সেই চিঠি ঝড় তুলল টিকটকে, সমালোচনা করল হোয়াইট হাউস

দুই দশকের বেশি সময় আগে আমেরিকার জনগণের কাছে লেখা ওসামা বিন লাদেনের একটি চিঠি হঠাৎ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টিকটকে ভাইরাল হয়েছে। কিছু টিকটকার ‘লেটার টু আমেরিকা’ শিরোনামের চিঠিটি ভিডিও শেয়ারিং এই প্ল্যাটফর্মে পোস্ট করেছেন। তারপর এটি পুনরায় এক্সেও শেয়ার করেছেন তারা। টিকটকে এই চিঠিটি ২০ লাখের বেশি মানুষ দেখেছেন।

টিকটকের লোগো

মার্কিন টেলিভিশন এনবিসি নিউজ জানিয়েছে, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান গণহত্যার প্রেক্ষাপটে আমেরিকার উদ্দেশ্যে লেখা বিন লাদেনের চিঠিটি আনেকেরই দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। তিনি ২০০২ সালে এটি লিখেছেন।

এনবিসির খবরে বলা হয়েছে, হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইসরায়েলকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে সমর্থন দিচ্ছে তা নিয়ে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে এই চিঠিটি। সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীরা বলেছেন, আল কায়েদা প্রতিষ্ঠাতার এই চিঠি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে একটি বিকল্প দৃষ্টিভঙ্গি দেয়।  

২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর আল কায়েদা যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন স্থাপনায় আত্মঘাতী হামলা চালায়। এতে ২ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়। এই ঘটনার এক বছর পর ‘লেটার টু আমেরিকা’ লেখা হয়। ২০০২ সালের ২৪ নভেম্বর ব্রিটিশ পত্রিকা গার্ডিয়ানে আরবি ভাষায় লেখা ওই চিঠির ইংরেজি অনুবাদ প্রকাশিত হয়। ২০২৩ সালে চিঠিটি ভাইরাল হওয়ার পর গার্ডিয়ান কর্তৃপক্ষ ১৫ নভেম্বর তাদের ওয়েবসাইট থেকে ২১ বছর আগের চিঠিটি সরিয়ে ফেলে।  

চিঠিতে বিন লাদেন আমেরিকার জনগণকে সম্বোধন করে কিছু প্রশ্নের উত্তর জানতে চেয়েছিলেন। তিনি মার্কিনিদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, ‘কেন আমরা লড়াই করছি এবং আপনাদের বিরোধিতা করছি? আমরা আপনাদের কিসের জন্য আহ্বান জানাচ্ছি? আমরা আপনাদের কাছে কি চাই?’

চিঠিটি নিয়ে মার্কিন তরুণরা ব্যাপক আলোচনা করছেন। কেউ কেউ বলছেন, এটি ইরাক এবং আফগানিস্তানে মার্কিন যুদ্ধের বিষয়ে তাদের বিশ্বাসের পুনর্মূল্যায়ন করতে বাধ্য করেছে। তারা আরও বলেছেন, অবশ্য এর মাধ্যমে ৯/১১ হামলাকে প্রশংসা করা হচ্ছে না বা তার যৌক্তকতাও খোঁজা হচ্ছে না।

ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছে, বিন লাদেনের চিঠিতে ইসরায়েলের প্রতি মার্কিন সমর্থনেরও সমালোচনা করা হয়েছে। এছাড়া ফিলিস্তিনি জনগণের নিপীড়নে যুক্তরাষ্ট্রকে সহায়তা করার অভিযোগ আনা হয়েছে। প্রয়াত আল কায়েদা প্রধান আফগানিস্তান, ইরাক, সোমালিয়া, চেচনিয়া এবং লেবাননে মার্কিন হস্তক্ষেপেরও সমালোচনা করেছেন।

এদিকে লাদেনের চিঠি ভাইরাল হওয়ার বিষয়টির সমালোচনা করে হোয়াইট হাউস বলেছে, ২ হাজার ৯৭৭ জন নিহতদের পরিবারের সদস্যদের শোককে অপমান করা উচিত নয়। 

টিকটকের মুখপাত্র বেন রাথে বলেছেন, লাদেনের চিঠি শেয়ার করার মাধ্যমে এই প্লাটফর্মের গাইডলাইন লঙ্ঘন করা হয়েছে। পরবর্তীতে টিকটক এই চিঠি প্রচার করা ভিডিওগুলো সরিয়ে নিয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০১১ সালের মে মাসে মার্কিন বিশেষ অভিযানে পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদে নিহত হন ওসামা বিন লাদেন।

সূত্র: এনডিটিভি