ফিলিস্তিনিদের অস্ত্র দেওয়ার জন্য ইরানের আহ্বান প্রত্যাখ্যান!

গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনি নারী, শিশুদের নির্বিচারে হত্যা করছে ইসরায়েলি বাহিনী। তাদের প্রতিরোধ করার জন্য ফিলিস্তিনিদের অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করার আহ্বান জানিয়েছিলেন ইরানি প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। কিন্তু উপসাগরীয় দেশগুলোর নেতারা তার এই আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছেন। ১৩ নভেম্বর, সোমবার ব্রিটিশ পত্রিকা গার্ডিয়ানে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই দাবি করা হয়েছে।

ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি এবং সৌদি আরবের প্রিন্স মোহাম্মদ বিন আব্দুলরহমান বিন আব্দুলাজিজ

১১ নভেম্বর, শনিবার সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে আরব লিগ এবং অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কোঅপারেশনের (ওআইসি) এর সদস্য দেশগুলোর জরুরি শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে ৫১টি দেশের প্রেসিডেন্ট এবং প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত হয়েছিলেন। তারা গাজায় ইসরায়েলের বোমাবর্ষণ নিয়ে আলোচনা করেন।

ইরানি প্রেসিডেন্ট গাজার ওপর ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধ করার জন্য ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন। তিনি ফিলিস্তিনিদের অস্ত্র দেওয়ার পাশাপাশি ইসরায়েলি সেনাবাহিনীকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করার জন্য মুসলিম দেশগুলোর নেতাদের প্রতি আবেদন জানিয়েছেন। এছাড়া ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনকারী আরব এবং মুসলিম দেশগুলোর প্রতি এই সম্পর্ক ছিন্ন করার অনুরোধ করেছেন।

রাইসি মুসলিম দেশগুলোকে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে জায়নবাদী শাসকের সঙ্গে যেকোনো ধরনের রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার জন্য বলেছেন। বিশেষ করে জ্বালানি ক্ষেত্রে ইহুদিবাদী শাসকের বিরুদ্ধে বাণিজ্য বয়কটকে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।  

তবে উপসাগরীয় দেশগুলো তার এই আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছে। ইরানের কোনো প্রস্তাবে একমত হতে ব্যর্থ হয়েছেন আরব নেতারা। আরব ও মুসলিম নেতৃবৃন্দ ইসরায়েলের নিন্দা করেছেন এবং ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। তবে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট শাস্তিমূলক কোনো ব্যবস্থা গ্রহণের পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এমনকি ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেওয়া রাষ্ট্রগুলো সম্পর্ক ছিন্ন করতে অস্বীকার করেছে। 

মিশর, জর্ডান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন এবং মরক্কোর সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্ক রয়েছে। পরের তিনটি দেশ ২০২০ সালে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করেছে। এর ফলে দেশগুলোর সঙ্গে ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ কূটনৈতিক, সামরিক এবং বাণিজ্যিক সম্পর্ক তৈরি হয়েছে।

ইরান সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আরব রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছে। দেশটি চলতি বছরের মার্চ মাসে চীনের মধ্যস্থতায় সৌদি আরবের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনরুদ্ধার করেছে।

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান