি মানুষ অবিরাম ইসরায়েলি বিমান হামলার মধ্যে থাকতে বাধ্য হয়েছিল।
শুক্রবার সকাল ৭ টা থেকে এই যুদ্ধবিরতি শুরু হয়। বিকেল ৪ টায় হামাসের হাতে বন্দী ১৩ জন জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হয়। এরপর ইসরায়েলি কারাগারে আটক ১৫০ জন ফিলিস্তিনি নারী, শিশুকে মুক্তি দেওয়া হবে।
এদিকে যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর মিশর থেকে ত্রাণবাহী ট্রাকগুলোকে গাজা উপত্যকায় প্রবেশ করতে দেখা গেছে। মিশরীয় সংস্থার প্রতিনিধিত্বকারী এই ট্রাক দুটিতে থাকা ব্যানারে লেখা ছিল, ‘মানবতার জন্য একসঙ্গে’ এবং ‘গাজায় আমাদের ভাইদের জন্য’।
এর আগে মিশর জানিয়েছিল, যুদ্ধবিরতি শুরু হলে প্রতিদিন গাজায় ১ লাখ ৩০ হাজার লিটার ডিজেল এবং চার ট্রাক গ্যাস সরবরাহ করা হবে। এছাড়া প্রতিদিন ২০০ ট্রাক সাহায্য গাজায় প্রবেশ করবে। ত্রাণ সংস্থাগুলো বলছে, গাজায় আরও বেশি ত্রাণ পাঠাতে হবে।
৪ সন্তানের মা ৫৬ বছর বয়সী লায়ান আল আমাসি বলেছেন, ‘এই সামান্য সাহায্য দিয়ে এতগুলো মানুষের কিছুই হবে না। এই যুদ্ধে আমরা আমাদের জীবন, নিরাপত্তা এবং সবকিছুই হারিয়েছি। গাজার বেশিরভাগ মানুষই তাদের বাড়িঘর থেকে বাস্তুচ্যুত হয়েছে। আমাদের নিজেদের আর কিছুই অবশিষ্ট নেই।'
সূত্র: দ্য নিউ আরব
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.
Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.